মহাকালের গর্ভে হারিয়ে গেল আরও একটি বছর। বর্ষ পরিক্রমায় যুক্ত হলো আরেকটি পালক। নতুন একটি বর্ষে পদার্পণ করল বিশ্ব। স্বাগত খ্রিস্টীয় নববর্ষ ২০২৪। পুরনো বছরটি পেছনে ফেলে সম্মুখপানে এগিয়ে যাওয়ার দুরন্ত আহ্বানে মানুষ স্বাগত জানায় আগত ভবিষ্যৎকে। বিদায়ী বছরের ব্যর্থতাকে সরিয়ে রেখে নতুন বছরে নতুনভাবে শুরু হয় পথচলা। পুরনো বছরের সংশয়, সংকট, উদ্বেগ কাটিয়ে উঠে নতুন ভাবনা নতুন আশায় নতুন করে দিনযাপনের শুরু আজ থেকে।
স্বাধীনতার ৫২ বছর পূর্ণ করে বাংলাদেশও পা ফেলল ৫৩ বর্ষে। খ্রিস্টীয় নতুন বছরের প্রথম প্রভাতে অগণিত পাঠক, লেখক, এজেন্ট, বিজ্ঞাপনদাতা ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন। নতুন বছর সবার জীবনে শুভ হয়ে দেখা দেবে- এটাই কাম্য।
বাঙালি জীবনে গ্রেগরিয়ান নববর্ষ পালনের রেওয়াজ ব্রিটিশ শাসনামল থেকে অনুসৃত হয়ে আসছে। সম্প্রতি বেড়েছে এর পরিসর। ইংরেজি নববর্ষ হিসেবে বাঙালির কাছে পরিচিত দিনটি পালনের ধরন সারা পৃথিবীতে প্রায় একই রকম। তবে পশ্চিমা বিশ্বে এর আনন্দটা অনেক বেশি। পশ্চিমাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাঙালিও মেতে ওঠে নতুন আনন্দে। বহু মানুষ এদিন শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। শুভেচ্ছা কার্ড, এসএমএস, ফেসবুক, টুইটার এবং ই-মেইলে হাজার হাজার শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন বার্তা ছড়িয়ে পড়ে। পুরনো বছর যেমনই কাটুক, নতুন বছর যেন ভালো কাটে সেই প্রত্যাশা থাকে সবার।
নতুন বছরে, নতুন করে আশায় বুক বেঁধেছে বাংলাদেশ। নতুন স্বপ্ন দেখে শান্তি, স্বস্তি, কল্যাণ ও সমৃদ্ধির। ২০২৪-এর ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনের পর গঠিত হবে নতুন সরকার। বিএনপিসহ কয়েকটি দলের ভোট প্রত্যাখ্যান ও সংহিসতা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচন হবে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য এটাও প্রত্যাশা। নতুন সরকারের কাছে বাংলাদেশ প্রত্যাশা করেÑ দুর্নীতিমুক্ত, জঙ্গি, সন্ত্রাসবাদ ও মাদকমুক্ত সমাজ। ভয়াবহ হন্তারক ব্যাধি করোনা ও ডেঙ্গু থেকে নিরাপদ থাকবে দেশ, এটিও প্রত্যাশা। বিনাশ হবে অগণতান্ত্রিক অপশক্তি, জঙ্গিবাদ, ধর্মান্ধতা, সাম্প্রদায়িকতা ও অপরাজনীতি। দেশবাসী প্রত্যাশা করে, সম্প্রীতি ও সমঝোতার সংস্কৃতি রচনায় রাজনৈতিক দলগুলো হবে অগ্রসর। নিম্নমধ্য আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার ক্ষেত্রে সম্মিলিতভাবে সবাই কাজ করবে একযোগে। ধ্বংসাত্মক রাজনীতি যেন আর মাথাচাড়া দিতে না পারে, সে বিষয়ে সজাগ থাকবে সকলেই। জীবনের নিরাপত্তা, সহনীয় দ্রব্যমূল্য এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে আরও এগিয়ে নিতে সবাইকে নিয়ে কাজ শুরু হোক- এটাই নববর্ষের প্রত্যাশা। দেশকে শান্তি ও সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যেতে আইনের শাসনের ভিত হোক আরও মজবুত। বাড়ুক মানুষের গড় আয়ু ও আয়। স্বাধীনতার মূল্যবোধ থাকুক অক্ষুণ্ণ ও অটুট। বিনাশ ঘটুক সাম্প্রদায়িক অপশক্তির। অবসান হোক রাশিয়া-ইউক্রেন এবং ইসরাইল-হামাস যুদ্ধের। বিশ্বে বিরাজ করুক শান্তি ও কল্যাণ।
সারাদেশের মানুষ সমবেত আনন্দ আয়োজনে উৎফুল্ল মনে নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে স্বাগত জানায় নববর্ষকে। প্রার্থনা করে সব বাধাবিঘ্ন কেটে গিয়ে দেশে ও বিশ্বে উদিত হবে নতুন সূর্য। তারই আলোয় রঙিন হয়ে উঠুক সব।
খুলনা গেজেট/এমএম