ফিলিপাইনের সাবেক সামরিক প্রধান ও প্রেসিডেন্ট ফিদেল ভালদেজ রামোস রোববার মারা গেছেন। তিনি কোরিয়া ও ভিয়েতনামে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। রাজনৈতিক অঙ্গনেও সফল ছিলেন এই বর্ষীয়ান নেতা।
আজ সোমবার(১ আগষ্ট) মার্কিন সংবাদ সংস্থা সিএনএনের এক প্রতিবেদন এ তথ্য জানা গেছে।
সাবেক একনায়ক ফার্দিনান্দ মার্কোসের (সিনিয়র) শাসনামলে রামোস (৯৪) নিরাপত্তা বাহিনীর উচ্চ-পদে ছিলেন।
পরবর্তীতে তিনি ফার্দিনান্দ মার্কোসকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য জাতীয় বীরের মর্যাদা পান। তার নেতৃত্বে জাতীয় পুলিশ বাহিনী বিদ্রোহ করে, যার ফলে ১৯৮৬ সালে মার্কোসের সরকারের পতন হয়।
পরবর্তী জীবনে ‘নেভানো চুরুট’ হাতে নিয়ে ছবি তোলার জন্য খ্যাতি অর্জনকারী রামোস ১৯৯২ সালে পিপল পার্টি দলের নেতা কোরাজন আকুইনোকে পরাজিত করে দেশের প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। রামোসের আমকে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধির জন্য স্মরণ করা হয়য়।
রামোসের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন দেশের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ও মার্কোসের ছেলে ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র। তিনি বলেন, ‘এই দুঃখের দিনে, ফিলিপাইনের মানুষের বিষাদের সঙ্গে আমাদের পরিবার একাত্মতা ঘোষণা করছে। আমরা শুধু একজন ভালো নেতাকেই হারাইনি, বরং পরিবারের একজন সদস্যকেও হারিয়েছি।’
রামোস ফিলিপাইনের সেনাবাহিনীতে দ্বিতীয় লেফটেন্যান্ট থেকে শুরু করে কমান্ডার-ইন-চিফ পর্যন্ত সব ধরনের পদ ধারণ করেছেন। দেশ শাসন করার সময়ও তিনি তার মিলিটারি মেজাজ অক্ষুণ্ণ রাখেন।
৬ বছরের শাসনামলে রামোস বেশ কিছু নীতিমালা পরিবর্তন করেন। তার অবলম্বন করা উদার নীতির কারণে ফিলিপাইনে বিদেশী বিনিয়োগের পরিমাণ বেড়ে যায়।
তিনি পরিবহণ ও যোগাযোগ খাতেও বড় ধরনের পরিবর্তন আনেন। বিদ্যুৎ খাতে রয়েছে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান। কংগ্রেস থেকে পাওয়া বিশেষ ক্ষমতার মাধ্যমে তিনি দৈনিক ১২ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের অবসান ঘটান।
তার শাসনামলে দারিদ্র্যের হার ৩৯ শতাংশ থেকে কমে ৩১ শতাংশ হয়েছিল ।
রামোসের সঙ্গে যারা কাজ করেছেন, তারা তাকে একজন কাজপাগল ও সক্রিয় নেতা হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি যখন সামরিক বাহিনীর প্রধান ছিলেন, তখন একইসঙ্গে জগিং করতেন ও গলফ খেলতেন। ৮০ বছর বয়স পর্যন্ত তিনি এই অভ্যাস বজায় রাখেন।