মাঘের দ্বিতীয় সপ্তাহে এসে শীত তার তীব্রতা ছড়াতে না ছড়াতেই চলে যাচ্ছে। তবে বৃষ্টি কেটে আগামী বৃহস্পতিবার থেকে ৫-৬ দিনের জন্য জেঁকে বসবে শীত। তবে তা তীব্র নয়, মৃদু শৈত্য প্রবাহ।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজধানীবাসী এবছর তীব্র, মাঝারী বা মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কোনটিরই অনুভূতি পাবেন না। আগামী শুক্রবার থেকে সোমবার পর্যন্ত ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নামতে পারে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে ২ ফেব্রুয়ারি।
মাঘ বিদায়ের আগে আরেকদফা শীত নামতে পারে ৩-৪ দিনের জন্য। এভাবেই ফাগুনে প্রবেশ করবে আবহাওয়া। উত্তুরে বাতাস সরিয়ে দখল করবে দখিনা হাওয়া।
দ্বিমেরুর প্রভাবে অতীতের শীত মৌসুমের চেয়ে এবারের শীতকাল কিছুটা ব্যতিক্রমী হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
এর কারণ বহুবিধ। রয়েছে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দক্ষিণের উপকূলে সৃষ্ট উষ্ণ মেঘের সঙ্গে হিমালয় থেকে আসা শীতল বাতাসের লড়াই। আছে প্রশান্ত মহাসাগরের ‘এল নিনো’ ও ‘লা নিনার’ প্রভাব। এবার মাঘের শীত বাঘ তো দূরের কথা, ঢাকার মানুষকেও কাঁপাতেও পারেনি।
আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, ভারত মহাসাগরে সৃষ্টি হওয়া দ্বিমেরু পরিস্হিতির কারণে একদিকে আন্দামান ও ইন্দোনেশিয়ার জাভা অঞ্চলের তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রির কাছাকাছি।
বাতাসের ধাক্কায় ওই উত্তপ্ত পানি বাংলাদেশ ও ভারতের বঙ্গোপসাগর অংশে চলে আসছে। ফলে শীতকালে এখানে তাপমাত্রা বেড়ে গেছে। মূল ভূখণ্ডের চেয়ে দক্ষিণে থাকা বঙ্গোপসাগরের তাপমাত্রা বেড়ে গেছে। এর ফলে ফুটন্ত পানিতে ধোঁয়ার মতো ঘন মেঘ তৈরি হচ্ছে।
এর বিপরীতে উত্তরে থাকা হিমালয় থেকে অপেক্ষাকৃত শীতল বাতাস সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। এতে শীতের প্রকোপ বাড়িয়ে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হচ্ছে উত্তরাঞ্চলসহ দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে, কিন্তু তা বেশি স্থায়ী হচ্ছে না। চলছে উত্তরের হিম বাতাসের সঙ্গে দক্ষিণের উষ্ণ মেঘের লড়াই। সবমিলিয়ে এবার একটু ব্যতিক্রম লাগছে শীতকাল।
আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলেন, আজ মঙ্গলবার থেকে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমবে। রাতের তাপমাত্রা ক্রমশ হ্রাস পেতে পারে। বৃষ্টি কেটে যাওয়ার পর বৃহস্পতিবার থেকে ফের রাতের তাপমাত্রা কমে শীত জেঁকে বসতে পারে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।