চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেড়েছে। একইসঙ্গে আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন দুই হাজারের বেশি মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে সাড়ে ৭ লাখ।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে জাপান, ব্রাজিল, ইতালি ও হাঙ্গেরি। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫৯ কোটি ৭৬ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬৪ লাখ ৬১ হাজার।
বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন দুই হাজার ১৪ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে পাঁচ শতাধিক। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬৪ লাখ ৬১ হাজার ৯৯০ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৭ লাখ ৫৫ হাজার ৬৯৩ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় আড়াই লাখ। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৯ কোটি ৭৬ লাখ ৫৮ হাজার ৩৭৪ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৮০ হাজার ৬৫২ জন এবং মারা গেছেন ৪২ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ১৬ লাখ ৮২ হাজার ৮১৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ২৫ হাজার ৭৫২ জন মারা গেছেন।
অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গত ২৪ ঘণ্টায় এই দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৭৬ হাজার ৩২৫ জন এবং মারা গেছেন ৪৪২ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৯ কোটি ৫০ লাখ ৫১ হাজার ২০১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১০ লাখ ৬৪ হাজার ৮১ জন মারা গেছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় জাপানে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৬ জন এবং মারা গেছেন ২৮৪ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৫৯ লাখ ৫৩ হাজার ৩১৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৩৫ হাজার ৬৫৫ জন মারা গেছেন।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে চতুর্থ ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৪৬ জন এবং নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ২১ হাজার ৯২৭ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩ কোটি ৪২ লাখ ২৩ হাজার ২০৭ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৮২ হাজার ৭৪ জনের।
ফ্রান্সে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৫ হাজার ৭৪৫ জন এবং মারা গেছেন ৯৩ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৩ কোটি ৪২ লাখ ৭৬ হাজার ৮১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৫৩ হাজার ৩৩৫ জন মারা গেছেন। একইসময়ে হাঙ্গেরিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৬ হাজার ২৪৯ জন এবং মারা গেছেন ১১৭ জন।
ইতালিতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৬ হাজার ২৮১ জন এবং মারা গেছেন ১২৮ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ১৫ লাখ ৫৪ হাজার ৬২৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৭৪ হাজার ৩০০ জন মারা গেছেন। একইসময়ে মেক্সিকোতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১০ হাজার ৭৫২ জন এবং মারা গেছেন ৬২ জন।
তাইওয়ানে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩৩ জন এবং নতুন করে ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ২৪ হাজার ৮৭৩ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৪৯ লাখ ৫২ হাজার ৫৭০ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৯ হাজার ৫০৬ জনের। একইসময়ে ইরানে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৮২৪ জন এবং মারা গেছেন ৬৭ জন।
রাশিয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬৩ জন এবং নতুন করে ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ৩৩ হাজার ১০৬ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৮৯ লাখ ৬৪ হাজার ২৪৬ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৮৩ হাজার ৩০০ জনের। একইসময়ে নিউজিল্যান্ডে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৬৬১ জন এবং মারা গেছেন ১৬ জন।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় অস্ট্রেলিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২০ হাজার ৬৭৭ জন এবং মারা গেছেন ৬৩ জন। একইসময়ে থাইল্যান্ডে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৪৬১ জন এবং মারা গেছেন ২৮ জন। ফিলিপাইনে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৮৯২ জন এবং মারা গেছেন ৪৬ জন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।