টুইটারের দুনিয়ায় হামজা চৌধুরীর পক্ষে-বিপক্ষে মতের অভাব নেই। সোমবার রাতে বার্নলির বিপক্ষে শেফিল্ড ইউনাইটেডের ম্যাচের পর বাংলাদেশি মিডফিল্ডার স্বাগতিক দর্শকদের সঙ্গেই বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে পুলিশ এসে তাকে সরিয়ে নিয়ে যায়। তবে হামজার সঙ্গে আসলেই কি ঘটেছে তা নিয়ে এখন পর্যন্ত কথা বলেননি কোনো পক্ষই।
হামজা কিংবা তার দল শেফিল্ড ইউনাইটেডের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত গতকালের ম্যাচের পর ঘটে যাওয়া বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। তবে সাংবাদিক কিংবা প্রত্যক্ষদর্শীরা সহজেই যেন হাল ছাড়তে নারাজ। দ্য আইরিশ সান, ডেইলি মিরর কিংবা দ্য মিররের মতো প্রভাবশালী ব্রিটিশ দৈনিকের খবর হয়েছেন হামজা চৌধুরী।
সঙ্গে একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী টুইটারে জানিয়েছেন নিজেদের মতামত। তাতে স্পষ্ট বোঝা গিয়েছিল, বার্নলির উগ্র দর্শকদের কারণেই মেজাজ হারাতে হয়েছিল হামজা চৌধুরীকে। শেফিল্ডের বিপক্ষে ২-১ গোলের জয় তাদের নিয়ে গিয়েছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে। যে কারণে দর্শকদের উৎসব ছিল বাঁধভাঙ্গা। আর সেই দর্শকদের মাঝেই পড়তে হয়েছিল বাংলাদেশের হয়ে সদ্য অভিষেক হওয়া হামজাকে।
এক সমর্থকের সঙ্গে প্রায় সংঘর্ষ হওয়ার উপক্রম ছিল হামজার। সেসময়েই তাকে সরিয়ে নেন মাঠে নেমে আসা নিরাপত্তাকর্মীরা। এরপরেই আরেক সমর্থককে দেখা যায় মোবাইল হাতে হামজাকে ব্যাঙ্গাত্মক মুখভঙ্গি করতে। এরপরেই হামজা নিজেও জড়িয়ে পড়েন সেই ভিড়ের মাঝে। তাকে অবশ্য নিরাপদে সরিয়ে নেন নিরাপত্তাকর্মীরা।
গুঞ্জন রয়েছে, ফিলিস্তিনের পক্ষ অবলম্বন করায় হামজার ওপর চড়াও হন বার্নলির সমর্থকরা। তবে এরও কোনো প্রমাণ নেই। ব্রিটিশ একাধিক গণমাধ্যম এবং শেফিল্ড সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকদের ভাষ্য অনুযায়ী, কিছু কটু কথা শুনতে হয়েছে প্রতিপক্ষের সমর্থকদের। এছাড়া হামজাকে নিয়ে ব্যাঙ্গাত্মক মুখভঙ্গি করেছেন খোদ বার্নলির খেলোয়াড়রাই।
এরইমাঝে অভিযোগ এসেছে বর্ণবাদী মন্তব্য সইতে হয়েছে হামজা চৌধুরীকে। যদিও এখন পর্যন্ত সেটার পক্ষে কোনো প্রমাণ আসেনি। ইউরোপিয়ান ফুটবলে বর্ণবাদের অভিযোগকে বেশ করেই দেখা হয়। এমন ক্ষেত্রে সাধারণত ক্লাবের পক্ষ থেকেই প্রতিবাদ জানানো হয়। হামজার ক্ষেত্রে তেমনটা এখনও দেখা যায়নি। যদিও এই অভিযোগ একেবারেই উড়িয়ে দিচ্ছেন না কেউই।
যদি বর্ণবাদের ঘটনা নিয়ে অভিযোগ করা হয় শেফিল্ড বা হামজার পক্ষ থেকে, তাহলে অভিযোগ প্রমাণের সাপেক্ষে বড় শাস্তিই হতে পারে বার্নলি ক্লাবের।
যা বলছেন শেফিল্ড কোচ
ম্যাচ শেষে শেফিল্ড কোচ ক্রিস ওয়াইল্ডার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ম্যাচের আগে রেফারির কাছ থেকে আশ্বাস পেয়েছিলাম যে খেলোয়াড়দের ঘিরে নিরাপত্তা থাকবে। কিন্তু শেষ বাঁশি বাজার পর তাদের কোনো খোঁজই পাওয়া যায়নি। সেটা বেশ ভয়ানক একটা মুহূর্ত ছিল আমাদের জন্য।’
বিশৃঙ্খলার দায় নিতেও নারাজ শেফিল্ড কোচ ওয়াইল্ডার, ‘৪০-৫০ জন উত্তেজিত দর্শক যখন আপনার দিকে দৌঁড়ায় এবং বাজে ভাষায় কিছু বলে কিংবা কিছু করে, তখন মাঠ ছাড়াটা খুব কঠিন হয়ে পড়ে। এর দায় আমাদের ঘাড়ে চাপানো উচিত হবে না।’
এদিকে এই জয়ের পর লিডস ইউনাইটেডের সঙ্গে আগামী মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগ নিশ্চিত করে ফেলেছে বার্নলি। আর প্লে-অফের চক্রে আপাতত আটকে থাকতে হচ্ছে হামজার দল শেফিল্ড ইউনাইটেডকে। যদিও দুই নকআউট ম্যাচের এই প্লে-অফে তাদের প্রতিপক্ষ কে হবে তা এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। ইএফএল চ্যাম্পিয়নশিপের মৌসুম শেষে ৩ থেকে ৬ নম্বরে থাকা দলগুলোকে নিয়ে হয় এই প্লে-অফ।
খুলনা গেজেট/এএজে