গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে শ্বাসতন্ত্রের প্রাণঘাতী রোগ করোনার সংক্রমণ বেড়েছে, কিছু পরিমাণে কমেছে এ রোগে মৃত্যুর সংখ্যা। তবে এই সময়সীমার মধ্যে বিশ্বে বেড়েছে এই রোগটি থেকে সুস্থতার হারও।
মহামারি শুরুর পর থেকে এ রোগে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হালনাগাদ তথ্য প্রদানকারী ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
ওয়েবসাইটটির পরিসংখ্যান বলছে, শুক্রবার বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪ লাখ ৫৬ হাজার ৪৩৪ জন এবং এ রোগে মৃত্যু হয়েছে ৭ হাজার ৭০১ জনের। পাশপাশি, এই দিন করোনা থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ৩ লাখ ৯০ হাজার ২০০ জন।
আগের দিন, বৃহস্পতিবার বিশ্বে করোনায় নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ৭০ হাজার ৫৯২ জন। ওইদিন এ রোগে মারা গিয়েছিলেন ৭ হাজার ৪৮৯ জন এবং সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন ৩ লাখ ৭৯ হাজার ৮৩১ জন।
অর্থাৎ, ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে বিশ্বে নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে ১৪ হাজার ১৫৮ জন এবং মৃতের সংখ্যা বেড়েছে ২১২ জন।
এবং, এই সময়সীমার মধ্যে করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তির সংখ্যা বেড়েছে ১০ হাজার ৩৬৯ জন।
শুক্রবার করোনায় নতুন আক্রান্ত ও মৃত্যুর হিসেবে বিশ্বের দেশসমূহের মধ্যে শীর্ষে ছিল যুক্তরাষ্ট্র। ওয়ার্ল্ডোমিটার্সের তথ্য অনুযায়ী, এই দিন দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৮২ হাজার ২৭৪ জন এবং এ রোগে মারা গেছেন ১ হাজার ৫৫২ জন।
করোনায় দৈনিক মৃত্যুতে এ দিন যুক্তরাষ্ট্রের পরেই ছিল রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের একসময়ের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ও বিশ্বের বৃহত্তম এই দেশটিতে শুক্রবার করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৬৪ জনের। পাশাপাশি, এই দিন দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩৭ হাজার ১৪১ জন।
যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া ছাড়া অন্যান্য যেসব দেশে করোনায় সংক্রমণ-মৃত্যুর উচ্চহার দেখা গেছে সে দেশসমূহ হলো – যুক্তরাজ্য (নতুন রোগী ৪৯ হাজার ২৯৮, মৃত্যু ১৮০), তুরস্ক (নতুন রোগী ২৮ হাজার ১৯২, মৃত্যু ২২৮) ও ইউক্রেন (নতুন রোগী ২৩ হাজার ৭৮৫, মৃত্যু ৬১৪)
করোনায় বিপর্যস্ত দুই দেশ ভারত ও ব্রাজিলে বর্তমানে কমে আসছে এ রোগের সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার। শুক্রবার ভারতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৬ হাজার ৩৩১ জন এবং এ রোগে মারা গেছেন ৬৬৬ জন। অন্যদিকে, এই দিন ব্রাজিলে নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ১৪ হাজার ৪০২ জন এবং এ রোগে মৃতের সংখ্যা ছিল ৪৪৭ জন।
ওয়ার্ল্ডোমিটার্সের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত করোনায় বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ২৪ কোটি ৩৭ লাখ ৮ হাজার ১৮৯ জন এবং এ রোগে মারা গেছেন মোট ৪৯ লাখ ৫২ হাজার ৮৫৬ জন।
এছাড়া, মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে উঠেছেন মোট ২২ কোটি ৮ লাখ ৩৭ হাজার ৪০৮ জন।
বর্তমানে বিশ্বে সক্রিয় করোনারোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৭৯ লাখ ১৭ হাজার ৯২৫ জন। আক্রান্ত এই রোগীদের মধ্যে মধ্যে করোনার মৃদু উপসর্গ বহন করছেন ১ কোটি ৭৮ লাখ ৪১ হাজার ৬৭৬ জন এবং গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় আছেন ৭৬ হাজার ২৪৯ জন।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে বিশ্বের প্রথম করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। করোনায় প্রথম মৃত্যুর ঘটনাটিও ঘটেছিল চীনে।
তারপর অত্যন্ত দ্রুতগতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটি। পরিস্থিতি সামাল দিতে ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
কিন্তু তাতেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় অবশেষে ওই বছরের ১১ মার্চ করোনাকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা করে ডব্লিউএইচও।
খুলনা গেজেট/ এস আই