দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি পদে নির্বাচনের জন্য জমা হওয়া মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে সবার মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ফলে ৫০টি সংরক্ষিত মহিলা আসনের ৫০ প্রার্থীই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার পথে রয়েছেন।
সংরক্ষিত মহিলা আসনের নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও ইসির যুগ্ম-সচিব মনিরুজ্জামান তালুকদার সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করেন। পরে আওয়ামী লীগ ও তাদের জোট থেকে ৪৮টি এবং জাতীয় পার্টি থেকে দুটিসহ মোট ৫০টি মনোনয়নপত্র বৈধ বলে ঘোষণা করেন তিনি।
মনিরুজ্জামান তালুকদার বলেন, মোট ৫০টি মনোনয়নপত্র পেয়েছি। সবগুলো যাচাই-বাছাই করেছি। ৫০টি মনোনয়নপত্র বৈধ পেয়েছি। কোনো মনোনয়নপত্রের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আসেনি। সুতরাং সকল প্রার্থীকে বৈধ প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করছি।
৫০টি সংরক্ষিত মহিলা আসনে আগামী ১৪ মার্চ ভোটের দিন রেখে তপশিল দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তপশিল অনুযায়ী, ইসির যাচাই-বাছাইয়ের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ আছে আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। আপিল নিষ্পত্তির দিন ২৪ ফেব্রুয়ারি। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৫ ফেব্রুয়ারি এবং প্রতীক বরাদ্দ ২৭ ফেব্রুয়ারি।
তপশিলে ১৪ মার্চ ভোটের দিন রাখা হলেও কোনো আসনেই একাধিক প্রার্থী না থাকায় ভোটের প্রয়োজন পড়বে না। কোনো প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার না করলে ২৫ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময়সীমা পার হওয়ার দিনই ৫০ প্রার্থীকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে।
ইসির যুগ্মসচিব মনিরুজ্জামান বলেন, কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রতীক বরাদ্দের প্রয়োজন হবে না। যেহেতু প্রতিদ্বন্দ্বী নেই, সেজন্য বৈধ প্রার্থীদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করার জন্য কার্যক্রম গ্রহণ করব।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে জয় পাওয়া ২২৫ এমপির হিসেবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তার জোট ১৪ দল আনুপাতিক হারে পেয়েছে ৩৮টি সংরক্ষিত মহিলা আসন। এ ছাড়া ৬২ স্বতন্ত্র এমপির সমর্থন পাওয়ায় তাদের ভাগের ১০ আসনেও আওয়ামী লীগ প্রার্থী দিয়েছে। সে হিসাবে আওয়ামী লীগ এবার পাচ্ছে ৪৮টি সংরক্ষিত আসন। বাকি দুটি সংরক্ষিত আসন পাচ্ছে সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠকে সংরক্ষিত মহিলা আসনে দলীয় ৪৮ জন প্রার্থীর মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। অন্যদিকে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠকে দলটির দু’জন সংরক্ষিত মহিলা এমপির মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হয়।
সংরক্ষিত আসনে আওয়ামী লীগের ৪৮ প্রার্থী হচ্ছেন- রেজিয়া ইসলাম, দ্রৌপদী দেবী আগরওয়ালা, আশিকা সুলতানা, রোকেয়া সুলতানা, কোহেলী কুদ্দুস মুক্তি, জারা জাবীন মাহবুব, রুনু রেজা, ফরিদা আক্তার বানু, ফারজানা সুমি, খালেদা বাহার, নাজনীন নাহার রশীদ, ফরিদা ইয়াসমিন, উম্মি ফারজানা ছাত্তার, নাদিয়া বিনতে আমিন, মাহফুজা সুলতানা, পারভীন জামান কল্পনা, আরমা দত্ত, লায়লা পারভীন, মন্নুজান সুফিয়ান, বেদৌরা আহমেদ সালাম, শবনম জাহান শিলা, পারুল আক্তার, সাবেরা বেগম, ড. শাম্মী আহমেদ, নাহিদ ইজাহার খান, ঝর্না হাসান, ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, সাহিদা তারেখ দিপ্তী, অনিমা মুক্তি গোমেজ, শেখ আনার কলি পুতুল, মাসুদা সিদ্দিক রোজী, অ্যাডভোকেট তারানা হালিম, শামসুন নাহার চাঁপা, মেহের আফরোজ চুমকি, অপরাজিতা হক, হাছিনা বারী চৌধুরী, নাজমা আকতার, রুমা চক্রবর্তী, ফরিদুন্নাহার লাইলী, আশ্রাফুন নেছা, কানন আরা বেগম, শামীমা হারুন, ফরিদা খানম, দিলোয়ারা ইউসুফ, ওয়াসিকা আয়শা খান. জ্বরতী তঞ্চঙ্গ্যা, অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম এবং নাসিমা জামান।
এ ছাড়া জাতীয় পার্টির ২ প্রার্থী হচ্ছেন- সালমা ইসলাম ও নুরুন নাহার।
খুলনা গেজেট/কেডি