দিনাজপুরের বিরল উপজেলার আজিমপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ভোট গণনা শেষে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে গুলিতে একজন মারা গেছেন। গতকাল রোববার রাত ৮টার দিকে উপজেলার চৌরঙ্গীবাজার এলাকায় সিঙ্গুল হামিদ-হামিদা উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মোহাম্মদ আলী (৭০) ১নং আজিমপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সিঙ্গুল ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বিজয়ী মেম্বার প্রার্থী জবায়দুর রহমানের চাচা।
এদিকে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ১২নং চিকনদণ্ডী উপনির্বাচনে গতকাল ভোট গ্রহণের দিন কয়েকটি স্থানে হামলা, সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণ, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজিমপুর ইউপি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় গণনা শেষ হয়। এ সময় ইউপি সদস্য প্রার্থী সাইফুল ইসলাম ও জবায়দুর রহমানের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পুলিশ উত্তেজনা থামাতে চেষ্টা করে। পরে উত্তেজিত জনতা ভোটকেন্দ্রে ও পুলিশের ওপর চড়াও হয়। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। পুলিশ এ সময় প্রথমে কয়েকটি ফাঁকা গুলি ছোড়ে। পুলিশের ছোড়া গুলিতে বেশ কয়েকজন আহত হন। তাদের মধ্যে মোহাম্মদ আলীকে দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত ৯টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
দিনাজপুরের পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহম্মেদ বিলেন, সিঙ্গুল হামিদ-হামিদা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে চেয়ারম্যান পদে ফল ঘোষণার পর মেম্বার পদে নির্বাচনী ফল ঘোষণা করা হয়। ১নং ওয়ার্ডের টিউবওয়েল
প্রতীক নিয়ে জবাইদুর রহমান ২০ ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হন। পরাজিত প্রার্থী সাইদুর রহমানের সমর্থকরা ফল মেনে না নিয়ে কেন্দ্র প্রবেশ করে হামলা চালায়। এতে কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে ৫০-৬০ রাউন্ড শটগানের গুলি ছোড়ে। পরে পরিস্থিতি শান্ত হলে তারা ঘটনাস্থল থেকে চলে আসেন। পরে তারা জানতে পারি মোহাম্মদ আলী নামে এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। হাসাপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরির্শনে গিয়ে জেলা প্রশাসক জানান, জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের তিন কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এদিকে চট্টগ্রামের হাটহাজারি ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের খন্দকিয়া ছমদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী নেজাম উদ্দীন তনী (রজনীগন্ধা) ও জেলা ছাত্রলীগ নেতা নুরুল আবছার (দুটি পাতা) সমর্থকদের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ, ককটেল বিস্ফোরণ ও ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও ডিবি পুলিশ ৩৪টি শটগানের গুলি ও একটি টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করেছে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের ২০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।
হাটহাজারী থানার ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, ‘চিকনদণ্ডি ইউপিতে উপনির্বাচনে দুটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণ উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে।’
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার পরান্টু চাকমা জানিয়েছেন, চিকনদণ্ডি ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনে ৩ হাজার ৭৭০ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নুরুল আবছার নির্বাচিত হয়েছেন।
খুলনা গেজেট/এইচ