ক্রমবর্ধমান বায়ুদূষণ রোধে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে শ্বাস নেওয়া অত্যন্ত কষ্টকর হয়ে ওঠায় এক সপ্তাহের জন্য ‘দূষণ লকডাউন’ জারি করা হয়েছে। শনিবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এই লকডাউন জারির ঘোষণা দিয়েছেন বলে দেশটির সংবাদসংস্থা এএনআইর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, দূষণ লকডাউন চলাকালীন আগামী সোমবার থেকে পরবর্তী এক সপ্তাহের জন্য দিল্লির সব স্কুল বন্ধ থাকবে। তবে এই সময় শিক্ষার্থীরা স্বশরীরে স্কুলে হাজির হওয়ার পরিবর্তে অনলাইনে ক্লাস করতে পারবেন।
মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছেন, দিল্লির সব স্কুলের ক্লাস অনলাইনে শুরু হবে। শহরের সব নির্মাকাজ বন্ধ থাকবে এবং সরকারি সব অফিসের কার্যক্রম কর্মীরা বাসা থেকে সম্পন্ন করবেন।
বিষাক্ত বাতাসে দিল্লির আকাশ পুরোপুরি ভারী হয়ে উঠেছে। দিনের বেলাতেও দিল্লিতে নেমে এসেছে অন্ধকার। শিক্ষার্থীদের বিষাক্ত বাতাস থেকে বাঁচাতে দিল্লির সরকার দূষণ লকডাউন জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
দিল্লির বায়ুদূষণ রোধে সরকারের দীর্ঘমেয়াদী জরুরি প্রক্রিয়া দরকার বলে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানানোর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কেজরিওয়াল সরকার চার-স্তরের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনার ঘোষণা দিয়েছেন।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে দিল্লির এই মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘আগামী সোমবার থেকে এক সপ্তাহের জন্য স্কুলে শিক্ষার্থীদের শারীরিক উপস্থিতি বন্ধ থাকবে; যাতে শিশুদের দূষিত বাতাসে শ্বাস নিতে না হয়। এছাড়া ১৪ থেকে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত নির্মাণ কার্যক্রমের অনুমতি দেওয়া হবে না।’
তিনি বলেন, সরকারি সব অফিস আগামী এক সপ্তাহের জন্য শতভাগ কাজ বাসায় থেকে করবে। বেসরকারী অফিসগুলোকে যতটা সম্ভব বাসা থেকে কাজের বিকল্পে চলে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হবে।
গুরুগাঁও, নয়ডা, গাজিয়াবাদসহ দিল্লি এবং এর আশপাশের অঞ্চলে গত সাত দিনের বেশি সময় ধরে মারাত্মক দূষিত বায়ুর চাদরে ঢেকে গেছে। গত সপ্তাহে দেশটিতে দীপাবলি উদযাপনের পর বায়ু দূষণ ব্যাপক আকার ধারণ করে। দিল্লি, হরিয়ানা এবং উত্তরপ্রদেশ সরকারের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে দীপাবলির সময় হাজার হাজার বাজি ফুটানো হয়। যে কারণে এসব অঞ্চলের বায়ুর মান ভয়াবহভাবে নিচে নেমে যায়।
দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের তথ্য বলছে, শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে দিল্লিতে বায়ুর মান সূচক (একিউআই) ৪২৭ এ পৌঁছেছে। একিউআইয়ের সূচক অনুযায়ী, বায়ুর মান ৪০০’র ওপরে চলে গেলে সেটিকে ‘গুরুতর’ অথবা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে মনে করা হয়।
এই স্তরে বাতাসে ক্ষতিকর পিএম ২.৫ কণার উচ্চ ঘনত্ব থাকে এবং এসব কণা ফুসফুসের ক্যান্সারের মতো কার্ডিওভাসকুলার এবং শ্বাসযন্ত্রের রোগের কারণ হতে পারে। সূত্র : এএনআই, এনডিটিভি।
খুলনা গেজেট/এনএম