নদীতে সাঁতার কাটতে যেয়ে হারিয়ে যাওয়া ইকরামুল (১৬) নামে এক কিশোরের লাশ ৫ ঘন্টা পর উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের ও খুলনার এক ডুবুরি দল। বেনাপোল ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে ব্যর্থ হওয়ার ৫ ঘন্টা পর খুলনার ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরী দল ওই কিশোরের লাশ উদ্ধার করে।
শনিবার (২২ আগষ্ট) বেনাপোল পোর্ট থানার ধান্যখোলা ও ঘিবা গ্রামের জোড়াব্রিজ নামক স্থানের কোদলা নদীতে ঘটনাটি ঘটেছে। দুপুর ২ টার সময় কোদলা নদীতে তিন বন্ধু ইকরামুল, রনি ও হাবিবুল্লাহ সাঁতার কাটছিল।এক পর্যায়ে রনি ও হাবিবুল্লাহ সাঁতরিয়ে ব্রিজের উপরে উঠে আসে কিন্তু ইকরামুল পানি থেকে আর উঠতে পারিনি। প্রথমে তারা দুই বন্ধু মিলে পানিতে খোঁজাখুজি করে। পরে পাশে থাকা লোকজনদের ঘটনাটি বললে তারা ও খোঁজাখুজি করে।
পরবর্তীতে স্থানীয়রা না পেয়ে বেনাপোল পোর্ট থানা ও ফায়ার সার্বিসকে খবর দেয়। তারা ও দীর্ঘক্ষন খোঁজাখুজি করে। না পেয়ে বেনাপোল ফায়ার সার্বিসের ইনচার্জ তৌহিদুর রহমান খুলনা ডুবুরী দলকে খবর পাঠায়।সন্ধ্যায় ডুবুরী দল ও বেনাপোল ফায়ার সার্বিসের মোট ১৬ সদস্যে দল মাত্র ২ মিনিটের মধ্যে পানি নীচ থেকে কিশোরের লাশটি উদ্ধার করে। মৃত ইকরামুল ধ্যান্যখোলা গ্রামের দক্ষিনপাড়ার ইমামুলের ছেলে।
স্থানীয়রা জানায়, ইকরামুল, রনি ও হাবিবুল্লাহ কোদলা নদীর ব্রিজে লাফালাফি ও সাঁতার কাটা খেলছিল। মাঝ নদী থেতে তারা সাঁতার কেটে ব্রিজের উপরে উঠে আসে। এ সময় রনি ও হাবিবুল্লাহ ব্রিজের উপর উঠলেও ইকরামুল উঠতে পারিনি।
এ প্রসঙ্গে রনি বলে, ‘আমরা একসাথে সাঁতার কেটে আসছিলাম। ব্রিজের কাছে এসে ইকরামুল হারিয়ে যায় । তাকে আমরা দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুজি করে গ্রামের ও পাশের লোকজনদের খবর দেই। এরপর লোকজন এসে চেষ্টা করে ও তাকে উদ্ধার করতে পারিনি।’
ধান্যখোলা গ্রামের ইউপি সদস্য আঞ্জুয়ারা বেগম জানান, এলাকাবাসি হারিয়ে যাওয়া কিশোরকে উদ্ধার করতে না পেরে প্রথমে বেনাপোল ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। পরে খুলনা থেকে ডুবুরি দল আসে।
বেনাপোল ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান সুমন বলেন, ‘আমরা ৬ জনের একটি ইউনিট ও এলাকাবাসি মিলে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছিলাম। অনেক খোঁজাখুজি করে না পেয়ে পরে খুলনা থেকে ডুবুরি দল এনে সন্ধ্যা ৭ টার সময় ইকরামুলের লাশটি উদ্ধার করা হয়। কোদলা নদীর দুপারে কয়েক হাজার নারী পুরুষ কিশোরের লাশ উদ্ধার কাজ দেখার জন্য ভীড় জমায়।’
অপরদিকে স্বজনদের কান্নায় আকাশ বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। ইকরামুলের মায়ের একটি আর্তনাত আমার ছেলেকে এনে দেও।আমি আর কিছুই চায়না। বেনাপোল পোর্ট থানার এসআই মাসুম বিল্লাহ ঘটনাসস্থল পরিদর্শন করেছেন। লাশ থানায় আনা হবে কিনা জানতে চাইলে বলেন না এটা ওসি স্যার বলেছে লাশ স্বজনদের কাছে দিয়ে দেওয়ার জন্য।
খুলনা গেজেট/এনএম