খুলনা, বাংলাদেশ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৪৫৮

মূলধন ঘাটতিতে রাষ্ট্র মালিকানাধীন চারটিসহ ১৪ ব্যাংক

গেজেট ডেস্ক

আমানতকারীদের অর্থের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় নির্দিষ্ট হারে মূলধন সংরক্ষণ করতে হয়। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ব্যাসেল-৩ নীতিমালা অনুসরণ করা হয়। মূলধনের ঘাটতিতে কোনো একটি ব্যাংক তার শেয়ারধারীদের লভ্যাংশ দিতে পারে না। সবশেষ প্রান্তিকে রাষ্ট্র মালিকানাধীন চার ব্যাংকসহ ১৪টি ব্যাংক মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে। তিন মাসের ব্যবধানে ব্যাংক খাতের মূলধন ঘাটতি বেড়েছে তিন হাজার ৭৬৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘাটতিতে রয়েছে বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক (বিকেবি)।

সংশ্লিষ্টদের মতে, ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এটি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব না হলে ব্যাংকগুলোয় মূলধন ঘাটতির পরিমাণও বেড়ে যাবে। এতে ব্যাংকগুলো সক্ষমতা হারাবে। মূলধন ঘাটতি ব্যাংকে যত বাড়বে, আমানতকারীর আমানতের ঝুঁকিও সমানতালে বাড়বে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন বলছে, চলতি ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে মোট ১৪টি ব্যাংক। তিন মাস আগে অর্থাৎ জুন প্রান্তিক শেষে এসব ব্যাংকগুলোর ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৩৩ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা। গত সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে সেটি দাঁড়িয়েছে ৩৭ হাজার ৫০৮ কোটি টাকায়। হিসাব বলছে, তিন মাসের ব্যবধানে এসব ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি বেড়েছে তিন হাজার ৭৬৪ কোটি টাকা।

আলোচিত সময়ে মূলধন ঘাটতিতে পড়া ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে- রাষ্ট্র মালিকানাধীন অগ্রণী, বেসিক, জনতা, রূপালী ব্যাংক, বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক। বেসরকারি খাতের বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, বেঙ্গল, সিটিজেন, আইসিবি ইসলামী, ন্যাশনাল ও পদ্মা ব্যাংক। আর বিদেশি খাতের মধ্যে রয়েছে হাবিব ব্যাংক এবং ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান। এসব ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘাটতিতে রয়েছে বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক (বিকেবি)। এ ব্যাংকের মূলধন ঘাটতির পরিমাণ ১৫ হাজার ৮০৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।

আন্তর্জাতিক রীতি অনুযায়ী, সব ব্যাংককে একটি নির্দিষ্ট হারে মূলধন সংরক্ষণ করতে হয়। ব্যাংকগুলোর উদ্যোক্তার অর্থ ও মুনাফা থেকে মূলধন সংরক্ষণের বিধান রয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ব্যাসেল-৩ নীতিমালা অনুযায়ী, বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদ বা রিস্ক ওয়েটেড অ্যাসেটের ১০ শতাংশ বা ৪০০ কোটি টাকার মধ্যে যেটি বেশি, সেই পরিমাণ মূলধন সংরক্ষণ করার বাধ্যবাধকতা আছে। এ নীতিমালা অনুযায়ী যেসব ব্যাংক মূলধন সংরক্ষণ করতে পারবে না, সে ব্যাংকগুলোকে মূলধন ঘাটতিতে থাকা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মূলধনে ঘাটতি পড়লে সেসব ব্যাংক শেয়ারধারীদের লভ্যাংশ দিতে পারে না।

চলতি বছরের সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ৪ হাজার ৮২৯ কোটি টাকা, বেসিক ব্যাংকের ৩ হাজার ১৫০ কোটি টাকা, জনতা ব্যাংকের ৩ হাজার ৩০ কোটি টাকা এবং রূপালী ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ২ হাজার ১২২ কোটি টাকা। বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের (বিকেবি) ঘাটতি সবচেয়ে বেশি ১৫ হাজার ৮০৪ কোটি টাকা এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) ঘাটতি ২ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা।

বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের (বিসিবি) ঘাটতি ১ হাজার ৪০২ কোটি টাকা, বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংকের ৭১ কোটি টাকা, সিটিজেন ব্যাংকের ৯৫ কোটি টাকা, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের ১ হাজার ৮২৩ কোটি টাকা, ন্যাশনাল ব্যাংকের ২ হাজার ২৪ কোটি টাকা এবং পদ্মা ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ৬০৮ কোটি টাকা। আর বিদেশি হাবিব ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ৩৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা এবং ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানের মূলধন ঘাটতি ৪৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।

খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!