মোংলায় প্রতিবন্ধী এক যুবতীকে (১৯) ধর্ষণের ঘটনায় এক মাস ৫ দিন পর মোংলা থানায় ধর্ষণের মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত নয়ন মন্ডলকে আটক করেছে পুলিশ। শুক্রবার গভীর রাতে নিজ বাসা থেকে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। শনিবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। গত ১৪ ফেব্রয়ারি বেলা সাড়ে ১১ উপজেলার মিঠাখালী ইউনিয়নের দত্তেরমেঠ নয়ন মন্ডলের বাড়ী এ ঘটনা ঘটে।
থানায় মামলার বিবরণে জানা যায়, মোংলা উপজেলার ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধী তরুণী (১৯) এলাকার টাটিবুনিয়া স্কুলে মায়ের সাথে একটি এনজিওর কর্মশালায় যোগদান করে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মেয়েটি একা বাড়ীর দিকে রওয়ানা হলে পথিমধ্যে নয়ন মন্ডলের বাড়ীর সামনে গেলে রাস্তায় নয়নের সাথে দেখা হয়। এসময় মিস্টি খাওয়ানোর লোভ দেখিয়ে তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়। বাড়িতে কেউ না থাকায় ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করে গৌতম মন্ডলের ছেলে নয়ন মন্ডল। পরে বিষয়টি তার মাকে বললে তারা এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানানো হয়।
এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও দুই মেম্বর সমঝোতা করে দেয়ার কথা বলে ধর্ষণের শিকার তরুণীর বাবাকে নানাভাবে ঘুরিয়ে আসছেন। তাই এ ঘটনায় থানায় কোন অভিযোগও করতে দেয়নি সমাজপতিরা। এ ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত নয়ন মন্ডল পলাতক ছিল। তবে ধর্ষণের ঘটনা প্রভাবশালীদের চাপের মুখে বিচার না হওয়ায় এবং এলাকার সর্ব মহলে জানাজানি হলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। স্থানীয় ইউপি সদস্য আজমল হোসেন ও সজল ছাড়াও ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ ইস্রাফিল হাওলাদারের মধ্যস্থতায় শালিস বৈঠক করে সমাধান করবেন বলে জানা গেছে। কিন্তু ঘটনার এক মাস পার হলেও কোন বিচার না পেয়ে প্রতিবন্ধী মেয়েকে সাথে নিয়ে শুক্রবার রাতে মোংলা থানায় ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন তরুণীর বাবা। রাতেই মোংলা থানা পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে নয়ন মন্ডলকে আটক করে।
ভুক্তভোগী ওই তরুণীর বাবা বলেন, আজমল ও সজল মেম্বর বলেছিল তাদের চেয়ারম্যান ইস্রাফিলের মাধ্যমে এর বিচার করবেন। কিন্তু চেয়ারম্যান এখনও বিচার করেননি। এ ব্যাপারে ওই দুই মেম্বর থানায় অভিযোগও করতে দেয়নি।
ইউপি মেম্বর সজল বলেন, আমি এ ঘটনার কিছু জানি না, তবে মেম্বর আজমল সব কিছুই জানে।
আর অপর মেম্বর আজমল বলেন, আমাদের চেয়ারম্যান ইস্রাফিল হাওলাদার ইউপি নির্বাচন নিয়ে ঝামেলার কারণে এই বিচার সম্পন্ন হয়নি। তবে নির্বাচনের পরে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হয়েছিল।
এ ঘটনায় মিঠাখালী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ ইস্রাফিল হাওলাদার বলেন, প্রতিবন্ধী ধর্ষণের একটি ঘটনায় সমাধানের চেষ্টা করা হয়েছিল কিন্ত য়ে ঘটনা ঘটিয়েছে সে পলাতক থাকায় একটু দেরি হয়েছে। এ ব্যাপারে শুক্রবার রাতে থানায় মামলার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও জানায় ইউপি চেয়ারম্যান।
মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, শুক্রবার রাতে এক প্রতিবন্ধী ধর্ষণের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে এবং রাতেই ধর্ষক নয়ন মন্ডলকে আটক করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
তবে এক মাস ৫ দিন পরে মামলা হওয়ার বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে এতোদিন থানায় কেউ কোন অভিযোগ দেয়নি, শুক্রবার অভিযোগ পেয়ে মামলা নেয়া হয়েছে এবং আসামীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানায় থানার এ কর্মকর্তা।
খুলনা গেজেট/এনএম