ফের হিজাব বিতর্কে খবরের শিরনামে ভারতের গুজরাট। রাজ্যের ভারুচ লায়ন্স স্কুল অঙ্কলেশ্বরে চলছিল বোর্ড পরীক্ষা। যেখানে স্কুলের অধ্যক্ষ দশম শ্রেণির মুসলিম ছাত্রীদের হিজাব খুলে ফেলতে বাধ্য করেন বলে অভিযোগ। পরে ছাত্রীদের অভিভাবকরা স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটি, শিক্ষা দপ্তর, কালেক্টর এবং পুলিশের দ্বারস্থ হন।
ভারতীয় গণমাধ্যম বলছে, হিজাব বিতর্ক শুরুর পর ওই অধ্যক্ষকে বরখাস্ত করার দাবি উঠেছে। বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন জেলা শিক্ষা দপ্তর। ভারুচের জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিইও) স্বাতি রাউলজি বলেন, বোর্ডের নির্দেশিকা অনুসারে বোর্ড পরীক্ষায় পোশাকে কোন বিধিনিষেধ ছিল না।
বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) মুসলিম সম্প্রদায়ের পাশাপাশি কিছু শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা প্রতিবাদ দেখাতে স্কুলে জড়ো হন। পরে ঘটনার বিচার চেয়ে ভারুচের ডিইও-কে একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা। একজন অভিযোগকারী বলেন, পরীক্ষা শুরুর পাঁচ মিনিট আগে অধ্যক্ষ পরীক্ষার হলে আসেন। তখন ছাত্রীদের মাথায় থাকা স্কার্ফ বা হিজাব খুলে ফেলতে বাধ্য করেন।
গুজরাট সেকেন্ডারি অ্যান্ড হায়ার সেকেন্ডারি এডুকেশন বোর্ড (জিএসএইচএসইবি) বলেছে, পরীক্ষার্থীদের পোশাক পরা সম্পর্কে কোনও নির্দিষ্ট নিয়ম নেই। তারা যে কোনও ‘শালীন’ পোশাকে পরীক্ষার হলে আসতে পারবে। তবে অধ্যক্ষ বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি শ্রেণিকক্ষের সিসিটিভি রেকর্ডিং থাকা বাধ্যতামূলক। আর ভিডিও রেকর্ডিংয়ে সব ছাত্রছাত্রীর মুখ পরিষ্কার থাকতে হবে। তাই আমরা মেয়েদের পরীক্ষার আগে তাদের স্কার্ফ খুলে ফেলতে বলেছিলাম।’
একজন অভিভাবক অভিযোগ করেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি শ্রেণিকক্ষের সিসিটিভি রেকর্ডিং থাকা বাধ্যতামূলক। অভিভাবকদের অভিযোগ, ‘এরকম একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে মহিলা সুপারভাইজাররা দুই মেয়েকে তাদের হিজাব খুলে ফেলতে বলছে।’ একজন ছাত্রীর বাবা নাভেদ মালিক বলেছেন, ‘প্রায় ২০ জন মেয়েকে তাদের হিজাব খুলে ফেলতে বাধ্য করা হয়। আমার মেয়ে বাড়িতে আসার পর অনেক কেঁদেছিল। তারা যদি পরিচয় যাচাই করতে চায়, তাহলে উচিত ছিল প্রবেশের সময় করা।’
জিএসএইচএসইবি-র পরীক্ষা পরিচালক এম কে রাভাল বলেন, ‘পরীক্ষার সময় পোশাক পরিধান করার জন্য কোনও নির্দিষ্ট নিয়ম নেই। যেকোনও নারী তত্ত্বাবধায়ক পরীক্ষার আগে ছাত্রীদের পরিচয়পত্রের ছবির সঙ্গে তার মুখ মিলিয়ে দেখতে পারেন।
খুলনা গেজেট/ এএজে