খুলনায় ভৈরব নদের তীরে গম সংরক্ষণের জন্য নির্মিত হচ্ছে আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগার বা স্টিল সাইলো। নগরীর দৌলতপুর থানার মহেশ্বরপাশা সিএসডি’র অভ্যন্তরে ৭ দশমিক ৪৪ একর জায়গার উপর এটি নির্মানাধীন সাইলোতে অর্থায়ন করছে বিশ্বব্যাংক।খাদ্য অধিদপ্তর বাস্তবায়নাধীন খাদ্য সংরক্ষণ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় সাইলোটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫৫ কোটি ৯১ লাখ টাকা। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে শুরু হওয়া প্রকল্পের কাজ শেষ হবে ২০২৪ সালের ১১ ডিসেম্বর। ইতিমধ্যে প্রকল্পের ৩৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে দাবি করেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি।
নির্মাণাধীন স্টিল সাইলো – খুলনা গেজেট
প্রকল্পের তদারকির দায়িত্বে নিয়োজিত ইঞ্জিনিয়ার মোঃ মাজেদুর রহমান খুলনা গেজেটকে বলেন, সর্বাধুনিক গমের এ স্টিল সাইলোটিতে লুজ গম সংরক্ষণের জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে। সাইলোটিতে থাকবে ৬টি ঢোলাকৃতি বিন। প্রতিটি বিনের ধারণ ক্ষমতা থাকবে ১২ হাজার ৭’শ মেট্রিক টন। সেই হিসেবে আধুনিক এ খাদ্য সংরক্ষণাগারটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে ৭৬ হাজার ২’শ মেট্রিক টন লুজ গম সংরক্ষণ করা যাবে। কেমিক্যাল ছাড়া এখানে রাখা গমের তিন বছর পর্যন্ত গুণগতমান ভাল থাকবে। শুধুমাত্র শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সিস্টেমটাকে কন্ট্রোল করে গমের তাপমাত্রা সঠিক রাখা হবে। নদী, সড়ক বা রেলপথে গম আসলে গমগুলো কনভেয়ার বেল্টের মাধ্যমে অটোমেশনে সংরক্ষণাগারে এসে প্রতিটি বিনে মজুদ হবে। এরপর লুজ গম অটো প্যাকেজিং সিস্টেমের মাধ্যমে সংরক্ষণাগার থেকে বিভিন্ন জেলায় বিতরণ করা হবে।
তিনি আরো জানান, এটি একটি পাইলোটিং প্রজেক্ট। দেশের আটটি অঞ্চলে এ জাতীয় ৮ টি আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগার বা স্টিলের সাইলো নির্মিত হচ্ছে। এর মধ্যে ৬ টি চালের স্টিল সাইলো বাকী ২ টা গমের স্টিল সাইলো। ৩ টি স্টিল সাইলোর নির্মাণ কাজ সমাপ্তির পথে। ৪ টির কাজ চলমান রয়েছে। আর ১ টি নির্মাণ কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
পাইলোটিং প্রজেক্টের কাজ সম্পন্ন হলে দেশের প্রতিটা জেলায় এ জাতীয় একটি আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগার নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের বলে যুক্ত করেন এই প্রকৌশলী।
“জেরিকো ফ্রান্স” নামে ফ্রান্সের একটি বেসরকারি কোম্পানি অত্যাধুনিক এ স্টিল সাইলোটির ডিজাইনার ও মূলত তারাই কনসালটেন্ট হিসেবে কাজটির তদারকি করছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রকল্পের উদ্দেশ্য সরকারি পর্যায়ে কৌশলগত খাদ্য মজুদ ক্ষমতা বৃদ্ধি, খাদ্যশস্য ও বীজ সংরক্ষণের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা সুরক্ষা দেওয়া। দুর্যোগ পরবর্তী প্রয়োজন মেটাতে পারিবারিক পর্যায়ে পারিবারিক সাইলো বিতরণ, দেশে খাদ্য মজুদ পদ্ধতির উন্নয়ন, খাদ্য সংরক্ষণের ব্যয় কমানো এবং উন্নত খাদ্য মজুদ ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিং চালু করা।
খুলনা গেজেট/কেডি