মুজিব বর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসাবে সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় চারশ’ ভূমিহীন পরিবার সরকারিভাবে পাকা ঘর ও জমি পেয়েছেন। জমি না থাকায় বাড়িঘর তৈরির স্বপ্নও দেখেনি তারা কোনদিন। কেউ থাকতেন কবরস্থান এলাকায়। কারো আশ্রয় ছিল ভাঙ্গন কবলিত বেড়িবাঁধের ওপর। মুজিব বর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসাবে ঘর ও জমি পেয়ে তারা বেজায় খুশি।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পাওয়া সদর উপজেলার ফিংড়ী ইউনিয়নের গাভা এলাকার সাদ্দাম হোসেন জানান, দীর্ঘদিন ধরে বেড়িবাঁধের উপর দিন কাটিয়েছে। ঝড়বৃষ্টি এলে বাঁধে ভাঙ্গন দেখা দিতো। সেখানে টিকে থাকতে পারতেন না। এখন তো সেই সমস্যা আর নেই। পাকা ঘরে ভাল আছেন ছেলে মেয়েদের নিয়ে।
হাড়দ্দহা গ্রামের ফাহিমা খাতুন জানান, ছেলেমেয়েদের নিয়ে ভোমরায় একটি কবরস্থানের পাশে থাকতেন। কখনও ভাবিনি পাকা ঘর ও জমির মালিক হবো। শেখ হাসিনা তার আশা পূরণ করেছে। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মঙ্গল কামনায় দোয়া করেন।
একই এলাকার রহিমা খাতুন জানান, তিনি এখন নতুন ঘরের বাসিন্দা। আগে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। সেখানে নিয়মিত ভাড়ার টাকা দিতে না পারায় কত গালমন্দ শুনেছেন। তার প্রতিবন্ধী স্বামী ও ছেলে মেয়েদের নিয়ে সেলাইয়ের কাজ করেন। এখন বাড়ি পেয়ে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশী খুশী হয়েছেন তিনি।
সুফিয়া খাতুন জানান, সে গুচ্ছ গ্রামে বাপের বাড়ি থাকতো। সেখানে অনেক কষ্ট পেয়েছে। এখন ঘর পেয়ে তার আর কোন কষ্ট নেই। নিজ ঘরে থেকে শ্রম দিয়ে বেঁচে থাকবার পথ খুঁজে পেয়েছেন।
তলুইগাছা এলাকার ইসমাইল হোসেন, হাড়দ্দহা গ্রামের ফরিদা বেগম, গাভার সম্ভু দাস জানান, পাকা ঘর পেয়েছি, বৈদ্যুতিক সংযোগও লেগেছে। ঘরে যাওয়ার রাস্তা হয়েছে। সরকার গভীর নলকূপ বসিয়ে দিয়েছে। তাদের এখন পানির কষ্ট নেই। সারা দিন শ্রম দিলেও রাতে নিশ্চিন্তে ভালভাবে ঘুমাতে পারছি। ছেলে মেয়েদের নিয়ে এখন মোটামুটি ভালই আছি। এখন নিজেদেরকে আর ততটা অসহায় মনে হয় না।
ভোমরা ইউপি সদস্য আশরাফুল ইসলাম জানান, ভোমরা ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে আশ্রয়ণ প্রকল্পে পানির জন্য দুটি গভীর নলকূপ বসিয়ে দেয়া হয়েছে। পাইপ বসিয়ে পানি নিষ্কাশনেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাতেমা তুজ জোহরা জানান, ঘরের কাজ প্রায় শেষ হয়ে গেছে। এখন সংযোগ সড়ক, বনায়ন করার কাজ চলছে। অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে ভূমিহীনদের মাঝে জমি আর ঘর উপহার দেওয়া হয়েছে। সদর উপজেলার ৪শ’ ঘরের মধ্যে ৩৬০টির কাজ পুরোপুরি শেষ হয়েছে। আরও ৪০টি ঘরের কাজ প্রায় শেষ হওয়ার পথে।
খুলনা গেজেট/এনএম