খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  বিচার বিভাগকে ঘুষ ও দুর্নীতিমুক্ত করার চেষ্টা হচ্ছে : ড. ইউনূস
  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৮ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১৩৮৯
  পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকেও আমরা ভারত থেকে ফেরত চাইব : প্রধান উপদেষ্টা

মহাসড়কজুড়ে যানজট, দীর্ঘ ভোগান্তি নিয়ে বাড়ি ফিরছে মানুষ

গেজেট ডেস্ক

ঈদ যাত্রায় গতকাল শুক্রবার সড়কে যানজট দেখেছে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। পদ্মা সেতু পাড়ি দিতে মাওয়া টোল প্লাজায় বসে থাকতে হয়েছে কয়েক ঘণ্টা। ঢাকা থেকে সিলেটের পথেও যানজট ছিল প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। চট্টগ্রামে যেতে কুমিল্লায় শ্রমিক অবরোধের মুখে পড়েন যাত্রীরা।

উত্তরের যাত্রীরা ভুগেছেন বেশ। ১৯ থেকে ২২ ঘণ্টায় একেকজন ঢাকা থেকে পৌঁছেছেন রংপুর। তবে ফেরিঘাটে ছিল স্বস্তি। ঘাট পার হতে অপেক্ষার বিড়ম্বনা ছিল না।

কয়েক দিন ধরে ঢাকা-সিলেট, এশিয়ান বাইপাস ও রূপসী-কাঞ্চন সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ঈদের শেষ যাত্রায় এই সড়কগুলোতে ব্যাপক যানজট দেখা দিয়েছে।

গতকাল ছুটির দিন হলেও এই দুই মহাসড়কের প্রায় ২০ কিলোমিটার যানজট হওয়ায় ঈদ যাত্রায় যাত্রীদের ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে। যানজটের কারণে আটকা পড়েছে পণ্য ও যাত্রাবাহী বিভিন্ন যান। ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও এশিয়ান বাইপাস সড়কের রূপগঞ্জের অংশ পার হতে সময় লাগে সর্বোচ্চ ২০ থেকে ৩০ মিনিট। অথচ দীর্ঘ যানজটের কারণে এই অংশটুকু পার হতে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা লেগে যাচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের রূপগঞ্জ অংশে বরাব, ভুলতাসহ বেশ কয়েকটি স্থানে পশুর হাট বসানো হয়েছে। হাটের কারণে ঠিকমতো গাড়ি চলাচল করতে পারছে না।

আহম্মেদ জুবায়ের নামের এক যাত্রী বলেন, ‘দুপুরে কিশোরগঞ্জ যাওয়ার উদ্দেশে রাজধানীর সায়েদাবাদ থেকে গাড়িতে উঠেছি। কিন্তু কাঁচপুর থেকে বরপা পর্যন্ত আসতেই চার ঘণ্টা লেগে গেছে। অথচ যানজট না থাকলেও এতটুকু রাস্তা পার হতে সময় লাগে মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিট।’

দুর্ভোগে ঘরে ফিরল উত্তরের যাত্রী

ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট থেকে উত্তরাঞ্চলে বাড়ি ফেরা মানুষের দুর্ভোগ আর ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। ধীরগতিতে চলছে যানবাহন। রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় আসতে ঢাকাসহ বিভিন্ন বিভাগ থেকে বাসে সময় লেগে যাচ্ছে চার-পাঁচ গুণ বেশি।

বিভিন্ন জেলা থেকে রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলে আসতে ২০ থেকে ২২ ঘণ্টা লেগে যাচ্ছে। ঘরমুখো যাত্রীরা বলছেন, ঢাকা থেকে চন্দ্রা ও চন্দ্রা থেকে টাঙ্গাইল পর্যন্ত তীব্র যানজট লেগে আছে। ফলে সময় লেগে যাচ্ছে অনেক বেশি।

ঢাকা থেকে রংপুর মডার্ন মোড়ে আসা যাত্রী শহিদুল ইসলাম জানান, ১৯ ঘণ্টা লেগেছে ঢাকা থেকে মডার্নে পৌঁছাতে। রাস্তায় রাস্তায় যানজট। যানবাহন চলছে ধীরগতিতে।

ঢাকা-চট্টগ্রামের কুমিল্লা অংশে দিনভর যানজট

বেতন ও বোনাসের দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে শ্রমিকদের অবরোধে দিনভর তীব্র যানজট ছিল কুমিল্লা অংশে। বিকেল সাড়ে ৪টার পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। গতকাল সকাল ১১টায় মহাসড়কের চান্দিনা উপজেলার বেলাশহর এলাকায় অবরোধ শুরু হয়।

সন্ধ্যায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মহাসড়কের দাউদকান্দি টোল প্লাজা থেকে চৌদ্দগ্রামের আনকড়া পর্যন্ত ৯৭ কিলোমিটারের কোথাও বড় কোনো যানজট নেই। তবে চান্দিনা-বাগুর বাস স্টেশন, নিমসার কাঁচাবাজার, গৌরীপুর বাসস্টেশন এবং পদুয়ার বাজার এলাকায় এলোপাতাড়ি গাড়ি রাখার ফলে প্রায়ই যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। পুলিশের উপস্থিতিতে স্বাভাবিক হলেও পরে আবার যানবাহনের লাইন দীর্ঘ হচ্ছে।

হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা জোনের অতিরিক্ত জিআইজি মো. খাইরুল আলম বলেন, ‘মহাসড়কের চান্দিনায় গার্মেন্টস শ্রমিকরা মহাসড়কে অবস্থান নেওয়ায় যানজট সৃষ্টি হয়েছিল। আমাদের বেশ কয়েকটি টিম নিরলস প্রচেষ্টায় যান চলাচল স্বাভাবিক করতে সক্ষম হয়েছে।’

বরিশালের পথে সড়কে গাড়ির চাপ

ভাঙ্গায় গতকাল সারা দিন ঘরমুখো যাত্রীদের চাপ লক্ষ করা গেছে। সবচেয়ে বেশি যাত্রীর চাপ ছিল সকাল ও বিকেলে। যাত্রার ভোগান্তি উপেক্ষা করে পরিবার পরিজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে তাঁরা হাসিমুখে কষ্ট মেনে নিচ্ছেন। একদিকে প্রচণ্ড গরম, অন্যদিকে গাড়িতে আসন না পাওয়ায় তাঁদের চোখে-মুখে ক্লান্তির ছাপ দেখা গেছে।

দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকা থেকে খুলনা এবং বরিশালগামী যাত্রীদের একটি অংশ ঢাকা থেকে বাসে ভাঙ্গা এসে গন্তব্যে যাওয়ার জন্য ভাঙ্গা দক্ষিণপাড় বাসস্ট্যান্ড এবং ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার সামনে অবস্থান করে। ভাঙ্গা থেকে তারা বিভিন্ন পরিবহনে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার জন্য অপেক্ষায় রয়েছে। ঢাকা থেকে সরাসরি বাসে টিকিট না পাওয়ায় তারা ভেঙে ভেঙে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হচ্ছে।

দুপুর ১২টার দিকে ভাঙ্গা উপজেলায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক্সপ্রেসওয়ের বগাইল টোল প্লাজায় গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা থেকে বরিশাল এবং খুলনাগামী বাস, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস এবং মোটরসাইকেলের ব্যাপক চাপ রয়েছে।

ভাঙ্গা দক্ষিণপাড় বাসস্ট্যান্ডে বাসের জন্য অপেক্ষমাণ যাত্রী বরিশালের টরকীর বাসিন্দা ইকবাল হাসান জানান, তিনি ঢাকায় চাকরি করেন। বৃহস্পতিবার ছুটি হয়েছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে এসেছেন। কিন্তু বাসের টিকিট সরাসরি না পাওয়ায় ঢাকা থেকে ভাঙ্গা লোকাল বাসে তাঁরা এসেছেন।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!