ভিক্ষা চেয়েও নিজের প্রাণ রক্ষা করতে পারলেন না মসজিদের মুয়াজ্জিন। পুত্রবধূকে রক্ষা করতে গিয়ে আব্দুল হাশিম (৭০) নামের এক মুয়াজ্জিনকে বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় নারী ও শিশুসহ নিহতের পরিবারের আরও তিন সদস্য আহত হয়েছেন।
নিহত আব্দুল হাশিম সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের উত্তর বড়দল ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী বড়গোপ টিলার মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে ও বড়গোপ উত্তরপাড়া জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন ছিলেন।
বুধবার (২৪ আগস্ট) রাত ১১টায় পুলিশ নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
নিহতের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপজেলার বড়গোপ টিলার মৃত ইউনুছ আলীর ছেলে জামির আলীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মুয়াজ্জিন আব্দুল হাশিমের পরিবারের সদস্যদের গত মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) ঝগড়া হয়। এরই জের ধরে সালিশ উপেক্ষা করে জামির আলী তার জায়গার ওপর দিয়ে চলাফেরা ও মসজিদের টিউবওয়েল থেকে পানি না নিতে মুয়াজ্জিন পরিবারের সদস্যদের নিষেধ করেন।
বুধবার (২৪ আগস্ট) বাদ আসর সাড়ে ৫টার দিকে মসজিদের টিউবওয়েল থেকে পানি নিতে এলে জামির আলী, স্ত্রী শহর বানু, ছেলে নজির মিয়া, মেয়ে শিরিনা, অপর মেয়ের জামাতা সোহেল মিয়াসহ তার পরিবারের সদস্যরা সংঘবদ্ধ হয়ে মুয়াজ্জিনের পুত্রবধূ জবেদা খাতুনকে বাঁশের লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করতে থাকে।
তার চিৎকার শুনে বসতঘর থেকে বের হয়ে পুত্রবধূকে রক্ষায় এগিয়ে এলে জামির আলীর ভগ্নিপতি পার্শ্ববর্তী কড়ইগড়ার রাশিদ মিয়া, তার ছেলে আল আমিন, রাশিদের চাচাতো ভাই এরকান মিয়া মুয়াজ্জিন আব্দুল হাশিমকে বাঁশের লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটাতে থাকে।
একপর্যায়ে বর্বর কায়দায় মারধর থেকে রেহাই পেতে প্রাণ ভিক্ষা চাওয়ার পরও রাশিদ মিয়া ও তার ছেলে আল আমিন মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করলে মুয়াজ্জিন আব্দুল হাশিম ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
এরপর তারা মুয়াজ্জিনের ছেলে মাসুক, তার স্ত্রী জবেদা এবং তাদের আট বছরের শিশুপুত্র সাকিতকে পিটিয়ে হাত ভেঙে দেয়।
তাহিরপুর থানার ওসি মো. আব্দুল লতিফ তরফদার জানান, এ বর্বর হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করতে পুলিশের একাধিক টিম অভিযানে রয়েছে।
খুলনা গেজেট/এমএনএস