যশােরের চৌগাছার আড়শিংড়িপুকুরিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নানা সমস্যায় জর্জরিত। বিশেষ করে স্কুলের মাঠ আশপাশের চেয়ে নিচু হওয়ায় অল্প বৃষ্টিতেই সেখানে জমে থাকছে পানি। শিশু শিক্ষার্থী ও শিক্ষক অভিভাবকেরা অনেক কষ্টে যান বিদ্যালয়ে। এছাড়া নানান সমস্যায় জর্জরিত বিদ্যালয়টি কি দেখার যেন কেউ নেই অভিযােগ এলাকাবাসির।
জানা গেছে, উপজেলা সীমান্তবর্তী একটি গ্রাম আড়শিংড়িপুকুরিয়া। গ্রামটির শিশুদের শিক্ষাদানের লক্ষে ৩৩ শতাংশ জমির উপর ১৯৫৮ সাল একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন এলাকার শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিরা, যার নামকরণ করা হয় আড়শিংড়িপুকুরিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্কুলটি প্রতিষ্ঠার সময় এর পাশে তেমন কিছুই ছিল না। কিন্তু সময়ের সাথে অনেক কিছুই পাল্টে গেছে, বিদ্যালয়ের পাশে হয়েছে সড়ক, বাড়িঘর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অনেক কিছু। যার ফলে স্কুল মাঠ অনেক নিচু হয়ে গেছে । সামান্য বৃষ্টিতেই মাঠে জমছে হাঁটু পানি। নোংরা এই পানি পাড়ি দিয়ে শিশুরা যাচ্ছে ক্লাস আর শিক্ষকরা ইট বিছিয়ে তার উপর ডিঙি দিয়ে যান ক্লাস আর অফিস রুমে। একদিন, এক মাস বা এক বছর না, প্রায় এক দশক ধরে এই ভাগান্তি পােহাতে হচ্ছে তাদের। কিন্তু জনপ্রতিনিধি বা সংশ্লিষ্ট কৃর্তপক্ষ আজও কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি বলে অভিযােগ এলাকাবাসির।
সরেজমিন যেয়ে দেখা যায়, মাঠ থৈ থৈ করছে পানি। স্কুলের পাশেই অবস্থান করা ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাসিবুর রহমান, জয়, মেহেদী হাসানসহ বেশ কিছু শিক্ষার্থীর সাথে কথা হয়। তারা বলেন, স্কুলের মাঠে পানি জমে থাকায় আমাদের খুব কষ্ট করে ক্লাসে ঢুকতে হয়, পারিনা একটু খেলাধুলা করতে।
অভিভাবক জাহাঙ্গীর আলম, শাফি খাতুন বলেন, একটি স্কুলের নেই কােন প্রাচীর, মাঠে জমে থাকে হাঁটু পানি, বাথরুমের সমস্য তাে আছেই, নেই টিউবওয়েল। তারপরও বাচ্চাদের এখানে পাঠাতে হয় কারণ তেমন কােন স্কুল নেই। সমস্যায় জর্জরিত স্কুলটির দিকে সকলের সু-নজর দেয়া জরুরী।
সংশ্লিষ্ঠ ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নজিবর রহমান বলেন, স্কুলমাঠে মাটি ফেলা জরুরী হয়ে দাড়িয়েছে। ছেলে মেয়েরা খুব কষ্ট করে এখানে লেখাপড়া করছে। পরিষদে তেমন কােন অনুদান নেই, তারপরও বিষয়টি নিয়ে আমি পরিষদে আলােচনা করবাে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন বলেন, কষ্টের কথা বলে শেষ করা যাবেনা। নানা সমস্যায় জর্জরিত আমার বিদ্যালয়। আমি ইউপি সদস্য, চেয়ারম্যান এবং শিক্ষা অফিসকে লিখিত ভাবে জানিয়েছি কিন্তু আজও কােন প্রতিকার পাইনি। অল্প কিছু টাকা খরচ হলে সেটি নিজের অর্থে করা যেত কিন্তু দরকার অনেক টাকা যা ব্যক্তির পক্ষে সম্ভব না।
স্কুল পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মুক্তাদ্বির রহমান সােহেল বলেন, বিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আমরা সকলেই উদ্বিগ্ন। সংশ্লিষ্ঠ সকল জায়গায় বিষয়টি নিয়ে কথা হয়েছে কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার মােস্তাফিজুর রহমান বলেন, স্কুলটির সমস্যার কথা বেশ আগেই জেনেছি। তাদের আবেদনের প্রক্ষিতে আমি কর্তপক্ষকে অবহিত করেছি, অর্থ ছাড় হলেই সকল সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে।
খুলনা গেজেট/এমএম