খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ পৌষ, ১৪৩১ | ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট

মোরেলগঞ্জ পৌর শহরসহ ৩০ গ্রাম প্লাবিত

এম. পলাশ শরীফ

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে পূর্ণিমার জোয়ারের অতিরিক্ত পানিতে পৌরশহর সহ ৩০ টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। হুমকির মুখে নদীর তীরবর্তী ২৫ কিলোমিটার কাঁচা-পাকা রাস্তা, বাড়িঘর, ভেরিবাঁধসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। জোয়ারের পানিতে দু’বার ভাসছে মানুষ। স্থানীয়দের দাবি শহর রক্ষা বাঁধসহ সন্ন্যাসী হয়ে ঘষিয়াখালী পর্যন্ত নদীর দু’পাড়ের স্থায়ী ভেরিবাঁধের।

সরেজমিনে বুধবার জানা গেছে, উপকূলীয় অঞ্চল উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নসহ পৌরসভায় গত দুই দিন ধরে পূর্ণিমার জোয়ারে অতিরিক্ত পানিতে পানগুছি নদীর তীরবর্তী মোরেলগঞ্জ পৌর শহরের ফেরীঘাট সংলগ্ন এলাকা, বারইখালীর কাশ্মীর, বলইবুনিয়ার শ্রেণীখালী, বহরবুনিয়ার ফুলহাতা, ঘষিয়াখালী, মোরেলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের গাবতলা গ্রামের নতুন করে আধা কিলোমিটার কার্পেটিং রাস্তা ধসে গেছে।

হোগলাবুনিয়ার বদনীভাঙ্গা, সানকিভাঙ্গা, পাঠামারা, খাউলিয়া বাজারের ব্রীজসহ হুমকির মুখে অম্বিকা চরণ লাহা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, বদনীভাঙ্গা আর্দশ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৮০নং বি পাঠামারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বহরবুনিয়ার এসবি মাধ্যমিক বিদ্যালয় নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

এ ছাড়াও পঞ্চকরনের দেবরাজের পানিউন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন ১২শ’ মিটার অস্থায়ী ভেড়িবাঁধ হুমকির মুখে রয়েছে। নদীর দু’ পাড়ের ৩০টি গ্রাম জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়ে দুপুরের রান্না বন্ধ হয়ে গেছে অনেক পরিবারের। এদিকে দীর্ঘদিন ধরে পানগুছি নদী অব্যাহত ভাঙ্গনের ফলে ফসলি জমি, বাড়িঘর গাছপালা বিলীন হয়ে নদীগর্ভে চলে যাওয়ায় নিঃস্ব হয়ে পড়েছে শত শত পরিবার।

পৌর শহরের কাপুড়িয়া পট্টির কাঁচা বাজার কলেজ রোড, কেজি স্কুল সডক, উপজেলা প্রশাসনিক চত্বর পানিতে তলিয়ে গিয়ে শহরের দোকানিদের ক্রয়-বিক্রয় দিনে ৩ ঘন্টা বন্ধ হয়ে পড়েছে। জনজীবন হয়ে পড়েছে বিপর্যস্ত।

বারইখালী গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমান নান্নু, আবুল কালাম খোকন, পঞ্চকরন গ্রামের জাহানারা আক্তার, খুকি বেগম বলেন, জোয়ারের পানি ঢুকে ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। চুলায় পানি উঠায় দুপুরের রান্না করতে হয় বিকেলে।

অপরদিকে মোরেলগঞ্জ শহরের ফল ব্যবসায়ী লাল মিয়া, কাপড় ব্যবসায়ী ইব্রাহিম শেখ বলেন, দুপুর ১২টা বাজলেই পানির চাপ বেড়ে যায় দোকানে ঢুকে পড়ে পানি। ৩ ঘন্টা বসে থাকতে হয়। গ্রাম থেকে আশা ক্রেতারা চলে যায় তড়িঘড়ি করে। এ ভোগান্তির শেষ কোথায়?।

এ বিষয়ে মোরেলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র এ্যাডভোকেট মনিরুল হক তালুকদার বলেন, শুধু শহর রক্ষা বাঁধ নয়। ইতোমধ্যে গাবতলা হয়ে ঘষিয়াখালী পর্যন্ত স্থায়ী ভেরিবাঁধের ট্রেন্ডার হয়েছে। ২০১৭ সালে এ প্রকল্পের প্রস্তাবনা হয়েছে। বাস্তবায়নের অপেক্ষায় শহরবাসি। ভেরিবাঁধের কাজ শুরু হলে এ সমস্যায় থাকবে না পৌরবাসি।

এদিকে নদীর তীরবর্তী ইউনিয়নগুলোর সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক মজুমদার, সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবির মোল্লা, বারইখালীর চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল খান মহারাজ, হোগলাবুনিয়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা আকরামুজ্জামান, বহরবুনিয়ার চেয়ারম্যান রিপন হোসেন তালুকদার বলেন, গত দুই দিনের পানির চাপে নদীর তীরবর্তী তাদের ইউনিয়নগুলো অনেক কাঁচা পাকা রাস্তা ভেঙ্গে পড়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দেবরাজ পঞ্চকরনের অস্থায়ী ভেড়িবাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। এভাবে এক সপ্তাহ পানির চাপ থাকলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে গ্রামবাসিরা।

এ সর্ম্পকে বাগেরহাট জেলা পানিউন্নয়ন বোর্ডে নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, মোরেলগঞ্জ শহর সংলগ্ন রামপাল-মোংলা হয়ে ঘষিয়াখালী পর্যন্ত ৯৫ কিলোমিটার ভেরিবাঁধের জন্য সম্ভাব্যতা সমিক্ষার জন্য মন্ত্রানালয়ে প্রস্তাবনা রয়েছে। এ ছাড়াও ইতোমধ্যে পানগুছি নদীর ভাঙ্গন হতে বাগেরহাট জেলা সদর সংলগ্ন এলাকা সংরক্ষণ এবং বিষখালী নদী পুনঃখনন শীর্ষক প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে।

খুলনা গেজেট/ বিএম শহিদুল




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!