খুলনা, বাংলাদেশ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  আইপিএল ইতিহাসে সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার ঋষভ পন্ত

‘মাথায় কোরআন রেখে ওয়াদা করান যেন কাউকে না বলি’

গে‌জেট ডেস্ক

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার একটি মাদরাসায় পবিত্র কোরআন মাজিদ নির্ভুলভাবে মুখস্থ বলতে না পারায় শিশু শিক্ষার্থীদের বেধড়ক মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া তাদের চড়-ঘুষি দিয়ে নির্মম নির্যাতন করা হতো। নির্যাতনের ঘটনা কাউকে না জানাতে তাদের কোরআন মাথায় রেখে করানো হতো ওয়াদা। কোমলমতি ছাত্ররাও ভয়ে কাউকে বলত না।

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা পৌর এলাকার মোহাম্মদপুর গ্রামে অবস্থিত নুরানি কিন্ডারগার্টেন মাদরাসায় এ ঘটনা ঘটে।

মঙ্গলবার (৮ মার্চ) দুপুরে অভিযুক্ত মাদরাসাশিক্ষক হুসাইনকে বরখাস্ত করে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ।

স্থানীয়ভাবে জানা যায়, সম্প্রতি শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখে পরিবারের চাপের মুখে পড়ে হেফজ বিভাগের খালিদ হাসান (১০) নামের এক ছাত্র নির্যাতনের ঘটনা জানায়। এরপর অন্য শিক্ষার্থীরাও নির্যাতনের বিষয়ে মুখ খুলতে শুরু করে। এ ছাড়া ওই মাদরাসা পরিচালকের ছেলেকে নির্যাতনের পর কোরআন মাথায় রেখে ওয়াদার বিষয়টি উঠে আসে। পরে অভিভাবকদের চাপের মুখে নড়েচড়ে বসে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ।

মাদরাসার পরিচালক মাওলানা আব্দুল মালেকের ছেলে মাহমুদুল হাসান (৮) বলে, ছয় পারা মুখস্থ হয়েছে আমার। তিন দিন আগে সকালে সাত সবক শোনানোর সময় একটি লোকমা (ভুল) যাই। এতে আমাকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন শিক্ষক হুসাইন। পরে আমার মাথায় কোরআন মাজিদ রেখে ওদায়া করান আমি যেন কাউকে না বলি।

শিক্ষার্থী খালিদ হাসান বলে, গত রোববার ভোরে সবক (নতুন মুখস্থ পড়া) না হওয়ায় আমাকে বেধড়ক মারধর করে চড়-ঘুষি মারেন হুজুর। এরপর আমাকে মারধরের কথা কাউকে না বলতে বলে মাথায় কোরআন রেখে ওয়াদা করা হয়। পরদিন আমি বাড়িতে গেলে শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখে মা জানতে চাইলে আমি ঘটনাটি জানাই।

এ বিষয়ে মাদরাসার পরিচালক মাওলানা আব্দুল মালেক বলেন, আমিও ঘটনাটি জানতাম না। বিষয়টি অন্য এক ছাত্রের অভিভাবকের মাধ্যমে জানতে পেরে ছাত্রদের জিজ্ঞাসা করি। তখন অধিকাংশ ছাত্রই তাদের নির্যাতনের বিষয়ে মুখ খোলে এবং কোরআন শরিফ মাথায় রেখে ওয়াদার কথা বলে। এর মধ্যে আমার ছেলেও আছে।

তবে আমার ছেলে আমাকে কিছুই জানায়নি। সব শিক্ষার্থীর মনে ভয়ভীতি ঢুকে যাওয়ায় মাদরাসার পরিচালনা কমিটির বৈঠক শেষে অভিযুক্ত শিক্ষক হুসাইনকে বরখাস্ত করে বিদায় দেওয়া হয়েছে।

দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএম লুৎফুল কবীর বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি৷ অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!