মণিরামপুরে মহামারী করোনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার সুযোগে ৯ মাসে উপজেলার পাড়িয়ালী আদর্শ বালিকা দাখিল মাদ্রাসার ২০ জন ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় কতিপয় জনপ্রতিনিধির সহযোগীতায় অভিভাবকরা প্রকাশ্যে ও গোপনে মেয়েদের বাল্য বিয়ে দিয়েছেন। বাল্য বিয়ের শিকার ছাত্রীদের মধ্যে ষষ্ঠ শ্রেণীর চারজন, সপ্তম শ্রেণীর চারজন, অষ্টম শ্রেণীর ছয়জন এবং নবম ও দশম শ্রেণীর ছয়জন।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার সুযোগে বাল্য বিয়ের বিষয়টি প্রতিষ্ঠান প্রধান নিশ্চিত করলেও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের দাবী উক্ত প্রতিষ্ঠানের কেউ তাকে কোন তথ্য জানায়নি।
মাদ্রাসা সুপার আব্দুল হালিম দাবী করেন, ইতিপূর্বে বাল্য বিয়ের খবর প্রশাসনকে জানিয়েও তেমন কোন ফল আসেনি। তাই করোনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের সুযোগে ছাত্রীদের বিয়ের ব্যাপারে টুক-টাক জানতে পেরেও প্রাশাসনকে খবরগুলো জানানো হয়নি।
একই কথা জানান, অত্র মাদ্রাসার দুই শিক্ষক। স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধিসহ সচেতন কয়েকজন বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে অসচেতন অভিভাবকরা প্রকাশ্যে ও গোপনে তাদের মেয়েদের অল্প বয়সে বিয়ে দেয়ার সুযোগ পেয়ে যান। তাছাড়া, নিজ বাড়িতে বিয়ে দিলে সমস্যা হতে পারে ভেবে তারা অন্য এলাকায় নিয়ে উক্ত বাল্য বিয়ে সম্পন্ন করে থাকেন।
অত্র মাদ্রাসার শিক্ষক অম্বরীশ রায় বলেন, তাদের দশম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে তার অভিভাবকরা যশোর পুলেরহাট এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে বিয়ে দিয়েছেন।
জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ চন্দ্র সরকার বলেন, করোনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধে পাড়িয়ালী আদর্শ বালিকা দাখিল মাদ্রাসার কতজন ছাত্রীর বাল্য বিয়ে হয়েছে, সে ব্যাপারে প্রতিষ্ঠান প্রধানসহ অন্য কেউ তাকে কোন তথ্য জানাননি।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মৌসুমি আক্তার বলেন, করোনাকালীন ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের মধ্যে চলতি মাসের পহেলা ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৭টি বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে তা বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু পাড়িয়ালী বালিকা দাখিল মাদ্রাসার ছাত্রীদের বাল্য বিয়ের ব্যাপারে মাদ্রাসার সুপারসহ অন্যকোন শিক্ষক তাদেরকে কোন খবর দেননি।
খুলনা গেজেট/কেএম