খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

বাবার লাশ দাফনে পাঁচ মেয়ের বাঁধা, ওসির হস্তক্ষেপে দাফন

পাইকগাছা প্রতিনিধি

খুলনার পাইকগাছায় পাঁচ মেয়েসহ নিজ স্ত্রীকে সম্পতি থেকে বঞ্চিত করে ছেলের নামে সব লিখে দেওয়ায় মৃত্যুর পর পিতার লাশ দাফন আটকে দেয় মেয়েরা । ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার গদাইপুর ইউনিয়নের ঘোষাল গ্রামে।

এদিকে পিতার মৃত্যুর পর সম্পতি লিখে দেওয়ার ঘটনা জানাজানি হলে লাশ দাফনের ব্যবস্থা না করেই বাড়ির উঠানে ফেলে রেখে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে পালিয়ে যায় পাষন্ড ছেলে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার পাইকগাছা থানা ওসির হস্তক্ষেপে লাশটি দাফন করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার গদাইপুরের ঘোষাল এলাকার মৃত কওসার গাজীর ছেলে সওকাত গাজী কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে গত মঙ্গলবার ভোর রাতে খুলনার একটি হাসপাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়। পরে ওইদিন সকাল ৮টায় তার লাশটি বাড়িতে নেওয়া হয়।মৃত্যুর আগে তিনি শরিক হিসেবে ৫মেয়ে, ১ছেলেসহ স্ত্রীকে রেখে যান।

তবে তিনি অসুস্থ হলে তার ছেলে মানুন চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে সকলের হক বঞ্চিত করে সমুদয় সম্পত্তি পিতার থেকে কৌশলে লিখিয়ে নেয়। তবে এ ঘটনা স্বজনদের অজানা ছিল।

এরপর ঐ দিন সকালে তার লাশ বাড়িতে পৌছালে দাফনের জন্য গোসল করাতে নিলে সাকাত গাজীর হাতের বুড়ো আঙ্গুলে কালির ছাপ দেখা যায়।

তারপর সম্পত্তি লিখে নেওয়ার ঘটনা আঁচ করতে পেরে মৃতের ৫মেয়ে মিলে পিতার লাশ দাফনে বাঁধা দেয়। আর শরীক ফাঁকি দেওয়ায় স্থানীয়রাও তার জানাযাসহ লাশ দাফন করবেনা বলে সিদ্ধান্ত নেয়। ফলে মঙ্গলবার থেকে দু’দিন লাশটি বাড়ির উঠানেই পড়েছিল।

এদিকে ঘটনার জানাজানি হলে বাড়িতে পুলিশ উপস্থিত হলে বুধবার সন্ধ্যায় মামুন পিতার লাশ ফেলে রেখেই বাড়ি থেকে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে পালিয়ে যা্য়। তবে সর্বশেষ বৃহস্পতিবার দুপুরে থানার ওসির হস্তক্ষেপে লাশ দাফন করা হয়।

এব্যাপারে মৃত সওকত গাজীর মেয়ে লাবনী আক্তারসহ ভুক্তভোগী সকলেই বলেন, পিতার অসুস্থতার সুযোগে চিকিৎসার নামে তাদের ভাই মামুন কাউকেই কিছু না জানিয়ে সম্পত্তি নিজের নামে লিখিয়ে নিয়েছে। যার ফলে পিতার লাশ দাফনে তারা বাঁধা দিয়েছিল।

স্থানীয় ঘোষাল জামে মসজিদের ইমাম বেলাল হোসেন বলেন, সওকাত গাজীর মৃত্যুর সংবাদ শুনে মঙ্গলবার বাদ জোহর জানাজার ঘোষণা দেয়া হয়। তবে মৃতের ৫ মেয়ে এসে তাদের জমির হক বঞ্চিত করায় জনাজা এবং লাশ দাফনে বাঁধা দেয়। ফলে মুসল্লীসহ গ্রামবাসী জানাযা নামাজ না পাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন।

পাইকগাছা থানার ওসি মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, মেয়েদের সম্পত্তির হক বঞ্চিত করায় তারা পিতার লাশ দাফনে বাধা দেয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছে হক বঞ্চিত মেয়েদেরসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং গ্রামবাসীদেরর সাথে কথা বলে মেয়েরা চাইলে তাদেরকে সার্বিক আইনি সহযোগিতাও করা হবে বলে জানানো হয়।

সর্বশেষ থানা পুলিশ, ইমাম বেলাল হোসেন, মাওলানা আহমদ আলীসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও শত মানুষের উপস্থিতে বৃহস্পতিবার মৃতের জানাযা ও দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

খুলনা গেজেট/ এএজে

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!