খুলনা, বাংলাদেশ | ২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৭ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  প্রীতি ম্যাচ : মালদ্বীপকে ২-১ গোলে হারাল বাংলাদেশ, সিরিজ শেষ হলো ১-১ সামতায়
  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৮ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৯৯৪
  আগামীর বাংলাদেশ হবে ন্যায়বিচার, মানবাধিকার, বাক স্বাধীনতার : ড. ইউনূস
  জুলাই-আগস্টে নিহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশে সময় লাগবে : উপদেষ্টা আসিফ

মোংলা-বেনাপোল ট্রেন সিডিউল নিয়ে যাত্রীদের হতাশা ও ক্ষোভ

বি এম ওয়াসিম আরমান, মোংলা

মোংলা সামুদ্রিক বন্দর প্রতিষ্ঠার ৭৩ বছর পর আনুষ্ঠানিকভাবে গত ১ জুন চালু হয়েছে মোংলা-খুলনা-বেনাপোল কমিউটার ট্রেন। এ অঞ্চলের মানুষের জন্য এ যাতায়াত ব্যবস্থা আশীর্বাদ হলেও মোংলা থেকে বেনাপোল ট্রেনের যে সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে তা নিয়ে সাধারণ যাত্রীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

মোংলা থেকে খুলনার উদ্দেশ্যে মানুষ মূলত: চিকিৎসা এবং ব্যবসায়িক কাজে যান। কিন্তু দুপুর ১ টায় ট্রেনের সময় হওয়ায় অনেকেই এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অন্যদিকে বেনাপোলগামী যাত্রীরাও সঠিক সময়ে বেনাপোল বর্ডারে পৌঁছাতে পারবে কিনা তা নিয়েও রয়েছে সংশয়। তাই যাত্রীদের সার্বিক সুবিধার কথা বিবেচনা করে ট্রেনের সিডিউল পরিবর্তন করে সকাল বেলা করার জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন এই রুটের চলাচলকারিরা।

ট্রেনটি বেনাপোল থেকে মোংলার উদ্দেশ্যে সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে ছেড়ে দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে মোংলায় পৌঁছায়। কিন্তু কলকাতা থেকে বনগাঁ এসে ভ্যানে করে ভারত এবং বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন কমপ্লিট করে তারপর আবার ভ্যানে করে সকাল ৯টা ১৫ মিনিটের ভেতরে বেনাপোল রেলস্টেশনে পৌঁছানো একেবারেই অসম্ভব। অর্থাৎ ভারত ফেরত যাত্রীরা এই ট্রেন ব্যবহার করতে পারছে না।

আবার ট্রেনটি মোংলা থেকে দুপুর ১ টায় ছেড়ে বিকাল ৪টা ৩০মিনিটে বেনাপোল পৌঁছাবে। তাহলে বিকাল ৪টা ৩০ মিনিটে বেনাপোল রেলস্টেশনে নেমে ভ্যানে করে বর্ডারে গিয়ে বাংলাদেশ এবং ভারতের ইমিগ্রেশন শেষ করে আবার ভ্যানে করে বনগাঁ গিয়ে ট্রেন ধরে কলকাতায় পৌঁছানো কষ্টসাধ্য ব্যাপার। সেক্ষেত্রেও মোংলা থেকে ভারতগামী যাত্রীরা এই ট্রেন ব্যবহার করতে পারছে না।

আপ এবং ডাউন দুই পথেই পর্যাপ্ত যাত্রী না হলে এই ট্রেনটি লোকশান দিবে। দিনের পর দিন লোকসান দিয়ে এক পর্যায়ে ট্রেনটি বন্ধ হয়ে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই ট্রেনটি যদি সকালে মোংলা থেকে ছেড়ে বেনাপোল যেতো এবং বিকালে বেনাপোল থেকে ছেড়ে মোংলায় আসতো তাহলে এই ট্রেনে পর্যাপ্ত যাত্রী চলাচল করতে পারতো।

মোংলা পৌর শহরের ব্যবসায়ী তমাল তরু মন্ডল খুলনা গেজেটকে জানান, দীর্ঘ ১০ বছর ধরে নির্মাণ কাজ শেষ করার পর অবশেষে চালু হয়েছে মোংলা-খুলনা-বেনাপোল রেললাইন। চিকিৎসা এবং ব্যবসার কাজে আমাদের প্রতিনিয়ত খুলনা ও ভারত যেতে হয়। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে ট্রেনের সিডিউল নিয়ে।

সুমা আক্তার নামে এক শিক্ষার্থী এই প্রতিবেদককে জানান, মোংলা-খুলনা-বেনাপোল ট্রেন চালু হওয়াতে আমরা খুবই খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমরা শিক্ষার্থীরা এই সেবাটি নিতে পারছি না। কারণ আমাদেরকে সকাল বেলায় খুলনায় পৌঁছাতে হয়। কিন্তু ট্রেনের সিডিউল দুপুরবেলা হওয়াতে আমার মত অনেক শিক্ষার্থী এই সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই ট্রেনের সময়সূচী সকালবেলা হলে রোগি থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, ছাত্রছাত্রী, ভারতগামী যাত্রী এবং সাধারণ মানুষের সমস্যা অনেকটাই লাঘব হবে।

মোংলা পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর এমরান হোসেন বলেন, মোংলা শুধু একটি বন্দরই নয়, সুন্দরবন কেন্দ্রিক একটি পর্যটন এরিয়াও। এখানে ইপিজেডও রয়েছে। রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং ইপিজেডের কারণে এ অঞ্চলে মানুষের সমাগমও বাড়ছে। তাছাড়া এ এলাকার মানুষ চিকিৎসার জন্য প্রায়ই ভারতে আসা যাওয়া করে এবং ব্যবসা ও ডাক্তার দেখাতে খুলনা শহরে যায়। প্রতি বছর এখানে দেশ বিদেশ থেকে পর্যটকরা আসে সুন্দরবন দেখতে। সার্বিক দিক বিবেচনা করে ট্রেনের সময়সূচি পরিবর্তন করলে সাধারণ মানুষ ও যাত্রীরা উপকৃত হবেন।

মোংলা রেলস্টেশন মাস্টার এস এম মনির আহম্মেদ জানান, এই রুটে ট্রেন চালু হবার পর মোংলা থেকে প্রতিদিন গড়ে দুই শো থেকে আড়াই শো যাত্রী যাতায়াত করছে। যাত্রীদের সুবিধা-অসুবিধার কথা চিন্তা করে ট্রেনের সময়সূচির ব্যাপারে আমাদের উর্ধতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানানো হয়েছে। বিষয়টি তারা বিবেচনা করবেন বলে আমাকে আশ্বস্ত করেছেন।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!