মোংলায় ঈগল প্রতীকের পোস্টার ছিড়ে ফেলা ও প্রচার প্রচারণায় বাধা দেওয়ার প্রতিবাদে প্রেসক্লাবে (২৭ ডিসেম্বর) বুধবার দুপুর ১টায় সংবাদ সম্মেলন করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস আলী ইজারাদার।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি লিখিত বক্তব্যে জানান, তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোংলা-রামপাল বাগেরহাট-৩ আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহারের নৌকা প্রতীকের নেতাকর্মীরা নির্বাচনের পরিবেশ চরমভাবে লংঘন করছেন। নৌকার লোকজন প্রতিনিয়ত নির্বাচন আচরণ বিধি লঙ্ঘন করে ঈগলের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা, নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নানা ভাবে হুমকি ধামকি ও ভয়-ভীতি প্রদর্শন, নানা ধরনের মিথ্যা অপপ্রচার, কুৎসাত রটানোসহ বিভিন্ন অরাজকতা সৃষ্টির মাধ্যমে নির্বাচন পরিস্থিতির শান্তি-শৃঙ্খলা নষ্ট করছে। এসব বেআইনি কর্মকাণ্ড কঠোরভাবে বন্ধ করা না হলে নির্বাচন ও ভোট অনুষ্ঠান নিয়ে নানা সংশয় দেখা দিবে বলে এ প্রার্থী মনে করেন।
আর আওয়ামীলীগ দলীয় নেতাকর্মীদের কোন বাধা না থাকায় মনোনয়ন না পেয়ে ঈগল প্রতিক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন মোংলা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস আলী ইজারদার। এই দুই প্রার্থীর প্রচারণা ও জনসংযোগ চাঙ্গা রয়েছে ভোটের মাঠে। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সভা, সমাবেশ, উঠান বৈঠক ও লিফলেট বিতরণ করে ভোট চাচ্ছেন তারা। কিন্তু নৌকা প্রতীকের কর্মীদের হুমকি ধামকির ভয়ে ভোট চাইতে পারছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে তাদের।
এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, গত ২৬ ডিসেম্বর বেলা সাড়ে ১১টায় পৌর শহরের ৬ নং ওয়ার্ডের কবরস্থান রোড সংলগ্ন এলাকায় নির্বাচনী প্রতীক ঈগলের প্রচারণা গণসংযোগ চলছিলো। এ সময় প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকের সমর্থক সুন্দরবন ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কবির উদ্দিনের পুত্র শেখ সাদী মো: বাদল বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালিয়ে আমার কর্মীদের উপর অতর্কিত আঘাত হানে। এতে ঘটনাস্থলে আমার ঈগল প্রতীকের নারী কর্মী রনজিনা বেগম (৩৫), সুমি আক্তার (২৫), নাজমিন (৩৬) ও মৌসুমী (২৭) গুরুতর জখম হয়েছেন। তাৎক্ষণিক পরিস্থিতি শান্ত করে আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এ ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে নৌকা প্রতীকের কর্মী সমর্থকরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উশৃঙ্খলা আচরণসহ তার গণসংযোগে বাধা সৃষ্টি করে। তবে ঘটনাস্থলে দ্রুত পুলিশ উপস্থিত হলে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর নৌকা কর্মীরা তাদের হীন প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হয়। তার এই বিষয়গুলি প্রশাসনকে জানানো হয়েছে এবং পৌর সভার সি সি ফুটেজ তারপর প্রমাণ।
সংবাদ সম্মেলনে তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন মোংলা উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান মো: ইকবাল হোসেন, সুন্দরবন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইকরাম ইজারাদার, মিঠাখালি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উৎপল কুমার মন্ডলসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা।
এ সময় নেতাকর্মীরা বলেন, গত মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় নৌকা প্রতীকের কর্মীরা বিশৃঙ্খলা পরিবেশ সৃষ্টির প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে নতুন করে চক্রান্ত লিপ্ত হয়। এরই অংশ হিসেবে একই দিন সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা সুন্দরবন ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের চায়না মার্কেট সংলগ্ন তার ঈগল প্রতীকের নির্বাচনী ক্যাম্পে নৌকার প্রতীকের সমর্থক কবির উদ্দিন, মইনুদ্দিন শেখ, ফরিদ শেখ, আলতা হাওলাদার, আহাদুজ্জামান খান, আসাবুল খান, জাহিরুল খান, সোহাগ, মারুফ, ইলিয়াস ও হাসিবুলসহ ২০/ ২৫ মনের একটি সংবাদ গ্রুপ রামদা, কুড়াল, লাঠি, দেশীয় অস্ত্র- সশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। তাদের হামলা ও মারধরে ঈগল অতীতের কর্মী শাজাহান হাওলাদার, রকিবুল ও জয়ন্ত শিকারি সহ ১০/১২ জন কর্মী আহত হয়েছেন। আহতরা মোংলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছে।
তারা আরো বলেন, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বেগম হাবিবুর নাহারের স্বামী খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক প্রতীক বরাদ্দ করার পরও সরাসরি নির্বাচন আচরণ বিধি লঙ্ঘন করে মোংলা-রামপালে এসে বিভিন্ন গণসংযোগসহ সভা সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন ও নানা কৌশলে তার স্ত্রীর নৌকা প্রতীকের পক্ষে ভোট চাইছেন। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনও নির্বাচন কমিশনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস আলী ইজারাদার।
খুলনা গেজেট/এনএম