দেশে সন্তানের পূর্ণ অভিভাবকত্ব পাওয়া প্রথম মা অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। বিচ্ছেদের পর তিনি পেয়েছেন সন্তানের পূর্ণ অভিভাবকত্ব।
গত সোমবার নাবালক সন্তানের অভিভাবকত্ব নির্ধারণে নীতিমালা প্রণয়নে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আগামী ৪ আগস্টের মধ্যে এই কমিটিকে নীতিমালা দাখিল করতে।
আজ থেকে ছয় বছর আগে কন্যা মিশেল আমানি সায়রার অভিভাবকত্ব পেয়েছিলেন বাঁধন। এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে তিনি জানান, আইনটা পরিবর্তনের একটা প্রক্রিয়া শুরু হলো, এটা সবচেয়ে আনন্দের। যারা আপিল করেছেন, তাদের সাধুবাদ জানাই। আমার অর্জনটা শুধু আমারই থাকুক, তা চাই না। আমি চাই, বাংলাদেশের সব মেয়ের অধিকার থাকুক তার সন্তানের ওপর।’
বাঁধন বলেন, বাচ্চাটাকে কাছে রাখতে চেয়েছি, যেহেতু ওর সব ভরণপোষণ আমিই করতাম। তাহলে আমি কেন তার অভিভাবক হতে পারব না। বাচ্চার বাবা কোনো দায়িত্ব পালন করেননি। আদালতে সেটি প্রমাণিত হয়েছে। তাই আমাকেই দেওয়া হয়েছিল।
আইন সম্পর্কে তিনি বলেন, উনি (আইনজীবী সারা হোসেন) কিন্তু উল্লেখ করেছেন, সাধারণত মাকে কাস্টডি দেওয়া হয়, শারীরিক জিম্মা যেটাকে বলে। বাবা বেঁচে থাকতে মাকে অভিভাবকত্ব দেওয়া হয় না। যদি বাবা না পান, সে ক্ষেত্রে দাদা-চাচা, এমনকি নানা-মামারা অভিভাবকত্ব পান। অনেক পরে আসে মায়ের নাম। যে কারণে আমারটা ব্যতিক্রমী একটা রায় ছিল। আমাদের প্রচলিত আইনে একটা লুপ হোল কিন্তু আছে, মাকে অভিভাবকত্ব দেওয়া যাবে, তবে যে শর্তগুলো পূরণ করতে হবে, সেটা খুবই কঠিন। কাস্টডি আর অভিভাবকত্ব এক নয়। অভিভাবকত্ব পুরো ভিন্ন একটা বিষয়। আমাদের আইনে বাবা ন্যাচারাল গার্ডিয়ান, অভিভাবকত্বের প্রশ্নে দূরদূরান্ত পর্যন্ত মায়ের অস্তিত্ব নেই আসলে। এসব জায়গায় অনেক সংশোধনী আনা প্রয়োজন।
২০১০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর মাশরুর সিদ্দিকীর সঙ্গে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন বাঁধন। কিন্তু দাম্পত্যজীবনের মাত্র চার বছর পরই ভেঙে যায় সেই সংসার। এরপর থেকে একমাত্র মেয়ে সায়রাকে নিয়ে সিঙ্গেল মাদার হিসেবে থাকছেন এই অভিনেত্রী।
খুলনা গেজেট/কেডি