আদালতে মামলাজট কমাতে বেশ কিছু বিষয়ের ওপর তাগিদ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। তিনি বলেছেন, ‘আগে গ্রামের সালিস ছিল। আইন করে সমাধানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সেটাকে যদি জনপ্রিয় করা যায়। তাহলে মামলাজট কিছুটা কমবে।’
+শুক্রবার (১ মার্চ) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালত প্রাঙ্গণে আগত বিচারপ্রার্থীদের জন্য বিশ্রামাগার উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধান বিচারপতি এসব কথা উল্লেখ করেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘মামলাজট এটা নতুন কিছু নয়, এটা একটি পুরাতন ব্যাধি। মানুষের সংখ্যা বাড়ছে।
সে জন্য মামলাজট বাড়ছে। মানুষ লেখাপড়া যত শিখছে, এতে মনে হয় মানুষ এক ধরনের অস্থিরতাপ্রবণ হয়ে উঠছে। এ ব্যাপারে মানুষকে সচেতন করে বোঝাতে হবে।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘শুধু মামলা মোকাদ্দমা করেই সমস্যা সমাধান হয় না। বিকল্প ব্যবস্থা আছে। সেটাকে যদি জনপ্রিয় করা যায়, তাহলে মামলাজট কিছুটা কমবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘যে পরিমাণ বিচারক সারা বাংলাদেশে থাকা দরকার সেই পরিমাণ বিচারক নেই। আমাদের দেশে যে হিসাব, সেই হিসাব অনুযায়ী ৯০ থেকে ৯৫ হাজার মানুষের জন্য একজন বিচারক। একেবারে সহকারী জজ থেকে প্রধান বিচারপতি পর্যন্ত।
এত কম বিচারক দিয়ে মামলাজট কমানো সম্ভব নয়। সে জন্য আমরা প্রতিবছর জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে এক শ বিচারক নিয়োগ করতে পারি। এই সংখ্যাটা বাড়াতে হবে। লজিস্টিক সাপোর্টসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমাদের বিচারকরা কোর্টে অলস সময় কাটান না। তারা কাজ করে যাচ্ছেন করে যাচ্ছেন। তার পরও মামলার শেষ হচ্ছে না। মামলা আরো বাড়ছে। এক বছর যদি থাকে মামলা ৫০০ পরের বছর দেখা যায় মামলার সংখ্যা ৫৫০ হয়ে যায়।’
তিনি বলেন, ‘মানুষ বাড়ছে। জমিজমার দাম বেড়েছে। খামাখা মামলা হয়। অনেকে মামলা এমনিতেই করেন। আমরা যে বিষয়টা পারিবারিকভাবে ও সামাজিকভাবে সমাধান করতে পারি, সেটা না করে আমরা আদালতে চলে যাই। সে জন্য মামলা বাড়ছে, বিচার প্রার্থীদের সংখ্যা বাড়ছে। আশা করি, এর একটা সমাধান হবে।’
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আরো বলেন, ‘আমি এবং আমরা সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে সরকারকে বলব- এ ব্যাপারে যেন আরো নজর দেওয়া হয়। বিচারকসংখ্যা যেন বাড়ানো যায় সে চেষ্টা যেন তারা করেন।’
এ সময় প্রধান বিচারপতির সঙ্গে ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগার, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ পারভেজ, নারী শিশু আদালতের বিচারক মো. ফারুক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসেন প্রমুখ।
খুলনা গেজেট/কেডি