রমজান মাসে একদিকে বান্দা রহমতের বারিধারায় স্নাত হয়- প্রতি রাতে, প্রতি সকালে, সাহরীর মুহূর্তে, ইফতারীর মুহূর্তে; রহমত ঢেকে ফেলে বান্দাকে। অপরদিকে মাগফিরাতের অগ্নিশিখা জ্বালিয়ে দেয় বান্দার সব পাপ। রোযা সব পাপ জ্বালিয়ে দেয়,বিগত জীবনের যত কালিমা জালিয়ে ভস্ম করে দেয়। প্রিয় নবীজি সা. বলেন-
مَنْ صَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا، غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدّمَ مِنْ ذَنْبِهِ.
যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সওয়াবের আশায় রমযান মাসের রোযা রাখবে, তার পূর্ববর্তী গোনাহসমূহ মাফ করে দেওয়া হবে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৩৮
এতো মুমিনের জন্য বিরাট সুসংবাদ। মাত্র একটি মাসের ধর্যের ফল এতো বিশাল বিনিময় দ্বারা দেওয়া হবে! একজন প্রকৃত মুমিনের জন্য এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কি হতে পারে।
একবার ভেবে দেখুন তো কি পরিমান পাপের বোঝা মাথায় নিয়ে ঘুরছি আমরা? পূর্ববর্তী জাতিগুলির ধংশের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, তাদের একেক জাতিকে যে সব পাপের কারনে ধংশ করা হয়েছিলো তা এই উম্মতের ভিতর সবগুলি একই সাথে রয়েছে।
যেমন নুহ আ. এর উম্মতের শিরক, হুদ আ. এর উম্মতের বড় বড় অট্টলিকা আর প্রাসাদ নির্মান, সালেহ আ. এর উম্মতের হত্যাযজ্ঞ, লুত আ. এর উম্মতের সমকামিতা এবং শুআইব আ. এর উম্মতের ব্যবসায়ী ছলচাতুরী এই সব এই উম্মতের মধ্যে আছে।
তাদের এসব পাপকর্মের দরুন কি ধংসাত্মক আজাবই না তাদের দেওয়া হয়েছিল। কোন জাতিকে ভুমিধ্বস। আবার কাউকে পানি, বাতাস এবং জোর আওয়াজ দিয়েও ধংশ করা হয়েছে। কিন্তু এই উম্মত উল্লিখিত সবগুলি পাপকাজ একত্রে করা সত্তেও মহান আল্লাহ আমাদের সুযোগের পর সুযোগ দিয়ে যাচ্ছেন। যাতে আমরা তওবা করি। ফিরে আসি।
পবিত্র মাহে রমজান এবং রোজ এই ক্ষমা ও পাপমোচনের এক মহাআয়োজন। প্রিয় নবীজি সা. বলেন-
যে ব্যক্তি রমজানে রোজা রাখল এবং রোজার বিধি নিষেধগুলির পূর্ন পরিপালন করল। সাথেসাথে রমজানের সকল আদব ও পবিত্রার হেফাজত করল। সুতরাং এই রোজা তার পূর্ববর্তী সকল পাপকর্মের কাফফারা বা পরিত্রানের উপায় হয়ে যাবে। (মুসনাদে আহমাদ, বাইহাক্বী)