খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ১৬ ডিসেম্বর ঘিরে কোনো ধরণের হামলার শঙ্কা নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  মহাখালীতে সড়ক-রেললাইন অবরোধ শিক্ষার্থীদের, সারা দেশের সঙ্গে ঢাকার ট্রেন চলাচল বন্ধ

‘ভালো কাজ করলেই তার বিরুদ্ধে লেগে থাকা এক শ্রেণির মানুষের অভ্যাস’

গেজেট ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে অতীতে যারা ছিনিমিনি খেলেছে তারা তাদের শাস্তি পেয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ তাদের ক্ষমতা থেকে হটিয়েছে।

মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে যুক্ত হন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, যারা আজকে দুর্নীতি খোঁজে তাদের বলব, ২০০১ সাল থেকে কী পরিমাণ দুর্নীতি হয়েছে সেটা দেখার জন্য। যারা ঋণ খেলাপির কথা বলেন তাদের বলব, জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর এলিট শ্রেণি তৈরি করার জন্য যে ঋণ খেলাপি সৃষ্টির কালচার এ দেশে তৈরি করে গেছে সেই খবরটা আগে নিন। আওয়ামী লীগ ভালো কাজ করলেই তার বিরুদ্ধে লেগে থাকা, এটা এক শ্রেণির মানুষের অভ্যাস। কারণ যারা এ দেশের স্বাধীনতা চায়নি, যারা খুনিদের নিয়ে এবং যুদ্ধাপরাধীদের নিয়ে সরকার গঠন করে রাষ্ট্র পরিচালনা করে বাংলাদেশকে, বাংলাদেশের উন্নয়নকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করতে চেয়েছিল তাদের কিছু প্রেতাত্মা এখনো সমাজে আছে।

শেখ হাসিনা বলেন, শুধু এখানে না বিদেশের কাছে নালিশ করে বেড়াচ্ছে, তাদের কাছে তথ্য দিচ্ছে। এতিমের অর্থ আত্মসাৎকারীকে দয়া করে আমরা বাসায় থাকতে দিয়েছি। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এবং সব থেকে ব্যয়বহুল হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। আর তার ছেলে একজন ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা এবং দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে ফ্রিজিটিভ হয়ে গেছে। বিদেশে পালিয়ে আছে। কিন্তু ষড়যন্ত্র বাংলাদেশের বিরুদ্ধে।

সরকার প্রধান বলেন, আজকে বাংলাদেশের উন্নয়ন কোথায় কম আছে? যারা শুধু এ দেশের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আর উন্নয়নে নাকি হাজার হাজার কোটি টাকা ধ্বংস হয়েছে বলেন তাদের বলব, ধ্বংসই যদি হয়ে থাকে তাহলে আজকে সারা বাংলাদেশের মানুষ শতভাগ বিদ্যুৎ পাচ্ছে কেমন করে? ব্যাপকভাবে রাস্তাঘাট হয়েছে। স্কুল-কলেজ, মেডিকেল কলেজ, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, কৃষি কলেজ, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়, টেকনিক্যাল কলেজ, ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টার, এই যে এত শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি হওয়া। এগুলো কীভাবে হয়েছে? আজকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। করোনাভাইরাসে অনেক উন্নত দেশ, অর্থশালী দেশ বিনাপয়সায় টিকা দেয় না। বিনা পয়সায় পরীক্ষা করে না। আমরা বিনা পয়সায় টিকা দিচ্ছি।

তিনি বলেন, যদি অর্থ ব্যয়ই না হবে তাহলে এত কাজ হলো কীভাবে? এইগুলো যারা দেখে না তাদের চোখে হচ্ছে সেই ঠুলি পরা। খুনিদের ঠুলি, যুদ্ধাপরাধীদের ঠুলি। এরা দেশের উন্নয়ন দেখে না। লুটে খেতে পারছে না সেটাই হচ্ছে বড় কথা। তারা ওই গরিবের হাড্ডিসার, কঙ্কালসার দেখিয়ে দেখিয়ে বিদেশ থেকে অর্থ এনে খাবে আর লুটপাট করে খাবে। যা করে গেছে সেটাই তাদের বড় কথা।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা আমাদের শিখিয়েছেন দেশকে ভালোবাসতে, দেশের মানুষকে ভালোবাসতে। তিনি যেদিন ১০ জানুয়ারি ফিরে আসেন। ফিরে এসে যে শব্দগুলো তিনি বলেছিলেন যে তার স্বপ্ন এ দেশের মানুষ অন্ন পাবে, বস্ত্র পাবে, উন্নত জীবন পাবে। সেটাই আমাদের আদর্শ।
তিনি বলেন, তারা কী এটা উপলব্ধি করতে পারে যে অর্থনৈতিক উন্নতি যদি না হয়ে থাকে তাহলে এত বড় বাজেট আমরা কীভাবে দিয়েছি? আর কীভাবে আমরা এত উন্নয়নকাজ করে যাচ্ছি? বাংলাদেশ আজকে এগিয়ে যাচ্ছে, আন্তর্জাতিক মহল বলে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। আর আমাদের দেশের কিছু লোক আছে তারা ঘেউ ঘেউ করেই যাচ্ছে। এই ঘেউ ঘেউ করতে থাকুক। এতে আমাদের কিছু আসে যায় না। দেশের উন্নয়নটা হয়েছে বলেই আজকে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি।

সরকার প্রধান বলেন, আজকে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। আর সে ডিজিটাল বাংলাদেশ ব্যবহার করে আমাদের বিরুদ্ধে বদনাম করে বেড়াচ্ছে দেশে-বিদেশে। এটাও আরেকটি বিষয়। কই খালেদা জিয়ার আমলে তো ডিজিটাল হয়নি বাংলাদেশ। বাংলাদেশের উন্নয়ন যারা সহ্য করতে পারে না তাদের মুখে কিছুই হলো না, কিছুই হলো না কথা। তাদের বলব নিজেরা আয়নায় একটু চেহারা দেখেন। আর অতীতে কী করেছেন সেটা দেখেন। আর যাদের জন্য মায়া কান্না একটা হলো দুর্নীতিতে সাজাপ্রাপ্ত, আরেকটা খুনি। একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে যারা আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল, আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল। আইভী রহমানের হত্যাকারী। সেই হত্যাকারীরা আজকে সব থেকে বেশি সোচ্চার।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের আমি এটুকু বলব, জাতির পিতা এ সংগঠন নিজের হাতে তৈরি করে দিয়ে গেছেন। অনেক ঘাত-প্রতিঘাত সয়ে আমরা এই সংগঠনকে আবার সুসংগঠিত করেছি। আর একমাত্র আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়। আওয়ামী লীগ থাকলে এ দেশ অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি করে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের মানুষ মর্যাদা পায়। আজকে সারাবিশ্বে বাংলাদেশের মানুষ মর্যাদা নিয়ে চলে।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে মঙ্গা থাকে না, দুর্ভিক্ষ থাকে না। মানুষের সেই হাহাকার নেই। আর মানুষকেও আমরা কষ্ট দেবো না। মানুষের অন্ন, বস্ত্রের চাহিদা আমরা মিটাই, মিটাতে পেরেছি। জিয়া, খালেদা জিয়া, এরশাদ সকলের আমলেই কিন্তু বিদেশ থেকে পুরনো কাপড় এনে বাংলাদেশের মানুষকে পরানো হতো। আজকে তা আর লাগে না। বিদেশ থেকে পুরনো কাপড় এনে পরাতে হয় না। আমরা পুরনো কাপড় বিদেশে পাঠাতে পারি, দিতে পারি। সেই সক্ষমতা আছে, সেই সক্ষমতা আমরা অর্জন করেছি। কিন্তু এটাকে ধরে রাখতে হবে। ধরে রাখতে হবে এ কারণে যে উন্নয়নটা আমরা করেছি তার গতিধারা আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে।

তিনি বলেন, জাতির পিতা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। সেই উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলব, আজ আমাদের সেই প্রতিজ্ঞা নিতে হবে। বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে অতীতে যারা ছিনিমিনি খেলেছে তারা তাদের শাস্তি পেয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ তাদের ক্ষমতা থেকে হটিয়েছে। আজ আওয়ামী লীগ পর পর তিন বার সরকারে আসতে পেরেছে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে। জনগণের ভোটে যদি নির্বাচিত না হতাম তাহলে এই তিন তিনবার আমরা সরকারে আসতে পারতাম না। আর আজকে ১৩ বছর পূরণ করতে পারতাম না। এটা হলো বাস্তবতা। এই বাস্তবতাকে স্বীকার করতে হবে। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে এই দেশের উন্নয়নের চাকাটা গতিশীল থাকবে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!