যশোরের মণিরামপুর উপজেলার ১৬ ইউনিয়নে ভোট গ্রহণের বাকি মাত্র তিন দিন। চলতি মাসের ২৮ নভেম্বর অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হলেও অভিযোগ রয়েছে চেয়ারম্যান পদে নৌকার অধিকাংশ প্রার্থীর পক্ষে বহিরাগতরা বেআইনি মহড়া প্রদর্শন করায় চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন সাধারণ ভোটারসহ স্থানীয় জনসাধারণ।
এবারের নির্বাচনে বিএনপি দলীয়ভাবে প্রার্থী না দেয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বিতার তালিকায় মাঠে রয়েছেন আওয়ামী লীগ ও একই দলের বিদ্রোহী প্রার্থীরা। নানা আশংকার মধ্যেই নির্বাচনী মাঠ মাতানোসহ জমজমাট রয়েছে অসংখ্য পুরুষ মেম্বর প্রার্থী এবং সংরক্ষিত নারী প্রার্থীদের বিরামহীন পদচারণায়।
উপজেলার বিভিন্ন নির্বাচনী ইউনিয়ন ঘুরে তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, চেয়ারম্যান পদে মূলত লড়াই হবে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে। তবে হাতে গোনা দুই একটি ইউনিয়নে আ’লীগ-বিদ্রোহী ও বিএনপি সমর্থিতসহ একজন জামায়াত প্রার্থীর মধ্যে ত্রি-মুখী লড়াই হতে পারে। নির্বাচনী প্রচারণার শেষ পর্যায়ে চেয়ারম্যান পদে বহাল রয়েছেন ৭৬ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী। এর মধ্যে উপজেলার শ্যামকুড় ইউনিয়নে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী না থাকায় নৌকার আলমগীর হোসেন বিজয়ী হতে চলেছেন। বাকি ১৫টি ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থীর পাশাপাশি আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার হওয়া ১৬ জন বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে বহাল তবিয়তে প্রচারণায় রয়েছেন।
বাকিরা বিএনপিসহ অন্যান্য দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে যেন তেন ভাবে প্রচারণায় রয়েছেন। তবে নির্বাচনী মাঠ জমজমাট পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে ১৬ ইউনিয়নে ৬১০ জন পুরুষ মেম্বর প্রার্থী এবং ৮০ জন সংরক্ষিত নারী প্রার্থীদের কারনে। অভিযোগ রয়েছে নির্বাচনী প্রচারণার শুরু থেকে উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থীর উপর হামলা এবং নির্বাচনী অফিস ভাংচুর ও একটি নৌকার অফিসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
এদিকে সকল প্রার্থীদের সাথে নির্বাচনী আচারণ বিধি নিয়ে কয়েক দফা প্রশাসনের মতবিনিময়ে অবাধ সুষ্ঠ নির্বাচনের লক্ষ্যে কঠোর হুশিয়ারি থাকলে তা না মানার অভিযোগ রয়েছে। সাধারণ ভোটারসহ স্থানীয়দের ভাষ্য মতে নির্বাচনী অধিকাংশ ইউনিয়ন এলাকায় বহিরাগতদের ধারালো অস্ত্রের মহড়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে। হুমকি দেয়া হচ্ছে বিশেষ একটি মার্কা বাদে চেয়ারম্যান পদে অন্য কোন প্রার্থীর পক্ষে ভোটাররা যেন ভোটের মাঠে না যায়। সে ক্ষেত্রে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে ভীতি ও অজানা আতংকের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ঝুকিপূর্ণ ইউনিয়ন গুলোতে সকল প্রকার অপরাধ দমনে আইন-শৃংঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর অভিযান-টহল জোরদার থাকলেও তাদেরকে রীতিমত হিম-শিম খেতে হচ্ছে। তবে প্রশাসনের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র থেকে জানা গেছে ভোট গ্রহণের দিন সে যেই হোক না কেন নির্বাচনী আইন অমান্যকারীদের দমনে আইন-শৃংঙ্খলা রক্ষা বাহিনী কঠোর অবস্থানে থাকবে।
উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, ২৮ নভেম্বর মণিরামপুর উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নে ভোট গ্রহণের জন্য ১৫২টি কেন্দ্রের ৮০৫টি ভোট কক্ষ প্রস্তুত রয়েছে। ১৬ ইউনিয়নে মোট ২ লক্ষ ৯৫ হাজার ৩৫ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের কথা রয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লক্ষ ৪৮ হাজার ৮’শ ৮২ জন এবং নারী ভোটার রয়েছে ১ লক্ষ ৪৬ হাজার ১’শ ৫৩ জন। দুটি ইউনিয়নে একজন করে মোট ৮ জন রিটার্নিং অফিসার ভোট গ্রহণে দায়িত্ব পালন করবেন।
খুলনা গেজেট/এনএম