ভর্তি যুদ্ধে মেধাতালিকায় উত্তীর্ণ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পেলেও ভর্তি ফি জোগাড় করা নিয়ে শঙ্কায় ছিল সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপকূলের দরিদ্র পরিবারের সন্তান জয় কর্মকার। দিন এনে দিন খাওয়া সহায় সম্বলহীন দিনমজুর পিতা-মাতার পক্ষে সম্ভব ছিল না তার ভর্তি ফিস জোগাড় করার।
এমতাবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে জয় কর্মকারের ভর্তিসহ তার লেখাপড়ার খরচ যোগানে সহযোগিতার হাত বাড়ালেন শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ রনী খাতুন। গত ৪ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার পত্রিকায় জয়ের মেডিকেলে ভর্তির অনিশ্চয়তার সংবাদ প্রকাশের পর তাৎক্ষণিক মেধাবী এ শিক্ষার্থীর পাশে দাড়িয়েছেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ রনী খাতুন বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সুন্দরবন তীরবর্তী হরিনগর গ্রামের বাড়িতে
গিয়ে সাহস যুগিয়েছেন অদম্য মেধাবী জয়কে। ভর্তির জন্য নগদে ১৫ হাজার টাকা হস্তান্তরের পাশাপাশি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যেকোন প্রয়োজনে সার্বক্ষণিক পাশে থাকার।
জয় সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার হরিনগর গ্রামের অশোক কর্মকার ও সুচিত্রা কর্মকার দম্পতির তিন সন্তানের মধ্যে ছোট। একমাত্র বোনের বিয়ে হয়ে গেলেও বড় ভাই রাখি কর্মকার কুষ্টিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্মান দ্বিতীয় বর্ষে লেখাপড়া করছে।
এবিষয়ে জয়ের বাবা অশোক কর্মকার জানান, জয়ের বিষয়টি জানতে পেরে ইউএনও ম্যাডাম ছুটে এসেছেন। সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, পাশে দাড়ানোর কথা বলেছেন। সাংবাদিকদের কারনে তার মত অভাবী পরিবারের সন্তানকে দেশের এক নম্বর মেডিকেলে কলেজে পড়ালেখার সুযোগ পাচ্ছেন।
জয়ের মা সুচিত্রা কর্মকার জানান, ইউএনও ম্যাডাম পেপার পড়েই ছুটে আসায় আমরা খুশি। তবে ছেলের জন্য সবার দোয়া প্রার্থনা করে তিনি জানান সুন্দরবনের নদীতে মাছ শিকারের কাজ থেকে উঠে যেয়ে তার ছেলে দেশের সেরা মেডিকেলে পড়বে এটা ভেবে নিজে পুলকিত জানিয়ে তিনি আরও বলেন, সবার ছেলে মেয়ে মেধাবী, তবে আমরা অভিভাবকরা একটু তৎপর হলে তারাও ভালো করতে পারবে।
এসব বিষয়ে ইউএনও মোছাঃ রনী খাতুন জানান, জয়ের মেধা শক্তি ও সফলতা আমাকে এখানে আসতে বাধ্য করেছে। এই অঞ্চলের মানুষের গর্ব জয় আরও ভাল কিছু করবে বলে প্রত্যাশা রাখি।
এদিকে জয়ের এমন অসহায়ত্মের কথা জানার পর সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক জয়কে নিজের দপ্তরে ডেকে নিয়ে তাৎক্ষণিক ২০ হাজার টাকা অর্থ সহায়তা দিয়েছে। এছাড়া ভারতীয় ভিসা প্রসেসিং সেন্টারের এক কর্মকর্তাসহ অষ্ট্রেলিয়ায় ও আমেরিকাতে বসবাসকারী দুই ব্যক্তি জয়কে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন বলেও জানায় তার মামা মনোজিৎ কর্মকার।
খুলনা গেজেট/ টিএ