খুলনা, বাংলাদেশ | ২২ আশ্বিন, ১৪৩১ | ৭ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  সাবেক পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব আমিনুল ইসলাম খান গ্রেপ্তার
  দেশে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১২২৫
  পোল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত হিসেবে খোরশেদ আলমের নিয়োগ বা‌তিল : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
  সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রহমানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

বিক্ষোভে উত্তাল : টঙ্গী ও আশুলিয়ার ৪৬ পোশাক কারখানায় ছুটি

গেজেট ডেস্ক

দিনভর শ্রমিক বিক্ষোভে উত্তাল গাজীপুরের টঙ্গী ও সাভারের আশুলিয়ার পোশাক কারখানা। বিভিন্ন দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ-ভাঙচুরের ঘটনায় টঙ্গী ও আশুলিয়াতে অন্তত ৪৬টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।

সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে কারখানার শ্রমিক ও চাকরিপ্রত্যাশীদের ওই কর্মসূচি শুরু করেন। এ অবস্থায় আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকার অন্তত ৩৫টি কারখানা ছুটি ঘোষণা করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। অপর দিকে, গাজীপুরের টঙ্গীতে বিক্ষোভ ও ১১টি কারখানা ভাঙচুর করেছেন চাকরিচ্যুত শ্রমিকেরা। এ সময় কারখানাগুলোতে ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।

সোমবার সকাল থেকে শ্রমিকরা আশুলিয়ার ডিইপিজেড এবং বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কের বিভিন্ন কারখানার সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করে শ্রমিকরা। এক পর্যায়ে আন্দোলনরত শ্রমিকরা নবীনগর-চন্দ্রা ও বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে ব্যারিকেড তৈরি করে অবরোধ করেন ও বিভিন্ন কারখানা লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। এতে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক দুটিতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়, উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এই অঞ্চলে। এ অবস্থায় আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকার অন্তত ৩৫টি কারখানা ছুটি ঘোষণা করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

শ্রমিকদের বিক্ষোভের এক পর্যায়ে শিল্প পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শ্রমিকদের বুঝিয়ে বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কের ব্যারিকেড তুলে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করে।

আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম বলেন, আজকের শ্রমিকরা আন্দোলন করছে চাকরির দাবিতে। এছাড়াও পোশাক কারখানায় নারী-পুরুষের সমানুপাতিক হারে নিয়োগের দাবিসহ আরও কয়েকটি দাবি রয়েছে। আমরা সেনাবাহিনীর সদস্যদের সহযোগিতায় বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কটি থেকে অবরোধ মুক্ত করতে পারলেও এখনো ব্যারিকেড রয়েছে ডিইপিজেড এর সামনে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এখন পর্যন্ত বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কের দুই পাশে অবস্থিত কারখানাগুলোর মধ্যে অন্তত ৩০ থেকে ৩৫টি কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। সমস্যা সমাধানে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, যোগ করেন এই কর্মকর্তা।

অপর দিকে, সোমবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে গাজীপুরের টঙ্গীর বিসিক এলাকায় বিক্ষোভ শুরু করে কয়েক শ শ্রমিক। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা পোশাক কারখানাগুলোতে ভাঙচুর চালায়। এ অবস্থায় টঙ্গীর বিভিন্ন এলাকার অন্তত ১১টি কারখানা ছুটি ঘোষণা করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন সময়ে ওইসব কারখানা থেকে যারা চাকরিচ্যুত হয়েছিলেন তারা এ ভাঙচুরে অংশ নেন বলে অভিযোগ শ্রমিক ও কারখানার কর্মকর্তাদের।

জানা গেছে, সোমবার সকালে নিজ নিজ কারখানায় কাজে যোগ দেন টঙ্গীর বিসিক এলাকার সব পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চাকরিচ্যুত তিন শতাধিক শ্রমিক কয়েক ধাপে ১১টি পোশাক কারখানার গেটে অবস্থান নেয়। কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের তাদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দিতে আহ্বান জানায় তারা। এ সময় কারখানায় কর্মরত শ্রমিকেরা তাদের ডাকে সাড়া দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এতে চাকরিচ্যুত শ্রমিকেরা ওই ১১টি কারখানায় ভাঙচুর চালায়। নিজ কারখানায় ভাঙচুর ঠেকাতে কয়েকটি কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে ভাঙচুর এড়াতে ওই কারখানাগুলোতে ছুটি ঘোষণা করে কারখানা কর্তৃপক্ষ।

এ সময় চাকরিচ্যুত অন্তত দুজন শ্রমিক আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। আহতদের মধ্যে বাদশা মিয়ার (২১) পরিচয় পাওয়া গেলেও অন্যজনে পরিচয় পাওয়া যায়নি। তিনি শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

গাজীপুর শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মোশারফ হোসেন বলেন, চাকরিতে বৈষম্য নিরসন ও পুরুষ শ্রমিকদের নিয়োগে অগ্রাধিকারের দাবিতে কয়েকশ চাকরিচ্যুত শ্রমিক কারখানা ভাঙচুর করেছে। একপর্যায়ে শ্রমিকরা টঙ্গী বিসিকের একটি সড়কে অবস্থান নিলে তাদেরকে বুঝিয়ে সরিয়ে দেয়া হয়। তবে ফের ভাঙচুর এড়াতে কর্তৃপক্ষ ১১টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করেছে বলে জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, তৈরি পোশাক শিল্পের নিরাপত্তায় সেনাবাহিনী, পুলিশ ও শিল্প পুলিশ সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) রাতেই ঢাকার সাভার, আশুলিয়া ও গাজীপুরে যৌথ অভিযান শুরু করবে বলে জানিয়েছেন বিজিএমইএ সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম। বিকেলে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো.জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর শীর্ষ নেতারা। বৈঠকে অভিযান শুরুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!