ভারতে অবতরণের সময় মিয়ানমারের একটি সামরিক বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। মূলত অবতরণের সময় রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে বিমানটি। এতে ৬ জন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মিজোরামের লেংপুই বিমানবন্দরে এই ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআই ও সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার সকালে মিজোরামের লেংপুই বিমানবন্দরে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। মিজোরামের ডিজিপির কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, বিমানটি ছোট ছিল এবং পাইলটের সাথে ১৪ জন আরোহী ছিলেন।
এএনআই বলছে, ১৪ জনের মধ্যে ছয়জন আহত হয়েছেন, আর আটজন নিরাপদে আছেন বলে ডিজিপি জানিয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের দ্রুত লেংপুই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, সেখানে তাদের চিকিৎসা চলছে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর বিমানটি অবতরণের সময় বিধ্বস্ত হয় বলে জানিয়েছে এএনআই।
পৃথক প্রতিবেদনে এনডিটিভি জানিয়েছে, মিয়ানমারের একটি সামরিক বিমান মিজোরামের লেংপুই বিমানবন্দরে রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়েছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সাথে তীব্র সংঘর্ষের পর ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এই রাজ্যের আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সদস্যদের দেশে ফেরানোর জন্য বিমানটি মিজোরামে এসেছিল।
চ্যালেঞ্জিং প্রকৃতির জন্য পরিচিত লেংপুই-এর বিমানবন্দরে অবতরণের সময় বিমানটি রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সাথে দেশটির জাতিগত সংখ্যালঘু বিদ্রোহীদের সংঘর্ষ ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। দেশটির কয়েকটি অঞ্চলে বিদ্রোহীদের সাথে চলছে সামরিক বাহিনীর এই সংঘাত।
আর সশস্ত্র জাতিগত গোষ্ঠীর সাথে সংঘর্ষের মধ্যেই গত সপ্তাহে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মিজোরামে পালিয়ে যান মিয়ানমারের ২৭৬ জন সৈন্য। বিদ্রোহীদের সঙ্গে সীমান্ত এলাকায় সংঘর্ষের পর তারা ভারতে প্রবেশ করে আশ্রয় নেন।
এনডিটিভি বলছে, ভারত সোমবার অন্তত ১৮৪ মিয়ানমারের সেনাকে তাদের দেশে ফেরত পাঠিয়েছে। আসাম রাইফেলসের একটি বিবৃতিতে নিশ্চিত করা হয়েছে, গত সপ্তাহে মোট ২৭৬ জন মিয়ানমারের সৈন্য মিজোরামে প্রবেশ করেছিল এবং সোমবার তাদের মধ্যে ১৮৪ জনকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
এর আগে গত বুধবার বিকেলে মিয়ানমারের ২৭৬ জন সৈন্য তাদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে মিজোরাম-মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্ত ট্রাইজেকশনের বান্দুকবাঙ্গা গ্রামে পৌঁছায় এবং সহায়তার জন্য আসাম রাইফেলসের কাছে যায়।
পশ্চিম মিয়ানমারের রাখাইনে জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) যোদ্ধারা সেনাবাহিনীর শিবিরগুলো দখল করার পরে সেনা সদস্যরা ভারতে আশ্রয় নেয়। পরে এসব সৈন্যদের আসাম রাইফেলস ক্যাম্পে আশ্রয় দেওয়া হয়।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, পালিয়ে আসা মিয়ানমারের সৈন্যদের পারভাতে আসাম রাইফেলস ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরে তত্ত্বাবধানের জন্য লুংলেইতে স্থানান্তরিত করা হয়। পরে আইজলের কাছে অবস্থিত লেংপুই বিমানবন্দর থেকে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের সিট্যুয়েতে মিয়ানমারের বিমান বাহিনীর বিমানে করে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করা হয়।
আসাম রাইফেলসের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে প্রবেশ করা সেনাদের মধ্যে বাকি ৯২ জন সৈন্যকে আজ প্রত্যাবাসন করা হবে। পুরো দলটির নেতৃত্বে একজন কর্নেল এবং ৩৬ জন অফিসার এবং ২৪০ জন নিম্ন-পদস্থ সেনাসদস্য রয়েছে।
খুলনা গেজেট/এনএম