বিজিবিকে আরো শক্তিশালী করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া দেশ ও জাতির প্রতি সেবার মনোভাব নিয়ে কাজ করতে বিজিবি সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। আজ শনিবার ৯৫তম রিক্রুট ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে ইপিআরের (বর্তমানে বিজিবি) প্রায় ১২ হাজার সদস্য অংশগ্রহণ করেন। এবং সেখানে ৮১৭ জন সদস্য শহীদ হন। সবচেয়ে বেশি খেতাবপ্রাপ্ত বোধ হয় এখানেই। তাঁদের আত্মত্যাগ শ্রদ্ধার সঙ্গে আমি স্মরণ করছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বিজয় অর্জন করার পর একটা সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত দেশ, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ, যে দেশটি দীর্ঘদিন শোষিত, বঞ্চিত, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ওই এক বছর ক্ষেতে ফসল হয়নি, গোলায় ধান ছিল না, কোনো রিজার্ভ মানি ছিল না, কারেন্সি নোট ছিল না, রাস্তাঘাট, পুল, ব্রিজ একেবারে বিধ্বস্ত। সেই অবস্থায়ও জাতির পিতা যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার কাজ শুরু করেন। তখনই তিনি তখনকার নাম দেওয়া বিডিআরকে সুন্দরভাবে নতুন করে ঢেলে সাজানোর কাজ শুরু করেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। আমি আর আমার ছোটো বোন বিদেশে ছিলাম বলে বেঁচে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের পরিবারের সব সদস্যকেই হত্যা করা হয়েছিল। একইসঙ্গে আমার মেজ ফুপুর বাড়ি, সেজ ফুপুর বাড়ি, ছোট ফুপুর বাড়ি—প্রত্যেকটি বাড়িতে আক্রমণ করা হয় এবং পরিবারের সদস্যদের হত্যা করা হয়। এরপর জাতীয় চার নেতাকে কেন্দ্রীয় কারাগারে হত্যা করা হয়। এরপরই বাংলাদশ আদর্শচ্যুত হয়।’
‘২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠানকে আধুনিক করে গড়ে তোলা, শক্তিশালী করে গড়ে তোলার কাজ আমরা শুরু করি।’ যোগ করেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘এ ছাড়া আমাদের স্থল সীমানা চুক্তি জাতির পিতা করে গিয়েছিলেন। কিন্তু ৭৫-এর পর যে সরকারগুলো ক্ষমতায় এসেছিল, জিয়াউর রহমান, এরশাদ বা খালেদা জিয়া কেউ কিন্তু আমাদের বর্ডার গার্ডের সঙ্গে ভারতের সমস্যাটা মেটানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। আমি সরকারে আসার পর এ ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করি এবং সেটা আমরা সমাধান করি। তাছাড়া আমাদের বর্ডার গার্ডের যেসব এলাকা উন্মুক্ত ছিল, প্রত্যেকটাতে আমরা বর্ডার পোস্ট নির্মাণ করে দিচ্ছি। বিজিবিকেও শক্তিশালী করা এবং প্রতিটি জায়গায় তাদের যে অবস্থানটা, সেটা যেন নিশ্চিত হয়, তাঁর ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি।’
খুলনা গেজেট /এমএম