বাগেরহাট-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব ইদ্রিস আলী ইজারদার এর বিরুদ্ধে নির্বাচনী শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করার অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটি।
বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় মোংলা প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে নিজ স্বাক্ষরিত লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ইব্রাহীম হোসেন। পরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।
তিনি বলেন, ১৯৯১ সাল থেকে টানা ৩২ বছর ধরে মোংলা রামপালের আপামর জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে মহান জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করে আসছেন বর্তমান খুলনা সিটি মেয়র আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেক ও তার সহমর্ধিনী পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আস্থাভাজনের ফলে পর পর ৭ বার সফল এই রাজনীতিক দম্পতি নৌকা প্রতীক পেয়ে এ জনপদে নির্বাচিত হয়ে আসছেন।
তাদের প্রতিনিধিত্বের আমলে এই এলাকার ঘের দখল, চাঁদাবাজী, সন্ত্রাসী, জমি দখল, বন্দর চোরাকারবারী প্রতিরোধ, লুটপাট বন্ধ সহ সুন্দরবন ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। তাদের কঠোর অবস্থানের কারনে দলের অভ্যন্তরের কতিপয় সুযোগ সন্ধানী ব্যক্তির অপকর্মে ভাটা পড়ে। সেই কতিপয় ব্যক্তিরাই এখন নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ঈগল প্রতীকের পক্ষ নিয়ে নৌকার কর্মীদের উপর হামলা, হেনস্থা, হুমকি-ধামকি, প্রচারনায় বাঁধা, পোষ্টার লিফলেট ছেঁড়া সহ নির্বাচনী শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করছে।
আমরা যারা নির্বাচন পরিচালনা কমিটির দায়িত্বে আছি তাদেরকে নিয়েও ঈগল প্রতীকের নেতা কর্মীরা নানারকম সমালোচনা ভয়ভীতি, হুমকি ধামকি ও প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। যা অনুষ্ঠিত সুষ্ঠ নির্বাচনে কোনভাবেই কাম্য নয়। ঈগল প্রতীকের কর্মিরা নির্বাচন বানচালের গভীর ষড়যন্ত্রের অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন।
প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই ঈগলের প্রার্থীরা নৌকার সমর্থকদের দেখামাত্রই উস্কানিমূলক শ্লোগান দিয়ে আসছে। এখন শুরু করেছেন রক্তের খেলা, একের পর এক আমাদের কর্মীদের উপর বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে জখম করছেন, খুন করার হুমকি দিচ্ছেন। নৌকার প্রচারণা থেকে সরে ঈগলের হয়ে কাজ করার জন্য হুমকি দিচ্ছেন, নতুবা এলাকায় থাকা যাবেনা বলে প্রতিনিয়ত শাসাচ্ছেন। নির্বাচন বানচাল ও ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য তারা নানা মঞ্চসহ বিভিন্ন প্রোগ্রামে অস্ত্রের শোডাউন/প্রদর্শন করছেন, যা সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও নির্বাচন বিধি লঙ্ঘন।
গত মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে মোংলা পৌর শহরের ০৬ নং ওয়ার্ডের দিগন্ত প্রকল্প স্কুলের সামনে শেখ সাদী বাদল ও পৌর শহরের কাঁচা বাজারে নাসির খার উপর হামলা চালায় ঈগলের কর্মীরা। শেখ সাদী বাদল মটর সাইকেলে সে একা ছিল, তখন তার আশেপাশে কিছু সংখ্যক পুরুষ লোক দেখা গিয়েছে। কিন্তু সেখানে কোন মহিলাই ছিলনা।
পরবর্তীতে প্রতিপক্ষ ঈগল প্রতীকের কর্মীরা তাকে ঘিরে অপপ্রচার চালান যে, শেখ সাদী বাদলের আশেপাশে তখন মহিলারা ছিল।
শেখ সাদী বাদলের উপর নৃশংস হামলার সময় ঈগলের প্রতীকের প্রার্থী নিজেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বিষয়টি সমাধান না করে তার নেতা কর্মীদের উস্কে দিয়ে পরিস্থিতি অবনতির চেষ্টা করেন এবং শেখ সাদী বাদলকে হেনস্তার জন্য কথিত সাজানো নারীদের দিয়ে মিথ্যা নাটক সাজায়। এরপর একই দিন সন্ধ্যায় মোংলা উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের কাটাখালীর চায়না মার্কেটে ঈগল প্রতীকের কর্মীদের ফের হামলায় নৌকা প্রতীকের কর্মী ইলিয়াছ হাওলাদার (৩৮), দুলাল জোমাদ্দার (৩৪), মনিরুল খাঁন (৩৬) ও আলতাফ হাওলাদার (৪০) আহত হন।
এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় নৌকা প্রতীকের প্রচারনায় বাঁধা ও ঈগল প্রতীকের নির্বাচনী সভা থেকে ০৭ তারিখের পর নৌকা কর্মী ও সাধারণ ভোটারদের এলাকা ছাড়া করার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এতে সাধারন ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে যাওয়া নিয়ে জনমনে নানা সংশয় সৃষ্টি হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার, উপজেলা আ’লীগের সভাপতি সুনিল কুমার বিশ্বাস, পৌর আ’লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আ: রহমান, সাধারন সম্পাদক আলহাজ্ব শেখ কামরুজ্জামান জসিম, পৌর আ’লীগের সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব শেখ আ: সালাম, সুন্দরবন ইউপি আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান শেখ কবির উদ্দিন সহ প্রমুখ।
খুলনা গেজেট/ টিএ