দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীরা একজন ভোটার প্রতি কত টাকা খরচ করতে পারবেন তার হিসাব দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একই সঙ্গে একটি সংসদীয় আসনের ব্যয়ও নির্ধারণ করে দিয়েছে ইসি।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম সই করা এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘যেহেতু গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর অনুচ্ছেদ ৪৪খ এর দফা (৩) এর অধীন মনোনয়নদানকারী রাজনৈতিক দল হইতে গৃহীত খরচসহ কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর নির্বাচনী খরচ ২৫ (পঁচিশ) লক্ষ টাকার অধিক হইবে না এবং যেহেতু নির্বাচনী ব্যয় ভোটার প্রতি হারে নির্ধারিত হওয়ার বিধান রহিয়াছে, সেহেতু, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় ভোটার প্রতি নির্বাচনী ব্যয় ১০/-(দশ) টাকা নির্ধারণ করিল।’
তবে ভোটার সংখ্যা যাই হোক, কোনো নির্বাচনী এলাকার প্রার্থী ব্যয় সর্বোচ্চ ২৫ (পঁচিশ) লাখ টাকার বেশি হবে না।
এদিকে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী, যে দল থেকে সর্বোচ্চ ৫০ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নেবে, সে দল সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারবে। ১০০ প্রার্থীর জন্য সর্বোচ্চ দেড় কোটি টাকা করা যায়। ২০০ প্রার্থীর জন্য তিন কোটি টাকা এবং ২শর বেশি প্রার্থী দিলে সংশ্লিষ্ট দল সর্বোচ্চ সাড়ে চার কোটি টাকা ব্যয় করতে পারে।
দলগুলো চাঁদা ও অনুদান অন্যান্য থেকে আয় করতে পারে। তবে নির্বাচনে ব্যয় করতে হয় নির্ধারিত খাতে। এক্ষেত্রে পার্টি প্রধানের ভ্রমণ, পোস্টার, প্রচার কাজের জন্য ব্যয় করতে হয়।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৪৪ সিসিসি-বিধি অনুযায়ী, ভোটের ফলাফল গেজেটে আকারে প্রকাশের পর ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব জমা দেওয়ার বিধান রয়েছে। এটা অমান্য করলে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করতে পারে ইসি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও প্রার্থীর সর্বোচ্চ ব্যয় ২৫ লাখ টাকা এবং ভোটার প্রতি ব্যয় ১০ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল।
আরপিও অনুযায়ী, নির্বাচিতদের গেজেট প্রকাশের ৩০দিনের মধ্যে ব্যয়ের হিসেব সব প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে দিতে হয়। কোনো প্রার্থী নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব নির্ধারিত সময়ে মধ্যে নির্বাচন কমিশনে জমা না দিলে, তার বিরুদ্ধে মামলার করার বিধান রয়েছে।
২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনের পর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ যথাসময়ে ব্যয়ের হিসাব না দেওয়ায়, তার বিরুদ্ধে মামলা করেছিল ইসি। সে সময় ভোটার প্রতি ব্যয় ধরা হয়েছিল ৮ টাকা। যদিও সেবারও সর্বোচ্চ ব্যয় ছিল ২৫ লাখ টাকা।
২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনের সময় প্রার্থীর ভোটার প্রতি গড় ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিল ৫ টাকা। আর সর্বোচ্চ ব্যয় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল ১৫ লাখ টাকা।
সিইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ৩০ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র বাছাই ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল দায়ের ও নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর। রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ করবেন ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনী প্রচার চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। আর ভোটগ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি (রোববার)।
খুলনা গেজেট/কেডি