বৈধ পাসপোর্ট ভিসা থাকলেও ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনের মৌখিক নিষেধাজ্ঞায় বাংলাদেশিদের স্টুডেন্ট ভিসায় ভারত যাতায়াত এখন পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে। তবে বাংলাদেশে আসতে পারছেন ভারতীয় শিক্ষার্থীরা।
এর ফলে শিক্ষা গ্রহণে বাধাগ্রস্ত হওয়ায় নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। ভারতে শিক্ষা গ্রহণের পথ সহজের আহবান জানিয়েছেন তারা।
জানা যায়, যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় স্বাভাবিক সময়ে প্রতি বছর বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ১৮ থেকে ২০ লাখ পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত করেন। এ যাত্রীদের মধ্যে প্রায় ১০ শতাংশ রয়েছে স্টুডেন্ট। যারা দুই দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে উচ্চশিক্ষার জন্য পড়াশোনা করেন। বাংলাদেশিরা ভারতের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন। আর ভারতীয়রা বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজে পড়েন।
২০২০ সালে করোনা সংক্রমণ দেখা দিলে প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ ও ভারত সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়। এতে শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে যার যার দেশে ফেরেন। বর্তমানে করোনা সংক্রমণ কমে এলে আবারও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়। এতে কয়েক মাস আগেই ভারতীয় শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের মেডিকেল কলেজগুলোতে শিক্ষাগ্রহণ শুরু করেছেন। তবে সব ঠিকঠাক থাকলেও ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনের বাধায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা ভারতে যেতে পারছেন না।
ভারতের কলকাতা আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশি শিক্ষার্থী আলামিন হোসেন ও অর্ণব চৌধুরী দেব বলেন, পাসপোর্ট ভিসা ও ভ্রমণের রুট সব ঠিক থাকলেও ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন তাকে ভারতে ঢুকতে দেয়নি। এপ্রিলে পরীক্ষা। কী করবো ভেবে পাচ্ছি না।
দিল্লির সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটির বাংলাদেশি শিক্ষার্থী উর্মী জানান, ভারতীয় শিক্ষার্থীরা অনেক আগেই বাংলাদেশে এসে ক্লাস শুরু করেছে। কিন্তু বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা ভারতে যেতে পারছে না। ভারত সরকারের কাছে এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের অনুরোধ রাখছি।
সিরাজগঞ্জ ফজিতুন্নেছা মেডিকেল কলেজের ভারতীয় শিক্ষার্থী বলেন, করোনায় মেডিকেল কলেজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তিনি ভারতে চলে গিয়েছিলাম। এখন বাংলাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সব খুলেছে তাই ফিরে এলাম। ইমিগ্রেশনে কোনো অসুবিধা হয়নি।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন ওসি মো. রাজু জানান, ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন তাদের মৌখিকভাবে জানিয়েছে বাংলাদেশি কোনো স্টুডেন্ট এ পথে ভারতে যেন না পাঠায়। প্রতিদিন অনেক শিক্ষার্থী চেকপোস্টে আসছেন। কিন্তু তাদের ভারতীয় ইমিগ্রেশন গ্রহণ করছে না। তবে ভারতীয় শিক্ষার্থীরা অনেক আগে থেকে স্বাভাবিক আসা যাওয়া করতে পারছিলেন।
বেনাপোল বন্দরের সহকারী পরিচালক সঞ্জয় বাড়ৈ বলেন, গত বুধবার বেনাপোল বন্দর দিয়ে মেডিকেল ও বিজনেস ভিসায় ভারতে গেছেন ৪৫৯ বাংলাদেশি। আর বিজনেস ও স্টুডেন্ট ভিসায় ভারত থেকে বাংলাদেশে এসেছেন ২৭২ জন ভারতীয় নাগরিক। ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনের বাধায় স্টুডেন্ট ভিসায় বাংলাদেশিদের যাতায়াত বন্ধ রয়েছে।
খুলনা গেজেট/এএ