খুলনা, বাংলাদেশ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  গাজীপুরের শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে ৩ শিক্ষার্থী নিহত
  ঝিনাইদহে ২ ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ট্রাক চালকের মৃত্যু

বাসাবাড়ি, হোটেল-রেস্টুরেন্টে অগ্নি নিরাপত্তায় নিজ উদ্যোগে যে ব্যবস্থা নেয়া যায়

গেজেট ডেস্ক

বাসাবাড়ি,অফিস, হোটেল-রেস্টুরেন্টে অগ্নি নিরাপত্তার সঠিক সরঞ্জাম থাকলে, সেগুলো একটি ছোট আগুনের শিখাকে বড় আগুনে পরিণত হওয়া থেকে রোধ করতে পারে। তাই আপনার বাড়িতে বা অফিসে অগ্নি নিরাপত্তা বিষয়ক যে সব সরঞ্জাম রাখা জরুরি, সেগুলোর দিকে নিজ উদ্যোগে আমাদের সকলের নজর দেয়া উচিত

স্মোক ডিটেক্টর

স্মোক ডিটেক্টর হলো অগ্নি নিরাপত্তার একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। এই যন্ত্রগুলো ধোঁয়া শনাক্ত করতে পারে এবং আগুন অনেক বড় হওয়ার আগেই আপনাকে সেটি সম্পর্কে সতর্ক করতে পারে। তাই প্রতিটি শোবার ঘরে, করিডোরে এবং বাড়ির প্রতিটি স্তরেই স্মোক ডিটেক্টর রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে স্মোক ডিটেক্টরগুলো ঠিকঠাক কাজ করছে কি না সেটিও নিয়মিত পরীক্ষা করে দেখা উচিত। এ ছাড়া বছরে অন্তত একবার এর ব্যাটারি প্রতিস্থাপন করতে হয়।

অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র

অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রগুলো ছোট আগুন নেভানোর জন্য অত্যন্ত সহায়ক। এতে করে আগুন খুব বড় হওয়ার আগেই আপনি সেটি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে পারবেন। তবে এ ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখা জরুরি; একেক ধরনের আগুনের জন্যে একেক ধরণের অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র রয়েছে। অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের প্রধানত ৪টি শ্রেণি রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে, ‘এ’, ‘বি’, ‘সি’, এবং ‘ডি’। ক্লাস ‘এ’ বা ‘এ’ শ্রেণির অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রগুলো কাগজ, কাঠ এবং কাপড়ের মতো সাধারণ দাহ্য পদার্থে সৃষ্ট আগুনের জন্য কার্যকর। ক্লাস ‘বি’ বা ‘বি’ শ্রেণির নির্বাপক যন্ত্রগুলো দাহ্য তরল পদার্থ যেমন, গ্যাসোলিন এবং তেল-এ সৃষ্ট আগুনের জন্য প্রযোজ্য। বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম সম্পর্কিত আগুনের জন্য ক্লাস সি নির্বাপক কার্যকরী। আর সবশেষে, ক্লাস ‘ডি’ বা ‘ডি’ শ্রেণির নির্বাপক যন্ত্রগুলো ম্যাগনেসিয়াম এবং টাইটানিয়ামের মতো দাহ্য ধাতু সম্পর্কিত আগুনের জন্য উপযোগী। রান্নাঘরে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র রাখা একটি ভালো অভ্যাস। কেন না এখন থেকেই বেশিরভাগ বাড়িতে আগুন লাগে।

অগ্নিকম্বল

অগ্নিকম্বল বা ফায়ার ব্ল্যাঙ্কেট ছোট আগুন নেভানোর জন্য অথবা কারও পোশাকে বা গায়ে আগুন লাগলে তাকে সেটি দিয়ে জড়িয়ে ধরার জন্য উপযোগী। এগুলা আগুন প্রতিরোধী উপকরণ দিয়ে তৈরি এবং সহজেই রান্নাঘরের ড্রয়ারে বা ক্যাবিনেটে সংরক্ষণ করা যায়। তবে জরুরি পরিস্থিতিতে কীভাবে এটি সঠিকভাবে ব্যবহার করবেন তা আগে থেকে জেনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ।

পালানোর জন্য মই

বাড়ি বা অফিসে আগুন লাগলে সেখান থেকে দ্রুত এবং নিরাপদে থেকে বের হওয়ার জন্য আগে থেকে একটি পরিকল্পনা থাকা জরুরি। আপনি যদি একটি বহুতল ভবনে থাকেন তাহলে পালানোর জন্য একটি মইয়ে বিনিয়োগ করার কথা বিবেচনা করা উচিত। যেগুলো বিছানার নিচে কিংবা যেকোনো একটি কক্ষে সংরক্ষণ করতে পারবেন। এই মইগুলো একটি জানালার সঙ্গে সংযুক্ত করে নিরাপদে মাটিতে নামার জন্য ব্যবহার করা যায়।

স্প্রিংকলার সিস্টেম

বাড়িতে কিংবা অফিসে একটি স্প্রিংকলার সিস্টেমের ব্যবহার আগুন ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধ করার একটি কার্যকর উপায় হতে পারে। এই সিস্টেমগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে আগুন শনাক্ত করে এবং পানি ব্যবহার করে সেগুলো নিভিয়ে দেয়। যা দমকলবাহিনী আসা পর্যন্ত, কিছুটা হলেও আগুন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। তবে স্প্রিংকলার সিস্টেমগুলো লাগানো বেশ ব্যয়বহুল হতে পারে। তবে অগ্নিকাণ্ডের সময় এগুলো জীবন এবং সম্পত্তি রক্ষার ক্ষেত্রে অপরিহার্য ভূমিকা রাখতে পারে।

কার্বন মনোক্সাইড ডিটেক্টর

কার্বন মনোক্সাইড একটি বর্ণহীন, গন্ধহীন গ্যাস যা উচ্চ ঘনত্বে মারাত্মক বিপজ্জনক হতে পারে। কার্বন মনোক্সাইড ডিটেক্টর এই গ্যাসের উপস্থিতি শনাক্ত করতে পারে এবং বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করতে পারে। বাড়ির প্রতিটি স্তরে, বিশেষ করে শোবার ঘরের কাছাকাছি অন্তত একটি কার্বন মনোক্সাইড ডিটেক্টর থাকা উচিত।

আগুন-প্রতিরোধি স্প্রে

আগুন-প্রতিরোধী স্প্রে কিংবা ফ্লেম রিটারডেন্ট স্প্রে, বিভিন্ন জিনিস বিশেষ করে কাপড়ে আগুন প্রতিরোধের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। এগুলো, পর্দা এবং আসবাবপত্রগুলোকে আরও আগুন-প্রতিরোধী করে তোলে। তবে বিষয়টি এমন না যে, এই স্প্রে ব্যবহার করলে এসব জিনিসে আর আগুন লাগবে না। কিন্তু এগুলো আগুনের বিস্তারকে অনেকাংশেই কমিয়ে ফেলতে সক্ষম। যার মাধ্যমে আপনি পালানোর জন্য আরও বেশি সময় পাবেন।

 

খুলনা গেজেট/লিপু/এইচ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!