কোভিড-১৯ মহামারি শেষ হলে বিতর্কিত সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) কার্যকর করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আজ বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়িতে এক জনসভায় তিনি এই ঘোষণা দেন।
২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকার সিএএ পাস করেছিল। সংশোধিত আইনে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে নির্যাতনের শিকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে মুসলিম সম্প্রদায়ের কেউ এই আইনে ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্য হবেন না।
ভারতে সংখ্যালঘু মুসলিমদের নিপীড়নের হাতিয়ার হিসেবে এই আইন তৈরি করার অভিযোগে তখন ভারতজুড়ে প্রতিবাদের ঢেউ উঠেছিল। বিশ্বজুড়ে নিন্দার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই আইন তার রাজ্যে কার্যকর না করার ঘোষণা দেন।
তবে আজ অমিত শাহ তার ভাষণে বলেন, এই আইন কার্যকর করা হবে না বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা বলছে তা পুরোপুরি গুজব।
শিলিগুড়িতে জনসভায় বক্তৃতা করতে গিয়ে অমিত শাহ বলেন, ‘আমি এটা পরিষ্কার করে দিতে চাই যে তৃণমূল কংগ্রেস গুজব ছড়াচ্ছে যে সিএএ কার্যকর হবে না। আমি বলতে চাই যে কোভিড মহামারি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা সিএএ কার্যকর করব।’
মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘মমতা দিদি, আপনি কি অনুপ্রবেশ চালিয়ে যেতে চান? কিন্তু আমি আপনাকে বলতে চাই সিএএ একটি বাস্তবতা এবং এটি বাস্তবতাই থাকবে। তৃণমূল কংগ্রেস এ ব্যাপারে কিছু করতে পারবে না।’
অমিত শাহ বলেন, টিএমসির ‘অত্যাচারী’ শাসনকে উপড়ে পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না করা পর্যন্ত বিজেপি বিশ্রাম নেবে না।
‘আমরা আশা করেছিলাম যে তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেকে সংশোধন করবেন। আমরা তার নিজেকে সংশোধন করার জন্য পুরো এক বছর অপেক্ষা করেছিলাম কিন্তু তিনি নিজেকে পরিবর্তন করেননি,’ ভাষণে বলেন তিনি।
এর আগের দিন উত্তর চব্বিশ পরগণা জেলায় এক অনুষ্ঠানে অমিত শাহ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে বলেছিলেন, ভারত সর্বদা বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার সুরক্ষার উপর জোর দিয়েছে।
‘গত শতাব্দীর সত্তর এর দশকে, যখন একটি প্রতিবেশী দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছিল এবং ভয়ঙ্কর নৃশংসতা সংঘটিত হয়েছিল, তখন বিএসএফ এবং ভারতীয় সেনাবাহিনী উভয়ই অত্যন্ত বীরত্বের সঙ্গে সেই অঞ্চলে মানবাধিকার রক্ষা করেছিল,’ বাংলাদেশের নাম না নিয়ে এ কথা বলেন অমিত শাহ।
সেদিন, অমিত শাহ বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্তে, বিশেষ করে সুন্দরবনের ভারতীয় অংশের দুর্গম এলাকায় নিরাপত্তা বাড়াতে বিএসএফের ৩টি ভাসমান সীমান্ত চৌকি (বিওপি) উদ্বোধন করেন।