লোডশেডিংয়ের কারণে রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে সাতক্ষীরাবাসীর। গত তিনদিন যাবত রাতে ঘুমাতে পারছে না সাতক্ষীরার মানুষ। একই সাথে বিপাকে পড়েছে এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা। প্রচন্ড গরমে বিদ্যুতের ভেলকিতে পড়াশোনায় মন বসাতে পারছে না তারা।
অন্যদিকে লোডশেডিংয়ের কারণে জেলার বিসিক শিল্পনগরীতে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এ শিল্পনগরীর অধিকাংশ কারখানায় উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
সাতক্ষীরা শহরের রাজার বাগানের আব্দুল কাদের জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১০টা থেকে বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত আট বার বিদ্যুৎ গেছে। প্রতিবারই ৩০ মিনিট থেকে ৪৫ মিনিট পরে বিদ্যুৎ এসেছে। গরমে সারারাত কেউ ঘুমাতে পারিনি। বিদ্যুৎ না থাকায় গরমে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
শহরের কাটিয়া কলেজরোড এলাকার বাসিন্দা মো. আবু সাইদ জানান, সাতক্ষীরা জেলাতে তীব্র তাপদাহ চলছে। তার উপর ভয়াবহ লোডশেডিং শুরু হওয়ায় সাধারণ মানুষ নাকাল হয়ে পড়েছেন। বিশেষ করে শিশু এবং বয়স্ক মানুষজন অসুস্থ হয়ে পড়ছে। তাছাড়া আগামী ৩০ জুন থেকে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। এখন যদি শিক্ষার্থীরা ঠিকমত পড়াশুনা করতে না পারে তাহলে ক্ষতির সম্মুখিন হতে হবে। তিনি দ্রুত বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভবিক করার দাবি জানান।
এইচএসসি পরীক্ষার্থী মুনজিতপুর এলাকার ফাহাদ রাজ্জাক জানান, আগামী ৩০ জুন থেকে তাদের এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। শেষ মুহুর্ত্বের প্রস্তুতি নিয়ে আমরা শির্ক্ষীরা সবাই ব্যস্ত সময় পার করছি। কিন্তু বিদ্যুতের অব্যহত লোডশেডিংয়ের কারণে বইতে ঠিকমত নজর দিতে পারছি না। সন্ধ্যা হলেই বিদ্যুৎ চলে যায়। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় অন্ধকারে বসে থাকতে হয়। এভাবে রাতে তিন/চার বার করে বিদ্যুৎ চলে যায়। গত কয়েদিন ধরে এঅবস্থা চলছে। ফলে আমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতি ব্যাহত হচ্ছে। পরীক্ষা পর্যন্ত বিদ্যুতের এই লাডশেডিং অব্যহত থাকলে ক্ষতির সম্মুখিন হবো আমরা সবাই।
সাতক্ষীরা বিসিক শিল্পনগরীর উপ-ব্যবস্থাপক গৌরব দাশ বলেন, বিসিকে উৎপাদনশীল ৪২টি কারখানা রয়েছে। গত তিন দিন যাবত ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণে এসব শিল্প কারখানাগুলোতে মারাত্মকভাবে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। তিনি দ্রুত বিদ্যুৎ স্বাভাবিক করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান।
সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুত সমিতির এজিএম মঞ্জুরুল আকতার জানান, জেলায় তাদের ৬ লাখ ২৪ হাজার গ্রাহকের বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ১১০ মেগাওয়াট। সেখানে পাওয়া যাচ্ছে ৬৮ মেগওয়াট। ঘাটতি থাকছে ৪২ মেগাওয়াট। ফলে গ্রাহকের চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান তিনি।
সাতক্ষীরা ওজোপাডিকোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুনুর রহমান জানান, তার অধীনে সাতক্ষীরাতে ৫৫ হাজার গ্রাহকের বিদ্যুৎ চাহিদা ১৯ মেগাওয়াট। সেখানে পাওয়া যাচ্ছে ১৫ মেগওয়াট। এতে করে ঘাটটি থাকছে ৪ মেগাওয়াট। শহরের ১১টি ফিডার রয়েছে। যা থেকে পর্যায়ক্রমে লোডশেডিং ওঠানামা করা হয়। তবে কবে নাগাত বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি তিনি।
খুলনা গেজেট/এএজে