পুরো মন্ত্রিসভা নিয়ে পদত্যাগ করেছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী তান শ্রি মুহিউদ্দিন ইয়াসিন। সোমবার সকালে দেশটির রাজা আল সুলতান আব্দুল্লাহর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। মালয়েশিয়ার বিজ্ঞানমন্ত্রী খাইরি জামালউদ্দিনের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
বার্তাসংস্থাটি জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে সোমবার দেওয়া এক পোস্টে মুহিউদ্দিন ইয়াসিনের পদত্যাগের তথ্য জানান খাইরি জামালউদ্দিন। এর আগে সোমবার সকালে মালয়েশিয়ার রাজার বাসভবনে প্রবশ করেছিলেন ইয়াসিন। এরপরই সেখানে তিনি রাজার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন।
তবে এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে রয়টার্সের পক্ষ থেকে মুহিউদ্দিন ইয়াসিনের দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। এদিকে মালয়েশীয় গণমাধ্যম মালয় মেইল পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার তথ্য নিশ্চিত করে বলেছে, মুহিউদ্দিন ইয়াসিন খুব শিগগিরই জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে পারেন।
এদিকে মুহিউদ্দিন ইয়াসিনের পদত্যাগের পর পরবর্তী সরকার কে গঠন করবেন, তা এখন পর্যন্ত স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমগুলো। কারণ, কোনও আইনপ্রণেতারই পার্লামেন্টে সুস্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। এছাড়া চলমান করোনা মহামারির মধ্যে মালয়েশিয়ায় নতুন করে নির্বাচন আয়োজন করা হবে কি না, সেটিও পরিষ্কার নয়।
২০২০ সালের মার্চে পার্লামেন্টে একদমই অল্প ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়ে মালয়েশিয়ার বর্তমান ক্ষমতাসীন জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন মুহিউদ্দিন ইয়াসিন। সোমবারের প্রতিবেদনে মালয় মেইল তাকে মালয়েশিয়ার সবচেয়ে স্বল্পমেয়াদী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে উল্লেখ করেছে।
২০২০ সালের মার্চে জোটের প্রধান শরিক মালয়েশিয়ার বৃহত্তম রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড মালয়েস ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন পার্টি (ইউএমএনও) মুহিউদ্দিন ইয়াসিনকে সমর্থন দিয়েছিল। তবে গত জুলাই মাসের শুরুর দিকে সেই সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয় দলটি। ফলে, নিজের পদ ধরে রাখার ব্যাপারে সারাক্ষণ চাপে ছিলেন তিনি। সম্প্রতি সেই চাপ আরও বেড়ে যায় তার দলের কয়েকজন আইনপ্রণেতা ইউএমএনও’তে যোগ দেওয়ার পর।
এছাড়া, করোনা মাহামরি মোকাবেলায় ব্যর্থতা, স্বেচ্ছাচারিতা, মহামারি পরিস্থিতিতে অর্থনীতি পুনর্গঠনে সঠিক নির্দেশনা দিতে না পারা এবং অযৌক্তিকভাবে রাজাকে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণার পরামর্শ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে মুহিউদ্দিন ইয়াসিনের বিরুদ্ধে।
গত জুলাইয়ের শেষ তার পদত্যাগের দাবিতে মালয়েশিয়ায় বিক্ষোভ শুরু হয়, এর জেরে গত ৪ আগস্ট এক টেলিভিশন ভাষণে মুহিউদ্দিন ইয়াসিন ঘোষণা করেন, পার্লামেন্টের সদস্যরা তাকে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মেনে নিতে প্রস্তুত কি না, যাচাই করতে আগামী সেপ্টেম্বরে দেওয়ান রাকাইতে আস্থা ভোট চান তিনি। তবে এর আগেই পদত্যাগ করলেন তিনি।
খুলনা গেজেট/এনএম