সাতক্ষীরার শ্যামনগরে যশোরেশ্বরী কালী মন্দিরের প্রতিমার মাতার মাথার স্বর্ণের মুকুট চুরির ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত আসামী মন্দিরের সেবায়েত রেখা সরকার চুরির সঙ্গে তার সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। রোববার (১৩ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত আদালতের বিচারিক হাকিম সুজাতা আমিন তার জবানবন্দি গ্রহণ করেন।
জবানবন্দি শেষে রাতেই চার আসামীকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চার আসামীকে এক দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়।
রিমান্ড ফেরৎ চার আসামীরা হলেন, সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ঈশ্বরীপুর গ্রামের মৃত ছিদাম সরকারের স্ত্রী ও মন্দিরের সেবায়েত রেখা সরকার (৪৫), একই গ্রামের অখিল চন্দ্র সাহার ছেলে অপুর্ব কুমার সাহা (৪৬), মৃত গোকুল চন্দ্র সাহার ছেলে সঞ্জয় বিশ্বাস (৩৭) ও একই উপজেলার শ্রীফলকাটি এলাকার হরেণ বিশ্বাসের স্ত্রী পারুল বিশ্বাস (৪৪)।
মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক আহমেদ কবির জানান, শ্যামনগরের ঈশ্বরীপুরের যশোরেশ্বরী কালী মন্দিরের কালী মাতার মাথার সোনার মুকুট চুরির ঘটনায় সেবায়েত জ্যোতিপ্রকাশ চট্টোপাধ্যায়ের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তারকৃত চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শনিবার (১২ অক্টোবর) আদালতে প্রত্যেককে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন জানানো হয়। বিচারক সুজাতা আমিন শুনানী শেষে তাদের প্রত্যেককে এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তাদেরকে আদালত থেকে গোয়েন্দা পুলিশ হেফাজতে নিয়ে আসা হয়। রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে আনা হয়। এর মধ্যে আসামী মন্দিরের সেবায়েত রেখা সরকার বিচারিক হাকিম সুজাতা আমিনের কাছে চুরির সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকারে করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত আদালত তার জবানবন্দি গ্রহণ করেন। জবানবন্দি শেষ হওয়ার পর রোববার রাতেই গ্রেপ্তারকৃত চার আসামীকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
তিনি আরও বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে আসামীদের কাছ থেকে আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। তবে অধিকতর তদন্তের স্বার্থে তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ২৭ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সাতক্ষীরার শ্যামনগরের যশোরেশ্বরী কালীমন্দির পরিদর্শনে এসে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে নিজের হাতে কালি প্রতিমার মাথায় সোনার মুকুট পরিয়ে দিয়েছিলেন। গত ১০অক্টোবর বিকেলে মুকুটটি চুরি হয়। মন্দিরের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে এক যুবককে মুকুটটি চুরি করে নিয়ে যেতে দেখা যায়। এ ঘটনায় মন্দিরের সেবায়েত জ্যোতিপ্রকাশ চট্টোপাধ্যায় বাদি হয়ে অজ্ঞাত আসামীদের বিরুদ্ধে শুক্রবার রাতে শ্যামনগর থানায় একটি মামলা (১২নং) করেন। পরে মামলাটির তদন্তভার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপর ন্যস্ত করা হয়। পুলিশ পরে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে উল্লেখিত চার আসামীকে গ্রেপ্তার করে।
খুলনা গেজেট/এনএম