খুলনা, বাংলাদেশ | ৫ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২০ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্টর নিয়োগ নিয়ে ছাত্রদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া
  ৭ দিনের জন্য আন্দোলন স্থগিত করেছেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা
  ইউনাইটেড হাসপাতালের চেয়ারম্যানসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
  ৪০তম ব্যাচের ক্যাডেট এসআইদের সমাপনী কুচকাওয়াজ স্থগিত

মঙ্গলবার দ্বাদশ সংসদের যাত্রা শুরু

গেজেট ডেস্ক

মঙ্গলবার শুরু হচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ভাষণ দেবেন প্রথম অধিবেশনের প্রথম দিন। দ্বাদশ সংসদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে মাত্র ১১টি আসন নিয়ে দলীয়ভাবে দ্বিতীয় অবস্থানে থেকে কার্যকর বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করতে চাইছে জাতীয় পার্টি। যদিও তাদের থেকে প্রায় ৬ গুণ বেশি (৬২) আসনে বিজয়ী স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরাও অবস্থান করছেন বিরোধী এমপিদের গ্যালারিতে।

সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (২৯ জানুয়ারি) একাদশ সংসদের মেয়াদ শেষ হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) থেকে অধিবেশনের মাধ্যমে দ্বাদশ সংসদের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হবে। বিকেল ৩টায় ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে বসবে এ সংসদের প্রথম অধিবেশন। দিনের শুরুতেই স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন করা হবে। এরপর উত্থাপন করা হবে শোক প্রস্তাব। পরে সংসদে ভাষণ দেবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। তিনি সরকারের সফলতা ও আগামীতে করণীয় বিষয়ে অধিবেশনে দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখবেন। ওই ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাব নিয়ে পুরো অধিবেশনে সরকার ও বিরোধী দলের সদস্যরা আলোচনা করবেন। এই অধিবেশনে পাস হতে পারে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিল।

সংসদ ভবন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অধিবেশন সামনে রেখে জোরদার করা হয়েছে সার্বিক নিরাপত্তা। প্রথম দিনে দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। সংসদ ভবন এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অধিবেশন ঘিরে সংসদ ভবনজুড়ে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। অধিবেশন সামনে রেখে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে সংসদ সচিবালয়।

প্রথম অধিবেশন প্রসঙ্গে চিফ হুইপ নুর-ই-আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, দ্বাদশ সংসদের মেয়াদ শুরু হচ্ছে ৩০ জানুয়ারি। সরকার ও বিরোধী দলের সব সদস্যকে সংসদের অধিবেশনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। গত সংসদ থেকে এবার বেশি সময় অধিবেশন চলবে। ড. শিরীন শারমিনকে পুনর্নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় প্রথম দিন ডেপুটি স্পিকারের সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হবে। সংসদে রাষ্ট্রপতিকে স্বাগত জানাতে বিশেষ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আসন বিন্যাসের কাজ চূড়ান্ত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

একাদশ সংসদের মতো দ্বাদশ সংসদেও বিরোধী দলের দায়িত্ব পালন করবেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা। ইতোমধ্যেই জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদের বিরোধী দলীয় নেতা, জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিষ্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বিরোধী দলীয় উপনেতা ও জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্ন বিরোধী দলীয় প্রধান হুইপ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।

অধিবেশনের প্রস্তুতি সম্পর্কে বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘সংসদীয় গণতন্ত্রে বিরোধী দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে। সেই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনে আমরা প্রস্তুত। সরকারের ইতিবাচক কর্মসূচিতে সহযোগিতা ও নেতিবাচক পদক্ষেপ নিয়ে সমালোচনার মাধ্যমে জনগণের স্বার্থরক্ষায় সংসদে বিরোধী দলের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবেন জাতীয় পার্টির সদস্যরা।’ রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন জানিয়েছেন, ‘রাষ্ট্রপতির ভাষণ মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডসহ সাফল্য ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাগুলো রাষ্ট্রপতির বক্তব্যে প্রাধান্য পাবে।’

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্টতা পাওয়া আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোটের নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পঞ্চমবারের মতো সংসদনেতার দায়িত্ব পালন করবেন। গত ১০ জানুয়ারি শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা। এই সংসদে আওয়ামী লীগ ২২৩টি, জাতীয় পার্টি ১১টি, ওয়ার্কার্স পার্টি একটি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) একটি, কল্যাণ পার্টি একটি এবং স্বতন্ত্র সদস্যরা ৬২টি আসন পেয়েছেন। এবারই ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিরোধী দলের থেকে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যের সংখ্যা প্রায় ছয়গুণ বেশি। গত রবিবার স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের সরকারি বাসভবন গণভবনে আমন্ত্রণ জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে প্রধানমন্ত্রী সংসদকে কার্যকর করতে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন। অন্যদিকে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা সংরক্ষিত নারী আসনের বিষয়টি নির্ধারণের সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রীকে দিয়েছেন।

সংসদ সচিবালয় সংশ্লিষ্টরা জানান, অধিবেশন সামনে রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সংসদের ট্যানেল ও ড্রাইভওয়েতে গাড়ি রাখা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে দর্শনাথীদের মোবাইল বাইরে রেখে প্রবেশ করতে বলা হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি মোবাইল বিশেষভাবে পরীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সংসদের অধিবেশন কক্ষে সংসদ সদস্যদের বসার চেয়ার ঠিক আছে কি না তাও পরীক্ষা করা হয়েছে। অধিবেশন কক্ষের সকল মাইক্রোফোন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। অধিবেশন চলার সময় সব লিফট ক্রুটিমুক্ত রাখতে বলা হয়েছে। ইতোমধ্যে সংসদ ভবন ফুলসহ বিভিন্ন গাছ দিয়ে সাজানো হয়েছে। অধিবেশন চলার সময় অক্সিজেন সুবিধাসহ সার্বক্ষণিক একটি অ্যাম্বুলেন্স রাখতে বলা হয়েছে। সংসদ লবিতে একজন ডাক্তারসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী থাকবে। এছাড়া সংসদ অধিবেশন ও সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক সম্পর্কে জানাতে সংসদ সদস্যদের জন্য ‘শর্ট মেসেজ সার্ভিস’ সার্ভিস চালু করা হয়েছে।

নতুন সংসদের প্রথম দিনের অধিবেশনে প্রধান বিচারপতি, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টারা, দেশি-বিদেশি কুটনীতিক, রাজনৈতিক নেতা, সরকারি কর্মকর্তা এবং ভিআইপিদের আত্মীয় স্বজনসহ পাঁচ শতাধিক অতিথি উপস্থিত থাকবেন। ইতোমধ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্র্রী কার্যালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে সংগৃহীত তালিকা চূড়ান্ত করে আমন্ত্রণপত্র বিতরণ করা হয়েছে। আমন্ত্রণপত্র ছাড়া কোনো অতিথি এদিন সংসদে প্রবেশ করতে পারবেন না বলে জানিয়েছে সংসদের নিরাপত্তা বিভাগ।

খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!