খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  আইপিএল নিলামে অবিক্রিত মোস্তাফিজুর রহমান, ভিত্তিমূল্য ছিলো ২ কোটি রুপি
  ইসকন নেতা চিন্ময় দাসকে বিমান বন্দরে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি
  কক্সবাজারের টেকনাফ সমুদ্র সৈকতে গোসলে নেমে নিখোঁজ দুই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
  সাবেক আইজিপি মামুনের ফের ৩ দিনের রিমান্ড

মশিয়ালীর চাঞ্চল্যকর ট্রিপল মার্ডার মামলা সমঝোতার চেষ্টা

একরামুল হোসেন লিপু

Coat

এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের গুলিতে ২০২০ সালের ১৬ জুলাই নগরীর খানজাহান আলী থানার মশিয়ালী গ্রামে তিনটি খুনের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয় আরও ৭ জন। আলোচিত এ ঘটনাটি এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। ঘটনার জের ধরে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী হামলাকারীর এক আত্মীয়কে পিটিয়ে হত্যা করে ও তাদের বাড়িঘর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন ধরিয়ে দেয়। এই ঘটনায় খানজাহান আলী থানায় দায়ের করা হত্যা মামলায় দীর্ঘ তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে চার্জশীট দাখিল করেছে। বর্তমানে মামলাটি খুলনা জজ কোর্টে বিচারের প্রক্রিয়ায় রয়েছে।

ঘটনার তিন বছর পর বহুল আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার আসামিদের সাথে নিহতের পরিবারের সদস্যদের সমঝোতার উদ্যোগ নিয়েছেন আটরা গিলাতলা ইউপি চেয়ারম্যান শেখ মনিরুল ইসলাম। উদ্যোগের অংশ হিসেবে তিনি ২০ আগস্ট ইউনিয়ন পরিষদে দু’পক্ষের মধ্যে বৈঠকের আয়োজন করে। এতে ত্রিপল মার্ডার মামলার প্রধান আসামি তিন ভাই যথাক্রমে শেখ জাকারিয়া, জাফরিন শেখ, মিল্টন শেখসহ তাদের কিছু অনুসারী হাজির হলেও বাদী পক্ষের ভুক্তভোগীরা কেউ হাজির হয়নি।

ওই বৈঠকে ৩ জন ইউপি সদস্য ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিকে নিয়ে ১৫ সদস্যের ১টি কমিটি করে বাদী পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য বলা হয়। এদিকে ইউপি চেয়ারম্যানের সমঝোতার এ উদ্যোগ নিয়ে এলাকায় বেশ আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে বলে এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানা যায়। আগামী ২৮ আগস্ট ওই সমঝোতা সালিশের বৈঠকের তারিখ নির্ধারণ রয়েছে বলে জানা যায়।

ট্রিপল মার্ডার মামলার বাদী ও নিহত সাইফুল ইসলামের বাবা সাইদুল শেখ খুলনা গেজেটকে বলেন, সমঝোতার ব্যাপারে আমাদের কোন সম্মতি নেই। মামলার ফয়সালা হবে আদালতে। আমি আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে আছি আদালতের দিকে। কখন এ হত্যা মামলার বিচার কাজ শুরু হবে। কখন আমি আমার ছেলের হত্যার বিচার পাবো। আমি আদালতের কাছে আমার ছেলেসহ এ হত্যা মামলার ন্যায্য বিচার চাই।

তিনি বলেন, যারা গ্রামে লুটেপুটে খায়, গ্রামে সন্ত্রাসী কাজ কাম করে তারা গ্রামের বাইরের কিছু লোকজন নিয়ে চেয়ারম্যানের বৈঠকে হাজির হয়েছিলো। আমাদের পক্ষের কেউ সেখানে যায়নি। গ্রামের মানুষ সমঝোতার বিপক্ষে। আসামিদের কিংবা চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে কোন চাপ আছে কিনা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আসামি কিংবা চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে আমার উপর কোন চাপ নেই। সমঝোতার ব্যাপারে আমাদের সাথে কেউ এখনো কোনো কথা বলেনি। বললেও আমরা সমঝোতায় রাজি হবো না।

ওই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ মশিয়ালী গ্রামের রবি শেখ ঘটনার দিনের বর্ণনা দিয়ে খুলনা গেজেটকে বলেন, ২০২০ সালের ১৬ জুলাই মশিয়ালী গ্রামের চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের এলোপাথাড়ি গুলিতে আমিসহ ১০ জন গুলিবিদ্ধ হই। তিনজন মারা যায়। আমার বাবা আফসার শেখ গুলিবিদ্ধ হয়ে খুবই আশঙ্কজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলো। আমার বাবা গেছে এই সংবাদে এলাকায় তার কবরও খোঁচা হয়েছিলো। কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমতে তিনি বেঁচে আছেন। আমার বাম পায়ে গুলি লাগে। সেই জ্বালা এখনো আমি ভোগ করছি। সমঝোতার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ফয়সালা হবে আদালতে। আদালতের কাছে আমরা ন্যায় বিচার চাই।

সমঝোতার বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য সোমবার (২১ আগস্ট) রাতে আটরা গিলাতলা ইউপি চেয়ারম্যানের মোবাইল ফোনে কয়েকবার যোগাযোগ করেও তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

ইউপি সচিব সুরাইয়া পারভিন বলেন, বিষয়টি আমি অবগত নয়।

 

খুলনা গেজেট/লিপু




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!