খুলনা, বাংলাদেশ | ২৩ আশ্বিন, ১৪৩১ | ৮ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  ড. শেখ আব্দুল রশিদকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে ২ বছরের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ
  দেশে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৯৮১
  ছয় মামলায় সাবের হোসেনের জামিন, কারামুক্তিতে বাধা নেই
  বাংলাদেশী ৫ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরকান আর্মি

বৃষ্টিতে বেড়িবাঁধে আশ্রয় নেওয়া মানুষ গুলোর মানবেতর জীবন

নিতিশ সানা, কয়রা

ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে কয়রা উপজেলার প্রায় ১২টি পয়েন্টের বেড়িবাঁধ ভেঙে কপোতাক্ষ, শাকবাড়িয়া ও কয়রা নদীর পানিতে ৪ টি ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়। ঘর বাড়ি হারিয়ে উঁচু বেড়িবাঁধ ও আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয় পানিবন্দি মানুষ।

এলাকাবাসীর স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে দক্ষিণ বেদকাশি, মহেশ্বরীপুর ও মহারাজপুর ইউনিয়নের ১০ টি পয়েন্ট বাধঁ নির্মাণ হলেও মহারাজপুর ইউনিয়নের দশালিয়া বেড়িবাঁধের ১ টি পয়েন্ট ও উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নে গাতির ঘেরীর একটি পয়েন্ট এখনো বাঁধ দেওয়া সম্ভব হয়নি।

মহারাজপুর ইউনিয়নের খেজুর ডাঙ্গা সরকারি পুকুর পাড়ে ৩০/৩৫ পরিবার ঝুঁপড়ি বানিয়ে বসবাস করছে।
এছাড়া উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নের হরিহরপুর গ্রামের বেড়িবাঁধ ও গাতির ঘেরী বেড়িবাঁধে ৯০ থেকে ৯৫ টি পরিবার কোনরকমে পলেথিনের ঝুঁপড়ি বেধে মাথা গোজার ঠাই করেছে।

সরেজমিনে যেয়ে দেখাযায় বেড়িবাঁধের উপর লম্বা সারি বদ্ধ দোচালা ঝুঁপড়ি। পলিথিন ও গোলপাতা দিয়ে তৈরী ঘর গুলোতে বৃষ্টি হলে ঢুকছে পানি। বৃষ্টির সময় সকলে এক জায়গায় জড়োসড়ো হয়ে বসে থাকছে। পয়ঃনিস্কাশন, সুপেয় পানি ও খাদ্যের চরম সংকট রয়েছে।

মহারাজপুর ইউনিয়নের খেজুর ডাঙ্গা সরকারি পুকুরপাড়ে বসবাস করছেন নাছিমা খাতুন। তিনি বলেন, ‘ইয়াসে ঘর বাড়ি হারিয়ে সরকারি পুকুরপাড়ে ঝুঁপড়ি ঘরে বাস করছি। এখানে আসার পরে খেয়ে না খেয়ে কষ্ট করে থাকছি। বর্ষা হলে রাতে ঘুমাতে পারিনা, সবাই মিলে বসে থাকি। বুধবার রাতে বৃষ্টি হওয়ায় সারারাত জেগে ছিলাম। সব কিছু ভিজে গেছে। আজ সকাল ধরে ও বর্ষা হয়েছে আজও সব কিছু ভিজে গেছে। সরকারি চাল পেয়েছি কিন্তু বর্ষায় চুলাটাও ভিজে গেছে রান্না করার উপায় নাই।’

উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নের গাতির ঘেরী বেড়িবাঁধ বাস করছেন প্রশান্ত মন্ডল তিনি বলেন, ‘ইয়াসের দিন বাঁধ ভেঙে ঘর বাড়ি সব তলিয়ে গেছে। সেখানে বাস করা যাচ্ছে না। কোন রকমে রাস্তার উপরে বাসা বাধিছি। বৃষ্টি হলে বাসার ভিতরে পানি পড়ে। সব ভিজে ঘরের ভিতর কাদা হয়ে যায়।’

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ২৬ মে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে প্রবল জোয়ারে বেড়িবাঁধ ভেঙে লবণ পানিতে তলিয়ে যায় উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের ৫০ টি গ্রাম। ঘূণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার অতিমাত্রায় জোয়ারের পানিতে উপজেলার শাকবাড়ীয়া ও কপোতাক্ষ নদীর প্রায় ৫০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ছাপিয়ে লোকালয়ে লবণ পানি প্রবেশ করে। বিধ্বস্ত হয়েছে ১২৫০ টি ঘর। তলিয়ে গেছে দুই হাজার পাঁচ’শ চিংড়ী ঘের। যার ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১৫ কোটি টাকা। এছাড়া কৃষি ফসল নষ্ট হয়েছে ১৫ হেক্টর জমির।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনিমেষ বিশ্বাস বলেন, ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে ঘর বাড়ি হারিয়ে যারা রাস্তার উপর বসবাস করছেন তাদের কে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষথেকে সহযোগিতা করা হচ্ছে। এখন বৃষ্টির সময়, বৃষ্টি হলে তাদের ঝুঁপড়ি ঘরে পানি পড়ছে। বৃষ্টির কারনে যাতে তাদের কষ্ট না হয় তার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

খুলনসা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!