খুলনা, বাংলাদেশ | ৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ৪০তম ব্যাচের ক্যাডেট এসআইদের সমাপনী কুচকাওয়াজ স্থগিত
  সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
  টাঙ্গাইলে বাস-পিকআপ সংঘর্ষে ৪ জন নিহত

মণিরামপুরে আড়াই বছরেও শুরু হয়নি মডেল মসজিদের কাজ

মণিরামপুর প্রতিনিধি

টেন্ডারের প্রায় আড়াই বছর পার হলেও প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রর নির্মাণ কাজ শুরু হয়নি যশোরের মণিরামপুরে। এ নিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, গণপূর্ত বিভাগ, একে অপরকে দোষারোপ করছেন। সংশ্লিষ্ট গণপূর্ত কর্তৃপক্ষ বলছে করোনার কারনে নির্মাণ কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি।

এদিকে দ্রুত কাজ শুরু হবে বিধায় সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মণিরামপুর উপজেলা পরিষদের দ্বিতল ভবনের মসজিদটি ভেঙ্গে ফেলে পাশেই একটি অস্থায়ী মসজিদ নির্মাণ করা হয়। কিন্তু মসজিদটি টিনসেড হওয়ায় বর্ষা হলেই পানি পড়ে। এতে করে মুসল্লিহদের নামাজ পড়তে অসুবিধা হয়। ফলে আদৌ মডেল মসজিদসহ ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ হওয়া নিয়েও অনেকের মনে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট অফিস সূত্রে জানাযায়, ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী ইশতেহারের মধ্যে ছিল প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় উন্নত মসজিদ নির্মাণের। এরই আলোকে ‘প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৮ হাজার ৭২২ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৭ সাল থেকে ২০২০ সালের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। প্রতিটি মসজিদসহ ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের নির্মাণ কাজের প্রাক্কলন ব্যয় ধরা হয় ১৩ কোটি ৪১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। জেলা পর্যায় চার তলা ও উপজেলা পর্যায় তিন তলা মসজিদে এক সাথে ৯০০ মুসল্লি নামাজ পড়ার সুবিধা পাবেন। এছাড়া নারী ও পুরুষের আলাদা ওযু ও নামাজ পড়ার ব্যবস্থা, লাইব্রেরী গবেষণা, ও দীনি দাওয়াত, কোরআন হেফজ, শিশু শিক্ষা, অতিথিশালা, বিদেশি পর্যটকদের আবাসন, মৃতদেহ গোসলের ব্যবস্থা, হজ্জযাত্রীদের নিবন্ধন, প্রশিক্ষণ, মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনদের আবাসনসহ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র কর্মকর্তা-কর্মচারীদের থাকার ব্যবস্থা থাকবে।

সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের জুন মাসে টেন্ডারসহ অন্যান্য কাজ সম্পন্ন হয়। মণিরামপুরে মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণে নূর হোসেন নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দায়িত্ব পান। প্রথমে উপজেলার জালঝাড়া ছিদ্দীকিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় এই মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপনের জন্য নির্ধারিত হয়। কিন্তু ওই জায়গাটি পৌরশহর থেকে দূরে হওয়ায় পৌরশহরের কাছাকাছি স্থানে নির্মাণের জন্য সর্বমহল থেকে দাবি উঠে। বিভিন্ন মহলের দাবির প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে ওই মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতি কেন্দ্র নির্মাণের জন্য নির্ধারন করা হয়।

এর প্রেক্ষিতে তৎকালিন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহসান উল্লাহ শরিফী ২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠান। সে মোতাবেক তৎকালিন যশোর জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল পরবর্তী নির্মাণস্থলের জমির প্রস্তাব ইসলামী ফাউন্ডেশন-এর মহাপরিচালক বরাবর পাঠান। প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে ২০১৯ সালের ২৩ এপ্রিল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব (উন্নয়ন) মোঃ সাখাওয়াত হোসেন স্বাক্ষরিত একটি পত্রে প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ওই স্থানে সয়েল টেস্ট, ডিজিটাল সার্ভে, মসজিদের স্ট্রাকচার ডিজাইন এবং ব্যয় প্রাক্কলন প্রস্তুতপূর্বক জরুরী ভিত্তিতে টেন্ডার আহবানের নিমিত্তে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গণপূর্ত বিভাগের প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলীকে তাগিদ দেন।

জানতে চাইলে মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ জাকির হাসান বলেন, ‘সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে গত ২ আগস্ট নির্মাণস্থল বুঝে দেওয়া হলেও অদ্যাবধি মসজিদ এবং ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ শুরু হয়নি।’

যশোর গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ড. হেলাল উদ্দীন জানান, বর্তমানে উপকরণের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় ঠিকাদার এই মুহুর্তে কাজ করতে অনিহা দেখাচ্ছেন।

তবে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীর বক্তব্যে দ্বিমত পোষণ করে ঠিকাদার কাজী মনিরুজ্জামান ক্ষোভ করে বলেন, ‘অনেক আগেই ইট আনা হয়েছে। কাজ শুরু করতে তিনি জেলা প্রশাসক ও গণপূর্ত বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দিয়েছেন।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আরিফ হোসেন বলেন, ‘করোনার কারণে কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি।’

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!