জমজমাটভাবে শেষ হয়েছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) ক্রিকেটের প্লেয়ার্স ড্রাফট। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে হওয়া ড্রাফটে নিজেদের স্কোয়াড গুছিয়ে নিয়েছে অংশগ্রহণকারী দলগুলো। রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে দুপুর ১২টায় শুরু হয়েছিল ড্রাফট। প্লেয়ার ড্রাফট থেকে ৬টি ফ্রাঞ্চাইজি তাদের দল চূড়ান্ত করেছে।
ড্রাফট শুরুর আগে নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে যাওয়া ঢাকা ড্রাফটেও দেখিয়েছে চমক। অটো চয়েজ হিসেবে টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে আগেই নিয়েছিল তারা। ড্রাফট থেকে দলে ভিড়িয়েছে ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালকেও।
শুধু তাই নয়, দেশের ক্রিকেটের সফলতম অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাকেও দলে ভিড়িয়ে অভিজ্ঞতার মেলা বসিয়েছে ঢাকা। তৃতীয় ডাকে মাশরাফিকে নিয়েছে তারা। ড্রাফটে প্রথম ডাকের সুযোগ পেয়ে লিটন দাসকে দলে ভিড়িয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
তারকা ক্রিকেটারদের মধ্যে দল পাননি মোহাম্মদ আশরাফুল, নাসির হোসেনরা। তরুণ বাঁহাতি ওপেনার তানজিদ হাসান তামিমকেও দলে নেয়নি কেউ। তবে অবিক্রিত খেলোয়াড় তালিকা থেকে পরে নেওয়ার সুযোগ থাকছে সব দলের সামনে।
কার কেমন খরচ হলো-
এবারের আসরে ‘এ’ ক্যাটাগরির তিনজন ক্রিকেটারকে একসঙ্গে দলে নিয়েছে ঢাকা। অটো চয়েজ হিসেবে তারা নিয়েছিল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে। ড্রাফট থেকে নিলো তামিম ইকবাল এবং মাশরাফি বিন মর্তুজাকে।
‘এ’ ক্যাটাগরির ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক ৭০ লাখ টাকা করে। ঢাকার এই তিন ক্রিকেটারের পেছনেই ব্যয় করেছে ২ কোটি ১০ লাখ টাকা। সে হিসাবে এবারের বিপিএলের প্লেয়ার ড্রাফটে সবচেয়ে বেশি খরুচে দল হওয়ার কথা ছিল ঢাকার।
কিন্তু ড্রাফট শেষে দেখা গেলো সবচেয়ে বেশি খরুচে দল গঠন করেছে বরিশাল ফরচুন। সব মিলিয়ে তারা দল গঠন করতে খরচ করেছে ৪ কোটি ২৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা। বিদেশি ক্রিকেটার কিনতেই তাদের খরচ হয়েছে ১ কোটি ৪০ লাখ ২৫ হাজার টাকা। দেশি খেলোয়াড় কিনতে খরচ হয়েছে ২ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।
খরচের দিক থেকে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। তারা মোট ৪ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয় করেছে খেলোয়াড় কেনার জন্য। বিদেশি খেলোয়াড় কিনতে তারা খরচ করেছে ৮৫ লাখ টাকা। দেশি খেলোয়াড় কিনতে খরচ করেছে ৩ কোটি ৪১ লাখ টাকা।
ঢাকা রয়েছে তিন নম্বরে। তারা খরচ করেছে ৪ কোটি ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা। বিদেশি ক্রিকেটার কিনতে খরচ করেছে ৫৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা। দেশি ক্রিকেটার কিনতে খরচ করেছে ৩ কোটি ৫১ লাখ টাকা। দেশি ক্রিকেটারের পেছনেই সবচেয়ে বেশি ব্যয় করেছে তারা।
এরপর চার নম্বরে রয়েছে সিলেট সানরাইজার্স। তারা খরচ করেছে ৩ কোটি ৭৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা। বিদেশি কিনতে খরচ করেছে ১ কোটি ৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা। দেশি কিনতে খরচ করেছে ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা। চিটাগাং চ্যালেঞ্জার্স খরচ করেছে ৩ কোটি ৬ লাখ টাকা। বিদেশি কিনতে তারা খরচ করেছে ৬৮ লাখ টাকা এবং দেশি ক্রিকেটার কিনতে খরচ করেছে ২ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।
টাকা খরচের দিক থেকে সবচেয়ে কৃপণতার পরিচয় দিয়েছে খুলনা টাইগার্স। তারা মোট খরচ করেছে ২ কোটি ৮২ লাখ টাকা। বিদেশি ক্রিকেটার কিনতে তারা খরচ করেছে ৫১ লাখ টাকা এবং দেশি ক্রিকেটার কিনতে খরচ করেছে ২ কোটি ৩১ লাখ টাকা।
বিপিএলে ছয় দল সম্মিলিতভাবে খেলোয়াড় কিনতে ব্যয় করেছে ২২ কোটি ২৭ লাখ টাকা।
ড্রাফট শেষে যেমন হলো বিপিএলের ছয় দল
খুলনা টাইগার্স
দেশি
ড্রাফটের বাইরে থেকে – মুশফিকুর রহিম
ড্রাফট থেকে – শেখ মেহেদি হাসান, সৌম্য সরকার, কামরুল ইসলাম রাব্বি, ইয়াসির আলি রাব্বি, ফরহাদ রেজা, রনি তালুকদার, সৈয়দ খালেদ আহমেদ, জাকের আলি অনিক, নাবিল সামাদ।
বিদেশি
ড্রাফটের বাইরে থেকে – থিসারা পেরেরা, নবীন উল হক ও ভানুকা রাজাপাকশে
ড্রাফট থেকে – সেকুগে প্রসন্না (শ্রীলঙ্কা), সিকান্দার রাজা (জিম্বাবুয়ে)
ফরচুন বরিশাল
দেশি
ড্রাফটের বাইরে থেকে – সাকিব আল হাসান,
ড্রাফট থেকে – কাজী নুরুল হাসান সোহান, নাজমুল হোসেন শান্ত, মেহেদি হাসান রানা, ফজলে মাহমুদ রাব্বি, তৌহিদ হৃদয়, জিয়াউর রহমান, শফিকুল ইসলাম, সৈকত আলী, নাঈম হাসান, তাইজুল ইসলাম, সালমান হোসেন ইমন ও ইরফান শুক্কুর।
বিদেশি
ড্রাফটের বাইরে থেকে – ক্রিস গেইল, মুজিব উর রহমান ও দানুশকা গুনাথিলাকা।
ড্রাফট থেকে – ওবেদ ম্যাকয় (ওয়েস্ট ইন্ডিজ), আলঝারি জোসেফ (ওয়েস্ট ইন্ডিজ), নিরোশান ডিকভেলা (শ্রীলঙ্কা)।
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স
দেশি
ড্রাফটের বাইরে থেকে – নাসুম আহমেদ
ড্রাফট থেকে – শরিফুল ইসলাম, আফিফ হোসেন ধ্রুব, শামীম পাটোয়ারী, মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ, রেজাউর রহমান রাজা, সাব্বির রহমান, মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী, মেহেদী হাসান মিরাজ, আকবর আলি এবং নাঈম ইসলাম।
বিদেশি
ড্রাফটের বাইরে থেকে – বেনি হাওয়েল ও কেন্নার লুইস
ড্রাফট থেকে – চ্যাডউইক ওয়াল্টন (ওয়েস্ট ইন্ডিজ), রায়াদ এমরিট (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স
দেশি
ড্রাফটের বাইরে থেকে- মোস্তাফিজুর রহমান
ড্রাফট থেকে – লিটন দাস, শহিদুল ইসলাম, ইমরুল কায়েস, তানভীর ইসলাম,আরিফুল হক, নাহিদুল ইসলাম, মাহমুদুল হাসান জয়, সুমন খান, মুমিনুল হক, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, পারভেজ হোসেন ইমন, আবু হায়দার রনি ও মেহেদী হাসান।
বিদেশি
ড্রাফটের বাইরে থেকে – মঈন আলি, ফাফ ডু প্লেসি ও সুনিল নারিন
ড্রাফট থেকে – কুশল মেন্ডিস (শ্রীলঙ্কা), ওশান থমাস (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)
ঢাকা
দেশি
ড্রাফটের বাইরে থেকে – মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ
ড্রাফট থেকে – তামিম ইকবাল, রুবেল হোসেন, মাশরাফি বিন মর্তুজা, শুভাগত হোম চৌধুরী, নাইম শেখ, আরাফাত সানি, ইমরান উজ জামান, শফিউল ইসলাম, জহুরুল ইসলাম, শামসুর রহমান এবং এবাদত হোসেন।
বিদেশি
ড্রাফটের বাইরে থেকে – ইসুরু উদানা, কাইস আহমেদ ও নাজিবউল্লাহ জাদরান
ড্রাফট থেকে – মোহাম্মদ শেহজাদ (আফগানিস্তান), ফজলহক ফারুকি (আফগানিস্তান)।
সিলেট সানরাইজার্স
দেশি
ড্রাফটের বাইরে থেকে – তাসকিন আহমেদ
ড্রাফট থেকে – মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মোহাম্মদ মিঠুন, আলআমিন হোসেন, নাজমুল ইসলাম অপু, এনামুল হক বিজয়, সোহাগ গাজী, অলক কাপালি, মুক্তার আলি, মিজানুর রহমান, নাদিফ চৌধুরী, জুবায়ের হোসেন লিখন এবং শফিউল হায়াত হৃদয়।
বিদেশি
ড্রাফটের বাইরে থেকে – দীনেশ চান্দিমাল, কেসরিক উইলিয়ামস ও কলিন ইনগ্রাম
ড্রাফট থেকে – রবি বোপারা (ইংল্যান্ড), অ্যাঞ্জেলো পেরেরা (শ্রীলঙ্কা), সিরাজ আহমেদ (আরব আমিরাত)।