সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর এলাকায় অধিগ্রহনকৃত জমিতে ট্রাক রেখে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে। ভোমরা স্থলবন্দর যানজট নিরসন কমিটির নামে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিটি ট্রাক থেকে ৫০ টাকা করে চাঁদা নেয়া হচ্ছে। এভাবে প্রতিদিন ৩’শ থেকে ৫’শ ট্রাক থেকে এই চাঁদা আদায় করা হয়।
সাতক্ষীরা জেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক শেখ শাহাঙ্গির হোসেন শাহিন ও ভোমরা স্থলবন্দর ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতি (রেজিঃনং-৮৭) এর সভাপতি রেজাউল ইসলাম জানান, ভোমরা স্থলবন্দর এলাকায় অধিগ্রহনকৃত জমিতে ট্রাক রেখে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। ভোমরা স্থলবন্দর যানজট নিরসন কমিটির নামে নীরবে এই চাঁদাবাজি করছেন স্থলবন্দর ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতির (রেজিঃনং-৮৬) সভাপতি কামরুল ইসলাম গাজী, সাধারন সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, ভোমরা স্থলবন্দর শ্রমিকলীগের সভাপতি ও শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারন সম্পাদক আজিবুর রহমান আলিম, কবির হোসেন ও পলাশসহ কয়েকজন। বার বার তাদেরকে নিষেধ করা হলেও তারা কারো কাছ থেকে কোন প্রকার অনুমতি না নিয়েই জোরপূর্বক সেখানে ট্রাক প্রতি ৫০ টাকা করে প্রতিদিন সর্বনিম্ন ১৫ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদাই করছে। এঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগও দেয়া হয়েছে।
ভোমরা স্থলবন্দর এলাকার কয়েকজন বাংলাদেশী ট্রাক চালক বলেন, ভোমরা স্থলবন্দর যানজট নিরসন কমিটির নামে প্রতিদিন ট্রাক প্রতি ৫০ টাকা করে চাঁদা দিতে হয়। চাঁদা না দিলে তারা ক্ষেপে গিয়ে ট্রাক চালকদের নানা ধরনের হয়রানি করে থাকেন। তাই বাধ্য হয়ে আমাদেরকে চাঁদা দেওয়া লাগে।
সাতক্ষীরা জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জানান, ট্রাক মালিক সমিতির পক্ষ থেকে এভাবে অবৈধভাবে চাঁদা না তোলার জন্য কয়েকবার নিষেধ করার শর্তেও তারা এভাবে চাঁদা আদায় করে যাচ্ছে। তাদের এই চাঁদাবাজি বন্ধের জন্য ইতিমধ্যে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশসুপারসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো জানান, এর আগেও তারা ট্রান্সপোর্ট মালিক সমবায় সমিতির নামে সেখানে চাঁদা আদায় করা হতো। এক পর্যায়ে ট্রাক মালিক সমিতির পক্ষ থেকে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দিয়ে সেটি বন্ধ করা হয়। তবে, ট্রান্সপোর্ট মালিক সমবায় সমিতির নামে চাঁদাবাজি বন্ধ হলেও তারা পুনরায় আবার ভোমরা স্থলবন্দর যানজট কমিটির নামে বেপরোয়া চাঁদাবাজি শুরু করেছে। যার অভিযোগ বিভিন্ন দপ্তরে দেয়া হয়েছে।
ভোমরা স্থলবন্দর শ্রমিকলীগের সভাপতি ও শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আজিবুর রহমান আলিম জানান, দীর্ঘদিন ধরে ভোমরা বন্দরে যানজট লেগে থাকে। এই যানজট নিরসনের লক্ষে এমপি মহোদয় ও বন্দর কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আমরা কিছু ছেলে যানজট নিরসনের লক্ষে কাজ করে যাচ্ছি। এখানে ট্রাক পার্কিং এর জন্য জায়গা করা হয়েছে। সবার সম্মতিক্রমে ৫০ টাকার একটি স্লিপের বিনিময়ে টাকা নেয়া হয়।
তিনি আরো জানান, ভোমরা স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) মাহমুদুল হাসান জানান, এভাবে টাকা নেয়ার কোন নিয়ম নেই। এ ব্যাপারে তাদের কাছে কোন তথ্য নেই।
খুলনা গেজেট/ এস আই