খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ পৌষ, ১৪৩১ | ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ময়মনসিংহে ট্রাক-অটোরিকশার সংঘর্ষে একই পরিবারের ৪ জন নিহত
  নিখোঁজের ৪২ ঘণ্টা পর কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী নদী থেকে দুই পর্যটকের মরদেহ উদ্ধার
হামলা-গুলি ও আগুন

বিভিন্নস্থানে নির্বাচনী সহিংতায় আহত অর্ধশতাধিক

গেজেট ডেস্ক

ভোটের লড়াই ঘিরে অনেক এলাকায় উত্তপ্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার (৩০ ডিসেম্বর)ও বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জসহ বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় হামলা ভাঙচুর ও আগুনের ঘটনা ঘটেছে।

বাগেরহাট-৪ আসনের মোরেলগঞ্জে আওয়ামী লীগের একটি নির্বাচনী অফিসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। রবিবার ভোরের দিকে নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের জিউধরা বাজার এলাকার অফিসটিতে অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। এতে অফিসের ডেকোরেশনের কাপড়, চেয়ার, টেবিল ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগের নির্বাচনী পোস্টার ও ব্যানার পুড়ে যায়।

চট্টগ্রামে স্বতন্ত্র প্রার্থী জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর প্রচারণার সময় দুই দফা হামলা হয়েছে, যাতে আহত হয়েছেন এক নারী ও হুইপের ভাইসহ ২০-২৫ জন।

চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর প্রচারণার সময় দুই দফা হামলা হয়েছে। এসব ঘটনায় অভিযোগ উঠেছে নৌকার কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। প্রথম দফায় শান্তিরহাটে মাদ্রাসা গেটে শনিবার বেলা ১১টায় হামলায় এক নারী ও হুইপের ভাইসহ পাঁচজন আহত হন। সন্ধ্যায় হুইপের গাড়িবহরে গুলি, রামদা দিয়ে কুপিয়ে ছয়টি গাড়ি ভাঙচুর করার সময় গুলিবিদ্ধ হন দুজন; আহত হন হুইপের ছোট বোনসহ ২০ জন। এসব অভিযোগ করেছেন সামশুল হক চৌধুরীর প্রধান নির্বাচন সমন্বয়ক নাজমুল করিম চৌধুরী শারুন।

গুলিবিদ্ধ দুজন হলেন মুহাম্মদ মনির ও ইদ্রিস। আহতদের মধ্যে কয়েকজন হলেন হুইপের ভাই ফজলুল হক চৌধুরী মহব্বত, রেখা চৌধুরী, নাজমা আক্তার, বেলাল চৌধুরী, আরি, আবু তৈয়ব, রিমন, মিনহাজ উদ্দিন, মানিক ও ইউপি সদস্য সালাউদ্দিন সরওয়ার। জানা গেছে, চট্টগ্রাম-১২ আসনে পটিয়ার বর্তমান এমপি সামশুল হক চৌধুরী এবং জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী নির্বাচনের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর তাদের প্রচারণাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে পটিয়া। আতঙ্ক বাড়ছে ভোটারদের মাঝে।

নাজমুল করিম চৌধুরী শারুন বলেন, বেলা ১১টার দিকে নির্বাচনী প্রচারণার গাড়িবহর নিয়ে শান্তিরহাট বাজার অতিক্রম করার সময় প্রথম দফায় হামলা হয়। নৌকা প্রতীকের স্লোগান দিয়ে ১৫-২০ জন হামলা চালায়। হামলায় হুইপের ভাই ফজলুল হক চৌধুরী মহব্বতের মাথা ফেটে যায় এবং নাজমা আক্তার নামের এক নারীর কাপড় ছিঁড়ে ফেলে। এ সময় তার মোবাইলও ছিনিয়ে নেওয়া হয়। তিনি আরও অভিযোগ করেন, সন্ধ্যায় কুসুমপুরা ইউনিয়নের মোহম্মদ নগর এলাকায় গণসংযোগের সময় আরেক দফা হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় কয়েক রাউন্ড গুলি করা হয়। দুজন গুলিবিদ্ধ হন। ছয়টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।

পটিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রচারণার সময় হামলার ঘটনা ঘটে। আমরা খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করি।’

নায়ক ফেরদৌসের প্রচারণায় মারামারি : রাজধানীর হাতিরপুলে চিত্রনায়ক ফেরদৌসের নির্বাচনী প্রচারণায় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারির ঘটনায় অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৫ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

সূত্র বলছে, প্রচারণার মিছিলে কারা সামনে দাঁড়াবে এ নিয়ে দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে তা মারামারিতে রূপ নেয়। তবে ঢাকা মহানগরের ১৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক মোশারফ হোসেন রাজা জানিয়েছেন, তারা হাতিরপুল থেকে মিছিল নিয়ে সেন্ট্রাল রোডের দিকে যাওয়ার পথে সেন্ট্রাল রোড ইউনিট আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমাম হোসেন মঞ্জিলসহ তার সমর্থকরা হামলা করে। লাঠিসোটা দিয়ে তাদের নেতাকর্মীদের পেটায়। এতে অন্তত ৩০ জন নেতাকর্মী আহত হয়।

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় নির্বাচনী প্রচারণার সময় নৌকা প্রতীকের কর্মীদের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা এবং প্রচারকাজে ব্যবহৃত দুটি অটোরিকশা ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্বতন্ত্র প্রার্থী টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল বশরের দুইজন কর্মী আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। শনিবার দুপুর আড়াইটায় টেকনাফ উপজেলার সদর ইউনিয়নের হাবিরছড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে দুই প্রার্থীর তিনটি নির্বাচনী প্রচার অফিসে অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার রাতে উপজেলার মোবারকপুর ও কানসাট ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুলের দুটি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ নজরুল ইসলামের একটি অফিসে এ অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে শনিবার সকালে শিবগঞ্জ থানায় পৃথক সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।

ফেনীর সোনাগাজীতে লাঙ্গলের মিছিলে ছাত্রলীগের দুই নেতার ধাক্কাধাক্কির জেরে দুই গ্রুপের মধ্যে দুই দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ছাত্রলীগের চার নেতা আহত হওয়ার পাশাপাশি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাগুলো শুক্রবার রাতে উপজেলার বগাদানা ইউনিয়নের কাজিরহাট বাজার ও আউরারখিল গ্রামে ঘটে।

ফরিদপুর-৩ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শামীম হকের আরেকটি নির্বাচনী ক্যাম্পে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় নৌকার তিনটি ক্যাম্পে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটল। শুক্রবার রাতে কানাইপুর বাজারের জাহাঙ্গীর টাওয়ারের কাছে নৌকার ক্যাম্পটিতে আগুন দেওয়া হয়।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন-বিএনএম প্রার্থীর একটি নির্বাচনী ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার পরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার শংকরবাটি ঈদগাহের পাশে এ ঘটনা ঘটে।

পাবনা-১ আসনের পর পাবনা-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল হামিদ মাস্টারের গণসংযোগকালে হামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি। শুক্রবার রাত ৮টার দিকে জেলার চাটমোহর উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের খৈরাশ গ্রামে এ হামলা করা হয়।

নওগাঁর আত্রাইয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও নওগাঁ জেলা পরিষদের সদস্য চৌধুরী গোলাম মোস্তফা বাদল ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী ওমর ফারুক সুমনের নির্বাচন কর্মী। ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন একজনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে।

পঞ্চগড়-১ আসনে নৌকার কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাটের নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর, পোস্টার ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। তাছাড়া তার কর্মী-সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার দুপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থী আনোয়ার রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

শরীয়তপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মিছিলে নৌকার প্রার্থীর সমর্থকরা হামলা করে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ সময় ১০ জন আহত হয়েছেন। তাদের নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় নড়িয়া উপজেলার বাঁশতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নড়িয়া সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিতু মোল্লা জানান, তারা নড়িয়া উপজেলা শহরের দক্ষিণ মাথা থেকে মিছিল নিয়ে যাচ্ছিলেন। বাঁশতলা গেলে তাদের ওপর হামলা হয়। হামলাকারীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটায়।

খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!