খুলনা, বাংলাদেশ | ২১ কার্তিক, ১৪৩১ | ৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  গত ২৪ ঘন্টায় ডেঙ্গুতে ৬ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ১৩৭০
  এলপি গ্যাসের দাম কমলো ১ টাকা
  ড. ইউনূসকে প্রধান করে ১০ সদস্যের পরিকল্পনা কমিশন গঠন; প্রজ্ঞাপন জারি

বিএনপি মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনকেই সংস্কার মনে করে: তারেক রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

প্রশাসনে থাকা স্বৈরাচারের প্রেতাত্মারা এখনো ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও এখনো ক্রান্তিকাল চলছে।দেশে সংস্কার প্রয়োজন এবং যে সংস্কার মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে, সেটাকেই সংস্কার মনে করে বিএনপি।

মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বিকালে যশোরে বিএনপিনেতা মরহুম তরিকুল ইসলামের স্মরণসভায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আরো বলেন, বিএনপির সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেকমন্ত্রী ক্ষণজন্মা তরিকুল ইসলাম সারাজীবন রাজনীতি করেছেন দেশ ও মানুষের কল্যাণে। আর এ কারণে তাকে জীবনে চরম মূল্যে দিতে হয়েছে। বারবার মামলা-হামলার শিকার হতে হয়েছে। যেতে হয়েছে কারাগারে। তারপরও তিনি আদর্শের প্রশ্নে কারও কাছে মাথা নত করেননি। দলের দুঃসময়ে তার অবদান ভুলবার না।

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য ও সাবেকমন্ত্রী দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উন্নয়নের কারিগর খ্যাত তরিকুল ইসলামের স্মরণ সভায় গভীর শ্রদ্ধার সাথে তারেক রহমান এসব কথা বলেন।

প্রবীণ রাজনীতিক তরিকুল ইসলামের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার বিকাল তিনটায় টাউন হল মাঠে এ স্মরণসভার আয়োজন করে জেলা বিএনপি। সভায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে লন্ডন থেকে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

সাবেকমন্ত্রী তরিকুল ইসলামকে স্মরণ করে তিনি বলেন, বিএনপির অভিভাবক হিসেবে একদিন তরিকুল ইসলাম আমাকে বলেছিলেন, তারেক নিজেকে শক্ত রাখো, সব ঠিক হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ। কথাটা আমাকে অনুপ্রাণিত করেছিলো। সেই কথাটা আজও আমাকে অনুপ্রেরণা জোগায়।

তারেক রহমান বলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পলায়নের মাধ্যমে যে বিপ্লব হয়েছে, তা ইতিহাস হয়ে থাকবে। দলের নেতাকর্মীরা যারা দীঘদিন নিপীড়নের স্বীকার হয়েছেন, তাদের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, বিপ্লবের পর আজ অনেকেই দেশ সংস্কারের কথা বলছে। কিন্তু এ সংস্কারের প্রথম দাবি তুলেছিলো বিএনপি। আর এ দাবির পক্ষে কাজ করে গেছেন তরিকুল ইসলামের মত বর্ষিযাণ নেতারা। তাদের ঋণ শোধ হবার না। বিএনপির তাদেরকে আজীবন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে যাবে।

জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকনের সভাপতিত্বে স্মরণ সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। সভা সঞ্চালনা করেন জেলা বিএনপির সদস্য মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু ও কাজী আজম। জেলা বিএনপির আয়োজনে এ স্মরণ সভায় দলমত নির্বিশেষ সকল শ্রেণি পেশার মানুষ অংশ নেন। সকলের অংশ গ্রহণে টাউনহল মাঠ জনসমুদ্রে রুপ নেয়।

অনুষ্ঠান শেষে তরিকুল ইসলাম পুত্র বিএনপির কেন্দ্রিয় নেতা অনিন্দ্য ইসলাম অমিত সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বাবার রুহের মাগফেরাত কামনায় সকলের প্রতি দোয়া প্রার্থনা করেন।

স্মরণ সভায় জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবুর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু। বক্তৃতা করেন জেলা বিএনপির সদস্য ও যশোর বারের সাবেক সভাপতি অ্যাড. নজরুল ইসলাম, ডাক্তার হারুন অর রশীদ, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, অধ্যাপক আয়ুব হোসেন, তন্ময় সাহা, এজেড এম সালেক, মোশারফ হোসেন, মাওলানা বেলায়েত হোসেন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাজিদুর রহমান সাগর প্রমুখ।

স্মরণ সভায় উপস্থিত ছিলেন মরহুম তরিকুল ইসলামের সহধর্মিণী ও জেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম, সন্তান শান্তুনু ইসলাম সুমিত, বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান খান, গোলাম রেজা দুলু, সাবেক পৌর মেয়র মারুফুল ইসলাম মারুফ, একেএম শরফুদ্দৌলাহ ছটলু, মাহাতাব নাসির পলাশ, মাওলানা আব্দুল মান্নান, মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু, অ্যাড. জাফর সাদিক, মানবাধিকার সংগঠন রাইটস যশোরে নির্বাহী পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক, যুবদলের সভাপতি এম তমাল আহমেদ, সেক্রেটারি আনছারুল হক রানা, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম, সেক্রেটারি মোস্তফা আমির ফয়সাল প্রমুখ। এছাড়া এই স্মরণ সভায় খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এদিন বর্ষীয়ান রাজনীতিক তরিকুল ইসলামের স্মরণসভায় নেতাকর্মী-সমর্থকদের ঢল নামে। স্মরণসভা রূপ নেয় সমাবেশে। টাউন হল মাঠ ছাড়িয়ে জনসমাগম ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের রাস্তায়।

আন্দোলন-সংগ্রামে তরিকুল ইসলামের ভূমিকার প্রশংসা করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। শুধু তাই না, ওই সরকার মানুষের সব অধিকার ডাকাতি করেছিল।

তিনি বলেন, স্বৈরাচারের সন্ত্রাসী শাসন শেষ হলেও সেই শাসনের অবশিষ্ট প্রেতাত্মারা এখনো রাজনীতির ক্রান্তিকালে নিজেদের অবস্থান ধরে রেখেছে। আমাদের লক্ষ্য সেই অধিকার পুনরুদ্ধার করা, যা এই সরকার মানুষের কাছ থেকে ছিনতাই করেছে।

যতদিন মানুষের অধিকার ফিরিয়ে না দেওয়া যায়, ততদিন এই সংস্কারের পথ চলতে হবে বলেও উল্লেখ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!