চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী এলাকায় শিশু অপহরণের ঘটনায় গ্রেপ্তার চারজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার (১২ জুলাই) তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। কারাগারে যাওয়া আসামিদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম (৩১) ও জাহাঙ্গীর আলম (৪০) নামের দুইজন ছাড়াও ১৪ ও ১৬ বছর বয়সী আরও দুই কিশোরী রয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ছয় বছর বয়সী শিশুকে অপহরণের পর বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) লেগুনায় করে তাকে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছিল ১৪ বছরের এক কিশোরী। তবে শিশুটি অনবরত কান্না করতে থাকায় লেগুনার যাত্রীদের সন্দেহ হয়। এরপর লেগুনাটি থানায় নিয়ে গেলে নেশার টাকা জোগাড় করতে শিশুটিকে অপহরণের বিষয়টি সামনে আসে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও মামলা সূত্রে জানা যায়, বুধবার বিকেলে শিশুটিকে জেলার হাটহাজারী থানার এগারোমাইল এলাকায় বাড়ির সামনে থেকে অপহরণ করা হয়। ওই সময় শিশুটি বাড়ির সামনে খেলছিল। সেখান থেকে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে তাকে অপহরণ করে ১৪ বছরের ওই কিশোরী। পরে অনেক খোঁজাখুঁজির পর শিশুটিকে না পেয়ে তার বাবা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
অন্যদিকে, অপহরণের পর শিশুটিকে বায়েজিদ বোস্তামী এলাকায় ১৬ বছর বয়সী অপর এক কিশোরীর বাসায় রাখা হয়। এরপর সেখান থেকে বৃহস্পতিবার বিকেলে লেগুনায় করে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার সময় অপহরণের বিষয়টি জানা যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী লেগুনাযাত্রী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্প্রতি অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা রিয়াজ কবির জানান, চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলের সামনে থেকে বন্ধুর বাসায় যেতে তিনি নগরের অক্সিজেন থেকে ছেড়ে আসা একটি লেগুনাতে ওঠেন। পরে লেগুনাটি বায়েজিদ বোস্তামী এলাকার মাজার গেটে গেলে শিশুটিকে নিয়ে লেগুনায় ওঠে ওই কিশোরী। পথে কিছু দূর যেতেই শিশুটি কান্না করতে থাকলে ওই কিশোরী নিজেকে শিশুটির মা পরিচয় দিয়ে বলেন, শিশুটি পুতুলের জন্য কান্না করছে।
তবে শিশুটির সঙ্গে কিশোরীর বয়স মেলাতে গিয়ে সন্দেহ হয় রিয়াজ কবির। এরপর লেগুনায় থাকা আরেক যাত্রী ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ওই শিশুটির কান্নার কারণ জানতে চান। এতে রীতিমতো ক্ষিপ্ত হয়ে যায় সেই কিশোরী। একপর্যায়ে যাত্রী রিয়াজ কবির তার বন্ধু মো. নোমানকে কল দিয়ে তাকে বায়েজিদ বোস্তামী থানার সামনে থাকতে বলেন। এতে ওই কিশোরী শঙ্কিত হলে রিয়াজ কবিরের সন্দেহ আরও বেড়ে যায়। পরবর্তীতে লেগুনার চালককে গাড়িটি বায়েজিদ বোস্তামী থানায় নিয়ে যেতে বলা হয়। এরপর বিষয়টি বুঝতে পেরে কয়েকজন যাত্রী বায়েজিদ থানায় ঢোকার আগে লেগুনা থেকে নেমে গেলেও ওই শিক্ষিকা সেই কিশোরীকে ধরে রাখেন। একপর্যায়ে সেই কিশোরী পুলিশের কাছে অপহরণের বিষয়টি স্বীকার করে।
খুলনা গেজেট/কেডি